গীতা পাঠ করার সঠিক নিয়ম - গীতার লেখক কে ছিলেন? জেনে রাখুন?
আজকে আমরা জানবো যে সনাতন ধর্মের মানুষের জন্য এই গীতা পাঠ করার সঠিক নিয়ম গুলো কি কি হয়ে থাকে ধর্ম অনুসারে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে এই গীতার লেখক কে ছিলেন আদিকাল ধরে। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
সনাতন ধর্মের মানুষ হলে সে একবার হলেও এই পবিত্র গীতা পাঠ করে থেকেছে। কেননা এই গীতা আমাদের সনাতন ধর্মের একটি প্রাণ। এই গীতা পাঠ করলে বাড়ি থেকে আপদ-বিপদ বিলপ্ত হয়ে যায়। যেটি আমরা সবার মুখে মুখে শুনে বড় হয়েছি। গীতা পাঠ করলে মনে শান্তি আসে ও প্রত্যেক মানুষকে এই গীতা পাঠ করা উচিত।
গীতা-পাঠ-করার-সঠিক-নিয়ম |
তাই আসুন জেনে রাখি যে এই সনাতন ধর্মের মানুষের জন্য গীতা পাঠ করার সঠিক নিয়ম গুলো কি কি হয় ধর্মলম্বী অনুযায়ী। ও তার সাথে সাথে এটাও জেনে নিন যে এই পবিত্র গীতার লেখক কে ছিলেন ও কোন জন্মের ছিলেন। নিম্নে বিস্তারিত...............।
গীতা পাঠ করার সঠিক নিয়মঃ
গীতা পাঠ করার সঠিক নিয়ম হলো শুদ্ধভাবে ভগবদ্গীতার শ্লোকগুলি উচ্চারণ করা এবং সৎ মনোভাব নিয়ে পাঠ করা। গীতাপাঠ করার আগে স্নান করে বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে একটি পবিত্র স্থানে বসা উচিত। পাঠ করার সময় মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখা এবং অহংকার মুক্ত হয়ে ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি প্রদর্শন করা গুরুত্বপূর্ণ।
পাঠ শুরু করার আগে একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করতে হবে। গীতার অধ্যায় এবং শ্লোকগুলি ধারাবাহিকভাবে পড়া উচিত। শ্লোকের পাশাপাশি এর অর্থ বোঝার চেষ্টা করা ভালো। কারণ গীতার মূল শিক্ষা আত্ম উপলব্ধি এবং জীবন দর্শন।
গীতাপাঠ সকালে বা সন্ধ্যায় করা সবচেয়ে উপযোগী বলে মনে করা হয়। কারণ, এই সময় মন বেশি শান্ত থাকে। যদি সম্ভব হয়, গীতার প্রতিটি অধ্যায় শুদ্ধভাবে পাঠ করার পাশাপাশি এর অর্থ চর্চা করা উচিত। এটি কেবল ধর্মীয় চর্চা নয়, বরং মানসিক শান্তি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য সহায়ক। গীতাপাঠের সময় কোনো রকমে তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে পাঠ করলে ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি আরও গভীর হয়।
গীতার লেখক কে ছিলেনঃ
ভগবদ্গীতার লেখক ছিলেন "মহর্ষি বেদব্যাস"। তিনি মহাভারতের রচয়িতা এবং একজন মহান ঋষি ছিলেন। ভগবদ্গীতা মহাভারতের একটি অংশ, যা মূলত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুন এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মধ্যে সংঘটিত ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক কথোপকথন।
মহাভারত রচনা করার সময় বেদব্যাস ভগবদ্গীতার এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটি সংকলন করেন। যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে জীবনের সত্য, ধর্ম, কর্ম, এবং মোক্ষ সম্পর্কে জ্ঞান দেন। যদিও গীতার মূল বক্তা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, তবুও বেদব্যাস এই কথোপকথনটি লিপিবদ্ধ করেন এবং মহাভারতের অংশ হিসেবে তা অমর করে রাখেন। তাই ভগবদ্গীতা শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ হলেও এর লেখক বা সংকলক হিসেবে মহর্ষি বেদব্যাসকেই বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
