কোন দিকে নামাজ পড়তে হয় - পশ্চিম দিকে নামাজ পড়া হয় কেন? বিস্তারিত জেনে নিন?

আজকে আমরা জানবো যে নিজের ইমান ঠিক রাখার জন্য আল্লা্‌হর কাছে কোন দিকে নামাজ পড়তে হয় ইবাদত করার জন্য। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে এই পশ্চিম দিকে নামাজ পড়া হয় কেন? আসুন জানি?  

ভূমিকাঃ

কোন দিকে নামাজ পড়তে হয় সেটি পৃথিবীর প্রত্যেক মুসলিম মানুষেরা প্রতিদিন নামাজ পড়ে। তাদের জন্য আগে নামাজ তার পরে সব কিছু। নামাজ পড়লে আল্লা্‌হ খুশি হন। আর আল্লা্‌হ খুশি হলে পুরো পৃথিবীর মানুষ খুশি। কারণ, তার অনুমতি ছাড়া তো, গাছের ও পাতা নড়ে না। তাই প্রত্যেক মানুষকে চেষ্টা করতে হবে যে আমার কাজ দ্বারা আমার আল্লা্‌হ যেন খুশি হয়।

কোন-দিকে-নামাজ-পড়তে-হয়
কোন-দিকে-নামাজ-পড়তে-হয়    

তাই আসুন জেনে রাখি যে, এই আল্লা্‌হ খুশি করার জন্য কোন দিকে নামাজ পড়তে হয় যাতে করে আল্লা্‌হ খুশি হয়। ও আমাদের উপরে ইবাদত করবে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে এই পশ্চিম দিকে নামাজ পড়া হয় কেন। নিম্নে বিস্তারিত.........। 

কোন দিকে নামাজ পড়তে হয়ঃ

কুরআন শরীফে বলে হয়েছে যে মুসলমানদের নামাজ পড়ার জন্য কাবা শরীফের দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হয়, যা মক্কায় অবস্থিত। কাবা শরীফকে ইসলাম ধর্মে কেবলাবলা হয় এবং এটি মুসলমানদের পবিত্রতম স্থান। প্রতিটি নামাজ আদায়ের সময় মুসলমানরা কেবলার দিকে মুখ করে নামাজ পড়েন। যা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। 

আরো পড়ুনঃ গর্ভবস্থায় কোন দিকে ঘুরে ঘুমানো উচিত মা ও ছেলের জন্য জেনে রাখুন?

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, কেবলার দিক হলো পশ্চিম দিকে কিছুটা দক্ষিণমুখী। সঠিক দিক নির্ধারণের জন্য আপনি কম্পাস, মোবাইল অ্যাপ, বা মসজিদে স্থাপিত দিকনির্দেশক চিহ্ন করতে পারেন। কেবলার দিকে মুখ করে নামাজ পড়া আল্লাহর প্রতি একাগ্রতা ও আনুগত্যের মুসলমানদের প্রতীক।

পশ্চিম দিকে নামাজ পড়া হয় কেনঃ

পশ্চিম দিকে নামাজ পড়া হয় কারণ হলো মুসলমানদের নামাজের সময় কেবলার দিকে অথ্যাৎ মক্কার দিকে মুখ করে নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক হিসাবে গননা করেছেন কুরআনান।কেননা কেবলা হচ্ছে মক্কার কাবা শরীফ যেটি পশ্চিম দিকে অবস্থিত। কাবা শরীফ ইসলাম ধর্মের পবিত্রতম একটি স্থান, যা পৃথিবীর সমস্ত মুসলমানদের জন্য নামাজের সময় পশ্চিম দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হয়।

আরো পড়ুনঃ সাধারণ মানুষের জন্য কোন দিকে ঘুমানো উচিত তা জেনে রাখুন?

