মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম - ফিটকিরি কীভাবে মুখে লাগাতে হয়? বিস্তারিত জেনে নিন?
আজকে আমরা জানবো যে আমাদের ত্বকের জন্য মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম গুলো কি কি হয়ে থাকে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে ত্বক সুস্থ্য রাখার জন্য ফিটকিরি কীভাবে মুখে লাগাতে হয়। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
ছেলে হোক কিংবা মেয়ে মুখ সুন্দর ও উজ্জ্বল সবাই রাখতে চাই। অনেক সময় দেখা যায় যে কিছু কিছু কারণের জন্য আমাদের মুখে ব্রণ চলে আসে ও কালো কালো দাগ পড়ে যায় মুখে। যাতে করে আমাদের মুখ দেখতে কিছুটা খারাপ লাগে। যাতে আমরা সবার সামনে দাড়াঁতে লজ্জাবোধ করি। আর এই দাগ তোলার জন্য সহজ উপায় ফিটকিরি।
![]() |
মুখের-ত্বকে-ফিটকিরি-ব্যবহারের-নিয়ম |
তাই আসুন জেনে রাখি, আমাদের ব্রণ ও কালো দাগ তোলার জন্য মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম গুলো কি কি হয়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে এই ফিটকিরি কীভাবে মুখে লাগাতে হয় ব্রণ ও কালো দাগ তোলার জন্য। নিম্নে বিস্তারিত......।
মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়মঃ
মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের দাগ-লালচে কালো দাগ, ব্রণের সমস্যা, এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল মেটানো সম্ভব। ফিটকিরি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে আমাদের মুখে এবং এটি ত্বক টানটান করতে সাহায্য করে। ফিটকিরি ব্যবহারে করলে প্রথমে এক টুকরো ফিটকিরি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর এটি মুখের ত্বকে আলতোভাবে ঘষুন। এটি ত্বকের মরা কালো দাগ দূর করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।
আরো পড়ুনঃ মুখের চামড়া খসখসে করলে আপনার কি কি করণীয় কাজ থাকবে জেনে নিন?
আপনার যদি ব্রণের সমস্যা থাকে তাহলে ফিটকিরি গুঁড়া করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ৫-১০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ত্বক মসৃণ এবং টানটান রাখতে ফিটকিরি ও গোলাপজলের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ফিটকিরি ব্যবহারের আগে নিশ্চিত হোন যে আপনার ত্বকে কোনো অ্যালার্জি বা জ্বালাপোড়া অনুভাব আছে কি"না।
সপ্তাহে ২-৩ বার এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে মুখের ত্বক পরিষ্কার, কালো দাগ দূর এবং ত্বক উজ্জ্বল হয়। আর ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
ফিটকিরি কীভাবে মুখে লাগাতে হয়ঃ
মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম ও মুখে ফিটকিরি লাগানোর সঠিক পদ্ধতি হলো। প্রথমে একটি ফিটকিরির টুকরা গুড়া করে পানিতে ভিজিয়ে নিন, তারপর এটি সরাসরি মুখের ত্বকে আলতো করে ঘষতে থাকুন। এটি ত্বকের ময়লা, মৃত কোষ এবং অতিরিক্ত তেল দূর করতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য ব্যবহার করা।
আরো পড়ুনঃ মুখে ঘা হলে কি কি ঘরোয়া উপায়ে ঘা ভাল করা যায় তা জেনে নিন?
ব্রণ বা কালো দাগের জন্য ফিটকিরি গুঁড়ো এবং গোলাপ পানির মিশ্রণ তৈরি করবেন। তারপর একটি তুলার সাহায্যে এই মিশ্রণটি মুখের আক্রান্ত স্থানে লাগান। ১০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের ব্রণ শুকাতে এবং কালো দাগ দূর করতে কার্যকর।
ফিটকিরির উপকারিতাঃ
ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যার রয়েছে নানাবিধ উপকারিতা। এটি ত্বক, চুল, এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষভাবে কার্যকর। নিচে ফিটকিরির প্রধান উপকারিতাগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম উপকারিতা হলো ফিটকিরিতে অ্যান্টিসেপটিক গুণ রয়েছে যা ব্রণ শুকাতে, কালো দাগ দূর, এবং ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে কার্যকর।
- ত্বকের দাগ এবং কালো ছোপ হালকা করতে ফিটকিরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- ফিটকিরি ত্বকের স্থানে চামড়া টানটান করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বার্ধক্য রোধ করে। "আবন" ফিটকিরি মুখের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে করে এবং মুখে উজ্জ্বলতা ভাব আনে।
- ফিটকিরি মাথা ব্যবহার করলে খুশকি দূর করতে সাহায্য করে এবং মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখে।
- ফিটকিরি নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং মাথার চুল পড়া কমায়।
- ফিটকিরি পানি পরিষ্কার করতে কার্যকর। এটি পানিতে থাকা ময়লা ও ক্ষতিকর জীবাণু দূর করে। যে পানি আপনি মুখে ব্যবহার করতে পারবেন।
- ফিটকিরি ক্ষত বা কাটা স্থানে লাগালে দ্রুত শুকাতে এবং জীবাণু সংক্রমণ রোধ করতে সক্ষম।
- গরম পানিতে ফিটকিরি মিশিয়ে মুখে গার্গল করলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং দাঁতের মাড়ি শক্তিশালী হয়।
- সতর্কতাঃ
- অতিরিক্ত ফিটকিরি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি ত্বক শুষ্ক ত্বককে নষ্ট করতে পারে। তাই যতটুকু দরকার ততটুকু ব্যবহার করবেন।
- ব্যবহারের আগে ত্বকের একটি ছোট অংশে পরীক্ষা করবেন। যে আপনার মুখে ফিটকিরি সুট করছে কি"না।
ফিটকিরি ত্বক, চুল এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান। এটি নিয়মিত ও সঠিকভাবে ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল, কালো দাগ দূর, চুল স্বাস্থ্যকর, এবং শরীর পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব।
ফিটকিরির ক্ষতিকারক দিকঃ
মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম যেমন আছে তেমনি ফিটকিরি ব্যবহারের কিছু ক্ষতিকারক দিক ও রয়েছে, বিশেষ করে অতিরিক্ত বা অনিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বক এবং শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। নিচে ফিটকিরির কয়েকটি ক্ষতিকারক দিক উল্লেখ করা হলো পড়ে নিন?