গীতা পড়লে কি হয়ঃ
গীতা পড়ার ফলাফল আধ্যাত্মিক, মানসিক এবং নৈতিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভগবদ্গীতা শুধু একটি ধর্মীয় গ্রন্থ নয়, এটি জীবনের প্রকৃত অর্থ, কর্মের গুরুত্ব এবং আত্মার চিরন্তন সত্য সম্পর্কে শিক্ষা দেয়। গীতা পড়লে একজন ব্যক্তি জীবনের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জ্ঞান ও শক্তি লাভ করেন।
গীতা-পড়লে-কি-হয় |
গীতা পড়া মানসিক শান্তি ও স্থিরতা প্রদান করে। এটি কর্ম এবং ফলাফলের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে শেখায়, যা আমাদের অহংকার এবং হতাশা থেকে মুক্তি দেয়। গীতার শিক্ষাগুলো জীবনের যেকোনো পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এটি আত্ম-উপলব্ধির মাধ্যমে নিজের প্রকৃত স্বরূপ এবং ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক বোঝাতে সহায়ক হয়।
গীতায় উল্লেখিত যোগ, ভক্তি, জ্ঞান এবং কর্ম সম্পর্কে পাঠ করলে একজন ব্যক্তি আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভ করেন এবং মুক্তির (মোক্ষ) পথ খুঁজে পান। গীতা পড়ার মাধ্যমে জীবনকে আরও অর্থপূর্ণ ও সমৃদ্ধ করা যায়। যা কেবল ধর্মীয় নয়, দৈনন্দিন জীবনের জন্যও প্রাসঙ্গিক হিসাবে পরিচিত।
গীতা পাঠ করার মন্ত্রঃ
গীতা পাঠ শুরু করার আগে ভগবদ্গীতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তি প্রদর্শনের জন্য একটি প্রার্থনা বা মন্ত্র জপ করা হয়। এটি পাঠকের মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে এবং গীতার জ্ঞান গ্রহণের জন্য মনকে প্রস্তুত করে। নিচে গীতা পাঠের আগে জপ করা একটি প্রার্থনা মন্ত্র উল্লেখ করা হলোঃ
“ওঁ পার্থায় প্রতিবোধিতাং ভগবতা নারায়ণেন স্বয়ং।
ব্যাসেন গ্রথিতাং পুরাণমুনিনা মধ্যে মহাভারতম্।
অদ্বৈতামৃতবর্ষিণীম্ ভগবতীমষ্টাদশাধ্যায়িনীম্।
আম্ব ত্বামনুসন্দধামি ভগবদ্গীতে ভবাদ্বেষিণীম্।।”
বাংলা অর্থঃ
আমি সেই ভগবদ্গীতার প্রতি প্রণাম জানাই, যা স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক অর্জুনকে শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল এবং যেটি মহর্ষি বেদব্যাস দ্বারা মহাভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই গীতা মোক্ষের পথ প্রদর্শন করে এবং অদ্বৈত জ্ঞানের অমৃত বর্ষণ করে।
এই মন্ত্র জপ করে গীতাপাঠ শুরু করলে ঈশ্বরের কৃপা পাওয়া যায় এবং পাঠকারী গীতার গভীরতর জ্ঞান লাভে সক্ষম হন।
স্কুল কলেজে গীতা পাঠের নিয়মঃ
স্কুল ও কলেজে গীতা পাঠের নিয়ম মূলত শিক্ষার্থীদের মাঝে নৈতিকতা, আধ্যাত্মিক জ্ঞান এবং মানসিক স্থিরতা গড়ে তোলার জন্য প্রবর্তিত হয়। গীতা পাঠ একটি নির্দিষ্ট কাঠামো মেনে করা হয়। যাতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বজায় থাকে এবং তারা এর সারমর্ম বুঝতে পারে।
- পাঠ শুরুর আগে প্রস্তুতিঃ
- গীতা পাঠের আগে একটি পবিত্র পরিবেশ তৈরি করা উচিত। শিক্ষার্থীরা বসার আগে শান্তভাবে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করবে।
- শিক্ষকের নির্দেশে শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধার সঙ্গে গীতার প্রতি প্রণাম জানাবে।
- গীতা পাঠের মন্ত্রপাঠঃ
- পাঠ শুরু করার আগে গীতার ধ্যানমন্ত্র (যেমন “ওঁ পার্থায় প্রতিবোধিতাং...” ইত্যাদি) জপ করা হয়।
