প্রবাসীদের জন্য কোন দেশ ভালো - সবচেয়ে বেশি কাজের দেশ কোনটি? জেনে রাখুন?
আজকে আমরা জানবো যে বাইরের দেশে যাওয়ার জন্য এই প্রবাসীদের জন্য কোন দেশ ভালো হয়ে থাকে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে এই সবচেয়ে বেশি কাজের দেশ কোনটি ও কোনগুলো। যেখানে টাকা ইনকাম করা সহজ হয়। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
মানুষ বাইরের দেশে যায় টাকা ইনকাম করার জন্য ও পরিবারের সুখ শান্তির জন্য। যাদেরকে আমরা সাধারণ প্রবাসি বলে থাকি। তারা অনেক কষ্ট করে তাদের পরিবারের মুখে হাঁসি ফুটায়। প্রবাসি হাওয়াটা অতোটা সহজ না যতটা আমরা ভাবি।
প্রবাসীদের-জন্য-কোন-দেশ-ভালো |
তাই আসুন জেনে রাখি যে, যারা টাকা ইনকাম করার জন্য বাইরের দেশে যেতে ইচ্ছুক সেই প্রবাসীদের জন্য কোন দেশ ভালো হয়ে থাকে টাকা ইনকাম করার ক্ষেত্রে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে এই সবচেয়ে বেশি কাজের দেশ কোনটি ও কোণগুলো হয়ে থাকে। নিম্নে বিস্তারিত.........।
প্রবাসীদের জন্য কোন দেশ ভালোঃ
প্রবাসীদের জন্য কোন দেশ ভালো হবে তা মূলত তাদের কাজের ধরণ, অভিজ্ঞতা, শিক্ষা, আর্থিক অবস্থা এবং ব্যক্তিগত পছন্দের ওপর নির্ভর করে। তবে প্রবাসীদের মধ্যে কাজের সুযোগ, উচ্চ বেতন, উন্নত জীবনমান এবং স্থায়ী বসবাসের সুবিধার জন্য কিছু দেশ বিশেষভাবে জনপ্রিয়। উদাহরণস্বরূপ, কানাডা প্রবাসীদের জন্য একটি আদর্শ দেশ। কারণ, এখানে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া কানাডার অভিবাসন প্রক্রিয়াও তুলনামূলক সহজ।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই, আবুধাবি) মধ্যপ্রাচ্যের একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। যেখানে বিশেষত দক্ষ শ্রমিক এবং পেশাদারদের জন্য উচ্চ বেতনের সুযোগ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড উন্নত জীবনমান, সুন্দর পরিবেশ এবং উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রবাসীদের কাছে আকর্ষণীয়। অন্যদিকে, সিঙ্গাপুর এবং জার্মানি প্রযুক্তি ও ব্যবসার ক্ষেত্রে বিশাল সুযোগ প্রদান করে।
যারা করমুক্ত আয় পছন্দ করেন, তাদের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ভালো, আর যারা দীর্ঘমেয়াদী বসবাস এবং নাগরিকত্ব চান, তাদের জন্য কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, বা ইউরোপীয় দেশগুলো ভালো। কাজের প্রকার এবং ব্যক্তিগত লক্ষ্য অনুযায়ী দেশের নির্বাচন করা উচিত।
সবচেয়ে বেশি কাজের দেশ কোনটিঃ
বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি কাজের সুযোগ থাকা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র (USA) শীর্ষে রয়েছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ায় প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, ইঞ্জিনিয়ারিং, শিক্ষা, ব্যবসা এবং কৃষি খাতে প্রচুর কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে। বিশেষত দক্ষ পেশাজীবীদের জন্য উচ্চ বেতনের চাকরির পাশাপাশি ক্যারিয়ার উন্নতির সুযোগ এখানে বেশি। কানাডা কাজের জন্য আরেকটি জনপ্রিয় দেশ, যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি, নির্মাণ, স্বাস্থ্যসেবা এবং কৃষিক্ষেত্রে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এখানে স্থায়ী বসবাসের সুযোগও সহজলভ্য।
জার্মানি ইউরোপের একটি প্রধান শিল্পোন্নত দেশ, যেখানে প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ এবং স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদের জন্য প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, যেমনঃ সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই) এবং সৌদি আরব, দক্ষ শ্রমিক ও পেশাদারদের জন্য অনেক চাকরির সুযোগ প্রদান করে। বিশেষত নির্মাণ, তেল ও গ্যাস, এবং পর্যটন শিল্পে।
অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুরও উন্নত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। যেখানে প্রবাসীদের জন্য কাজের সুযোগ এবং উচ্চ বেতন রয়েছে। তাই, কাজের সুযোগ ও জীবনযাত্রার মান বিবেচনায়, এসব দেশগুলো প্রবাসীদের জন্য অন্যতম সেরা।
কম টাকায় কোন দেশ যাওয়া যায়ঃ
কম টাকায় ভ্রমণ বা কাজের জন্য যাওয়ার জন্য কিছু দেশ বেশ উপযুক্ত। সাধারণত, যেসব দেশে ভিসা প্রসেসিং খরচ কম এবং জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী, সেসব দেশেই কম খরচে যাওয়া সম্ভব।
- ভারতঃ বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় ভ্রমণ খরচ অনেক কম। চিকিৎসা, পর্যটন এবং শিক্ষা জন্য ভারত অন্যতম জনপ্রিয়।
- মালয়েশিয়াঃ মালয়েশিয়া আরেকটি সাশ্রয়ী দেশ, যেখানে কাজের ভিসা পাওয়া সহজ এবং বিমান টিকিটও তুলনামূলকভাবে কম খরচে পাওয়া যায়।
- সিঙ্গাপুরঃ সিঙ্গাপুর ছোট হলেও অনেক সুযোগ-সুবিধার জন্য জনপ্রিয়, এবং এখানে ভ্রমণ বা কাজের জন্য খুব বেশি খরচ হয় না।
- মধ্য প্রাচ্যের দেশঃ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, যেমন সৌদি আরব, কাতার, এবং ওমান—এখানে কাজের সুযোগ ভালো এবং যাওয়ার খরচ তুলনামূলক কম।
- থাইল্যান্ডঃ থাইল্যান্ড পর্যটনের জন্য খুব সাশ্রয়ী একটি দে। যেখানে কম খরচে যাওয়া এবং থাকা সম্ভব।
কম খরচে যাওয়ার জন্য দেশ নির্বাচন করার আগে ভিসা প্রক্রিয়া, টিকিটের মূল্য এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া উচিত।
বাংলাদেশ থেকে কোন দেশ গেলে ভাল হয়ঃ
বাংলাদেশ থেকে কোন দেশ গেলে ভালো হবে তা নির্ভর করে ভ্রমণের উদ্দেশ্য, যেমন—কাজ, পড়াশোনা, ব্যবসা বা স্থায়ী বসবাস। তবে, নিচে বিভিন্ন উদ্দেশ্য অনুযায়ী কিছু দেশের পরামর্শ দেওয়া হলো পড়ে নিনঃ
- কাজের জন্যঃ
- মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো (সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার, ওমান) এইগুলো দেশ দক্ষ এবং অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য কাজের সুযোগ বেশি। খরচ কম এবং উপার্জনের ভালো সুযোগ রয়েছে।
- মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর এই দেশে অল্প খরচে যাওয়া সম্ভব এবং হোটেল, রেস্টুরেন্ট, নির্মাণ বা সেবামূলক খাতে প্রচুর কাজ পাওয়া যায়।
- কানাডা দেশে দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থান এবং স্থায়ী বসবাসের সুযোগ আছে।
- পড়াশোনার জন্যঃ
- কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়াঃ উচ্চ শিক্ষার জন্য অন্যতম সেরা দেশ। যেখানে শিক্ষার মান উন্নত এবং পরবর্তীতে কাজের সুযোগ রয়েছে।
- জার্মানিঃ বিনামূল্যে বা কম খরচে উচ্চ শিক্ষার জন্য আদর্শ।
বাংলাদেশ-থেকে-কোন-দেশ-গেলে-ভাল-হয় |
- পর্যটনের জন্যঃ
- ভারতঃ চিকিৎসা, পর্যটন বা ধর্মীয় ভ্রমণের জন্য নিকটতম ও সাশ্রয়ী দেশ।
- থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়াঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং আধুনিক শহুরে জীবনের অভিজ্ঞতার জন্য জনপ্রিয়।
- স্থায়ী বসবাসের জন্যঃ
- কানাডাঃ স্থায়ী বসবাসের জন্য সহজ প্রক্রিয়া এবং ভালো জীবনযাত্রার মান।
- অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডঃ উন্নত পরিবেশ, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা ব্যবস্থা।
সুতরাং, আপনার উদ্দেশ্য এবং আর্থিক সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে দেশ নির্বাচন করলে ভালো হবে।
সবচেয়ে বেশি বেতন কোন দেশেঃ
বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেতন পাওয়া যায় এমন দেশগুলোর মধ্যে সুইজারল্যান্ড শীর্ষস্থানীয়। এই দেশে ব্যাংকিং, ফিনান্স, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো পেশাগুলিতে কর্মীদের গড় বেতন খুবই উচ্চ। জীবনযাত্রার খরচ তুলনামূলক বেশি হলেও, এখানে বেতন এবং অন্যান্য সুবিধা এত ভালো যে কর্মীরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল থাকতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্র (USA) আরেকটি দেশ যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসা এবং ব্যবসা খাতে কর্মীদের জন্য খুব বেশি বেতনের সুযোগ রয়েছে। নরওয়ে, লুক্সেমবার্গ, এবং ডেনমার্ক উচ্চ বেতনের জন্য পরিচিত, বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা, জ্বালানি, এবং প্রযুক্তি খাতে। সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই, আবুধাবি)-তেও তেল ও গ্যাস, নির্মাণ, এবং করমুক্ত আয়ের কারণে উচ্চ বেতনের সুযোগ রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা-তেও প্রবাসীদের জন্য ভালো বেতনের সুযোগ রয়েছে, বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্যসেবা, এবং আইটি খাতে। কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার উপর ভিত্তি করে এসব দেশে উচ্চ বেতনের সুযোগ পাওয়া যায় এই দেশে।
সুইজারল্যান্ডের সর্বোচ্চ বেতন কত টাকাঃ
সুইজারল্যান্ডে সর্বোচ্চ বেতন কর্মীর পেশা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের ক্ষেত্রের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে, সাধারণত তথ্যপ্রযুক্তি, ব্যাংকিং, ফিনান্স, চিকিৎসা এবং ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে কর্মীদের গড় মাসিক বেতন ১০,০০০ থেকে ২৫,০০০ সুইস ফ্রাঁ (CHF) হতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় এটি প্রায় ১২ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ টাকার মধ্যে (১ সুইস ফ্রাঁ = প্রায় ১২০ টাকা হিসেবে) হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী, যেমন সার্জন, সিইও, বা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের ক্ষেত্রে বেতন আরও বেশি হতে পারে। উল্লেখ্য, সুইজারল্যান্ডে বেতন বেশি হলেও জীবনযাত্রার খরচও তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। তবুও, উচ্চ বেতন এবং চমৎকার জীবনমানের জন্য সুইজারল্যান্ড বিশ্বের অন্যতম সেরা কাজের গন্তব্য।
ইউরোপের কোন দেশে বেতন বেশিঃ
ইউরোপের মধ্যে বেতন বেশি পাওয়া যায় এমন দেশগুলোর মধ্যে সুইজারল্যান্ড শীর্ষে রয়েছে। এখানে ব্যাংকিং, ফিনান্স, তথ্যপ্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো খাতে কর্মীদের মাসিক গড় বেতন ১০,০০০ থেকে ২৫,০০০ সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ১২-৩০ লাখ টাকা) হতে পারে। লুক্সেমবার্গ আরেকটি দেশ, যেখানে গড় মাসিক বেতন প্রায় ৫,০০০-১০,০০০ ইউরো (বাংলাদেশি টাকায় ৬-১২ লাখ টাকা)। এখানে ব্যাংকিং এবং আইটি খাতে কর্মীরা সবচেয়ে বেশি উপার্জন করেন।
নরওয়ে এবং ডেনমার্ক উচ্চ বেতন এবং কর্মীদের জন্য ভালো সামাজিক নিরাপত্তার জন্য পরিচিত। বিশেষত জ্বালানি, প্রকৌশল এবং চিকিৎসা খাতে কর্মীদের জন্য বেতন বেশ আকর্ষণীয়। জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস-এ প্রযুক্তি, প্রকৌশল, এবং গবেষণামূলক কাজের জন্য উচ্চ বেতন দেওয়া হয়। এছাড়া, জার্মানিতে গড় মাসিক বেতন প্রায় ৪,০০০-৮,০০০ ইউরো হতে পারে। জার্মানিতে যদি গড় বেতন ৪,০০০ থেকে ৮,০০০ ইউরো হয়। তবে বাংলাদেশি টাকায় এটি প্রায় ৪,৭০,০০০ থেকে ৯,৪০,০০০ টাকা হয়ে থাকে। (১ ইউরো = প্রায় ১১৭ টাকা ধরে হিসাব করা হয়েছে)।
তবে মুদ্রার বিনিময় হার সময় ও বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে পরিবর্তনশীল। তাই সঠিক রেট যাচাই করার জন্য হালনাগাদ মুদ্রা বিনিময় হার দেখা উচিত। এই দেশগুলোতে বেতন বেশি হলেও, জীবনযাত্রার খরচও তুলনামূলকভাবে বেশি। তবে উচ্চ বেতন এবং সামাজিক সুরক্ষার কারণে প্রবাসীদের জন্য এই দেশগুলো আকর্ষণীয়।
লেখকের মক্তব্যঃ
আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন বাইরের দেশে যাওয়ার এই প্রবাসীদের জন্য কোন দেশ ভালো হয়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে এই সবচেয়ে বেশি কাজের দেশ কোনটি ও কোনগুলো হয়।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.................................www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url