১। ত্বকের শুষ্কতাঃ
- ফিটকিরি বেশি ব্যবহার করলে ত্বক থেকে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা কেড়ে নেয়। যার ফলে ত্বক শুষ্ক এবং খসখসে হয়ে যায়। বেশি ব্যবহার করলে ত্বকের জন্য এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে।
২। অ্যালার্জি বা জ্বালাপোড়াঃ
- কিছু মানুষের ত্বকে ফিটকিরির সংস্পর্শে আসলে লালচে হয়ে যায়, চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হতে পারে মুখে। তাই ব্যবহার করার আগে ফিটকিরি সুট করছে কি"না দেখে নিবেন।
৩। ত্বকের অতিরিক্ত টানটান ভাবঃ
- ফিটকিরি ব্যবহারের ফলে ত্বকে টানটান ভাব করতে সাহায্য করলেও অতিরিক্ত ব্যবহারে ত্বক কঠিন ও অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করবেন।
৪। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাঃ
- ফিটকিরি গুঁড়া নিঃশ্বের সঙ্গে ভিতরে গেলে শ্বাসযন্ত্রে জ্বালাপোড়া বা কাশি হতে পারে। যা দীর্ঘ সময়ের জন্য শ্বাসযন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৫। পানি শোধনে অতিরিক্ত ব্যবহারঃ
- ফিটকিরি পানি মুখ পরিষ্কার করতে কার্যকর, তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করলে মুখে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সাবধান?
৬। সংক্রমণ বা ক্ষতের ক্ষতিঃ
- মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম হলো ক্ষতস্থানে ফিটকিরি ব্যবহার করলে এটি জীবাণু ধ্বংস করলেও অতিরিক্ত জ্বালাপোড়া এবং ক্ষত শুকানোর প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
ফিটকিরি একটি কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান হলেও এর ব্যবহারে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সঠিকভাবে এবং পরিমিত ব্যবহার করলে এটি উপকারী, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ফিটকিরি দিয়ে ব্রণ দূর করার নিয়মঃ
ফিটকিরি দিয়ে ব্রণ দূর করার জন্য এটি সঠিকভাবে এবং নিয়মিত ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক, যা ত্বকের জীবাণু ধ্বংস করে এবং ব্রণ শুকাতে সাহায্য করে। প্রথমে এক টুকরো ফিটকিরি গুড়া পানিতে গলিয়ে একটি তরল মিশ্রণ তৈরি করবেন। এরপর একটি তুলার সাহায্যে মিশ্রণটি ব্রণের উপর আলতোভাবে লাগাবেন। ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। তারপর দেখেবন এটি ত্বকের দাগ কমিয়ে আনবে এবং ব্রণের জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি দিবে।
আরো পড়ুনঃ নিমপাতা আর কাঁচা হলুদ মুখে মাখলে কি কি উপকার পায় আমাদের ত্বক জানুন?
তবে, ব্রণের জন্য ফিটকিরি সরাসরি পুরো মুখে না লাগিয়ে শুধুমাত্র আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করুন। যাতে করে ফিটকিরি ভালভাবে কার্যকর হতে পারে। ফিটকিরি ব্যবহারের পর ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে একটি হালকা ময়েশ্চারাইজার ক্রিম লাগাবেন। নিয়মিত এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ব্রণের সমস্যা ধীরে ধীরে কমে যাবে।
ফিটকিরি কি ত্বকের জন্য ভালোঃ
ফিটকিরি ত্বকের জন্য নিশ্চিত ভালো, তবে সঠিকভাবে এবং পরিমিত ভাবে ব্যবহার করতে হবে। ফিটকিরির অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যাস্ট্রিনজেন্ট গুণ ত্বকের ব্রণ,ব্যাক্টেরিয়া, কালো দাগ-ছোপ এবং অতিরিক্ত তেল দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বক টানটান করতে কার্যকর। ত্বকের মরা কোষ দূর করতে ফিটকিরি একটি প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কাজ করে।
আরো পড়ুনঃ কীভাবে আপনি আপনার মুখ ফর্সা করে তুলবেন তার ব্যাসিক টিপসস জেনে নিন?
লেখকের মক্তব্যঃ
আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন আমাদের ত্বকের জন্য মুখের ত্বকে ফিটকিরি ব্যবহারের নিয়ম গুলো কি কি। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে ফিটকিরি কীভাবে মুখে লাগাতে হয় তার কৌশল।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন..................... www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url