কেবলা নির্ধারণের এই বিধান ইসলামের ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। আপনি পৃথিবীর যেকোনো স্থানে যেয়ে থাকেন না কেন মুসলমানরা কাবার দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করবেই। যা আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও সহনশীলতা প্রকাশের একটি মাধ্যম। আপনার বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী, কাবা শরীফ পশ্চিম দিকে অভিমুখে হয়ে নামাজ পড়তে হবে।

এই নিয়ম অনুসরণের মাধ্যমে মুসলমানরা এক পশ্চিম দিকে দাঁড়িয়ে আল্লাহর প্রতি তাদের ইবাদত ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, যা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ।

নামাজ কোন ভাষার শব্দঃ

"নামাজ" শব্দটি "ফারসি" ভাষার শব্দ। এটি ইসলামী উপাসনা বা প্রার্থনার জন্য ব্যবহৃত একটি শব্দ। যদিও মূলত নামাজ বলতে ইসলামের নির্ধারিত ইবাদতকেই বোঝানো হয়, আরবি ভাষায় এর প্রকৃত শব্দটি হলো "সালাত" (صلاة)।

"নামাজ" শব্দটি প্রায় হাজার হাজার বছর ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে সারা বিশ্বে। এই শব্দটি তুর্কি ও ইরানি ভাষা যোগ হয়ে এই শাসনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। উর্দু এবং হিন্দি ভাষাভাষী মুসলমানরা "সালাত" এর পরিবর্তে "নামাজ" শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। যা আল্লাহর প্রতি নির্ধারিত ইবাদত বা প্রার্থনা এবং কোন দিকে নামাজ পড়তে হয় সেটি বোঝায়। 

সুতরাং, "নামাজ" শব্দটি ফারসি হলেও, এর অর্থ ও উদ্দেশ্য একই, যা ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ সালাতকে নির্দেশ করে।

বাংলাদেশে মুসলমানরা কোন দিকে নামাজ পড়েঃ

কোন দিকে নামাজ পড়তে হয় সেটি বাংলাদেশে মুসলমানরা জানে। তারা পশ্চিম দিকে কিছুটা দক্ষিণমুখী হয়ে নামাজ পড়েন। কারণ ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী নামাজ পড়ার সময় কাবা শরীফের দিকে মুখ করে নামাজ পড়তে হয় যা মক্কায় অবস্থিত। আপনি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে জান না কেন আপনাকে পশ্চিম দিক হয়ে নামাজ পড়তে হবে এটি কুরআনের নির্দেশ।

কাবা শরীফকে ইসলাম ধর্মে কেবলা বলা হয়, যা বিশ্বের সমস্ত মুসলমান ভাইরা নামাজের সময় পশ্চিম দিককে নির্দেশ করে। কেবলার দিকে মুখ করে নামাজ পড়া আল্লাহর প্রতি সেজদা রাখা ও ভালবাসার প্রতীক এবং এটি মুসলমানদের আল্লাহ্‌র বান্দা হিসাবে বিবেচিত করা হয়। 

বাংলাদেশ থেকে কেবলা কোন দিকেঃ

বাংলাদেশ থেকে কেবলা হলো পশ্চিম দিকে কিছুটা দক্ষিণমুখী। ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী নামাজের সময় কাবা শরীফের দিকে মুখ রাখা বাধ্যতামূলক, যা মক্কায় অবস্থিত। তাই সমস্ত মুসলিম ভাইরা কাবা শরীফ যেটি পশ্চিমে অবস্থিত সেদিক হয়ে তারা নামাজ পড়েন। নামাজের সময় পশ্চিম থেকে সামান্য কিছুটা দক্ষিণমুখী হয়ে দাঁড়াতে হয়।

কেবলার সঠিক দিক নির্ধারণের জন্য আপনি কম্পাস, স্মার্টফোনের অ্যাপ, বা মসজিদের কেবলা চিহ্ন দেখে বুঝতে পারবেন। পশ্চিম দিক হয়ে নামাজ পড়লে আল্লাহর প্রতি নামাজ আদাত ও ভালবাসা প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ফুটে ওঠে। তাই পশ্চিম দিক হয়ে নামাজ পড়া গুরুত্বপূর্ণ।

পশ্চিম দিক নির্ণয়ঃ

আজকের ডিজিটাল যুগে পশ্চিম দিক নির্ণয় করার জন্য আপনি চাইলে প্রযুক্তিগত বিভিন্ন উপায় ব্যভার করতে পারেন। নিচে পশ্চিম দিক নির্ণয়ের কয়েকটি পদ্ধতি উল্লেখ করা হলোঃ

১। সূর্যের সাহায্যেঃ

  1. সূর্য প্রতিদিন পূর্ব দিকে উদয় হয় এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। সেটি দেখে আপনি পশ্চিম দিক নির্ধারণ করতে পারবেন।
  2. সকালে দাঁড়িয়ে সূর্যের দিকে মুখ করলে আপনার ডান দিক হবে দক্ষিণ, বাম দিক উত্তর, আর পিছনের দিক পশ্চিম। সেটি দেখে আপনি পশ্চিম দিক নির্ধারণ করতে পারবেন

২। কম্পাস ব্যবহার করেঃ

  1. একটি কম্পাস ব্যবহার করুন, যা চারটি দিক (উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম) নির্দেশ করে। সেটি দেখে আপনি পশ্চিম দিক নির্ধারণ করতে পারবেন অথবা,
  2. কম্পাসের সুই উত্তর দিক দেখাবে, তখন উত্তর থেকে ডান দিকেই পশ্চিম দিক অবস্থিত। সেটি দেখে আপনি পশ্চিম দিক নির্ধারণ করতে পারবেন

৩। ছায়ার সাহায্যঃ

  1. দুপুরের সময় সূর্যের আলোতে কোনো একটি খুঁটির ছায়া দেখুন কোন দিকে নিদের্শ করছে। সেটি দেখে আপনি পশ্চিম দিক নির্ধারণ করতে পারবেন।
  2. যদি ছায়াটি পূর্ব দিকে নির্দেশ করে তাহলে বুঝবেন এই ছায়ার বিপরীত দিকটি হলো পশ্চিম।

৪। রাতের আকাশে নক্ষত্রের সাহায্যেঃ

  1. সবার আগে আপনি রাতের আকাশে ধ্রুবতারা (Polaris) দেখে উত্তর নির্ধারণ করুন তারপরে
  2. উত্তর দিক নির্ধারণ করার পর তার বিপরীত দিক হবে দক্ষিণ, আর তার ডান দিক হবে পশ্চিম।

৫। স্মার্টফোন অ্যাপ ব্যবহার করেঃ

  1. স্মার্টফোনে দিক নির্দেশক অ্যাপ (Compass App) ডাউনলোড করে সহজেই পশ্চিম দিক নির্ধারণ করা যায় খুব সহজে।
  2. এটি নির্ভুলভাবে আপনার বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী দিক নির্দেশ করে। তাই অ্যাপ দ্বারা দিক নির্দেশ করা ভাল।

সর্বশেষ, পশ্চিম দিক নির্ণয়ের জন্য প্রাকৃতিক পদ্ধতি যেমন সূর্যের সাহায্য বা ছায়া পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করা যেতে পারে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাইলে কম্পাস বা স্মার্টফোন অ্যাপ ব্যবহার করেও সহজেই দিক নির্ধারণ করা সম্ভব।

নামাজ পড়লে কি হয়ঃ

নামাজ পড়লে মানুষ আত্মিক শান্তি এবং আল্লাহর প্রতি সেজদা লাভ করা হয়। এটি মুসলমানদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক ইবাদত, যা আল্লাহর প্রতি ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানানোর একটি মাধ্যম। নামাজ মনকে শুদ্ধ করে, নৈতিক উন্নতি ঘটায় এবং জীবনে শৃঙ্খলা আনে। নিয়মিত নামাজ পড়লে মানুষ পাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে শুরু করে।

নামাজ-পড়লে-কি-হয়
নামাজ-পড়লে-কি-হয়

এছাড়া, নামাজ মানসিক চাপ কমায়, আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং শারীরিকভাবে সুস্থ রাখে। মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার ও সুখ শান্তি জীবনে বয়ে আনে। তাই নামাজ শুধু ইবাদত নয়, এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার একটি সেরা দিক ও মাধ্যম।

লেখকের মক্তব্যঃ

আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন মুসলিমদের জন্য ও তাদের ইবাদতের জন্য কোন দিকে নামাজ পড়তে হয়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে এই পশ্চিম দিকে নামাজ পড়া হয় কেন।

প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.................. www.stylishsm.com



আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )



























এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url