- শিক্ষক বা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একজন এটি উচ্চারণ করবে। বাকিরা মনোযোগ দিয়ে শুনবে।
- অধ্যায় বা শ্লোক বাছাইঃ
- গীতা পাঠের জন্য ১৮টি অধ্যায়ের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট শ্লোক বাছাই করা হয়। যা শিক্ষার্থীদের বয়স এবং মানসিকতার সঙ্গে মানানসই।
- সাধারণত নৈতিক শিক্ষা ও আত্মউন্নয়নের জন্য উপযুক্ত শ্লোকগুলো পাঠ করা হয়।
- পাঠের প্রক্রিয়াঃ
- শিক্ষকের নির্দেশে শিক্ষার্থীরা শ্লোক উচ্চারণ করবে।
- শ্লোকের বাংলা বা ইংরেজি অর্থ ব্যাখ্যা করে তাদের বোঝানো হয়। যাতে তারা এর মূল মর্মার্থ বুঝতে পারে।
- আলোচনা ও শিক্ষাঃ
- গীতা পাঠের শেষে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শ্লোকের শিক্ষা ও ব্যবহারিক দিক নিয়ে আলোচনা করবেন।
- এটি জীবনে কীভাবে প্রয়োগ করা যায়, তা শিক্ষার্থীদের বোঝানো হয়।
সমাপ্তি প্রার্থনাঃ
- পাঠ শেষে শিক্ষার্থীরা সমাপ্তি মন্ত্র বা প্রার্থনা উচ্চারণ করবে।
অবশেষে, স্কুল-কলেজে গীতা পাঠের লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষা প্রদান করা এবং তাদের মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করা। এটি শুধু ধর্মীয় চর্চা নয়, বরং জীবনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে স্থিরতা ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথ দেখানোর জন্য একটি মূল্যবান শিক্ষা হিসেবে কাজ করে।
গীতার আরেক নাম কিঃ
গীতার আরেক নাম হলো "শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা"। এটি হিন্দু ধর্মের একটি পবিত্র গ্রন্থ, যা মহাভারতের অন্তর্গত। এছাড়াও, গীতাকে অনেক সময় "যোগশাস্ত্র" বা "গীতা উপনিষদ" নামেও উল্লেখ করা হয়। কারণ এটি বিভিন্ন যোগ (কর্মযোগ, জ্ঞানযোগ, ভক্তিযোগ) এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের মূল শিক্ষা প্রদান করে।
গীতার-আরেক-নাম-কি |
গীতার আরেকটি বিশেষ নাম হলো "ত্রয়ীশাস্ত্র", কারণ এতে কর্ম, জ্ঞান এবং ভক্তি—এই তিনটি প্রধান যোগের সমন্বয় রয়েছে। এটি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ এবং জীবনদর্শনের সারাংশ বহন করে। যা আধ্যাত্মিক ও নৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গীতার কোন অধ্যায় পাঠ করলে কি ফল লাভ হয়ঃ
ভগবদ্গীতার প্রতিটি অধ্যায় আলাদা আলাদা শিক্ষা ও ফল প্রদান করে। গীতার ১৮টি অধ্যায়ে বিভিন্ন যোগ, জ্ঞান এবং জীবনের দার্শনিক দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। নিচে প্রতিটি অধ্যায়ের মূল বিষয়বস্তু এবং তা পাঠ করার ফলে কী লাভ হয়, তা সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো পড়ে নিন?
১। অর্জুন-বিষাদ যোগ (১ম অধ্যায়)
লাভঃ মনোবেদনা ও সংকটের সময় মানসিক স্থিরতা এবং নিজের অবস্থান বোঝার জ্ঞান লাভ হয়।
২। সাংখ্য যোগ (২য় অধ্যায়)
লাভঃ কর্ম এবং জ্ঞান সম্পর্কে গভীর দৃষ্টি ও সমতা লাভ করা যায়। এটি আত্মার প্রকৃতি বোঝায় এবং জীবনের উদ্দেশ্য পরিষ্কার করে।
৩। কর্ম যোগ (৩য় অধ্যায়)
লাভঃ নিজ কর্তব্য পালন এবং নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার জ্ঞান অর্জন হয়। কর্মফল থেকে মুক্তির উপায় শেখায়।
৪। জ্ঞান যোগ (৪র্থ অধ্যায়)
লাভঃ জীবনে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
৫। সন্ন্যাস যোগ (৫ম অধ্যায়)
লাভঃ ইন্দ্রিয় দমন ও মানসিক শান্তি লাভ হয়। সংসারে থেকেও আধ্যাত্মিক পথে চলার শিক্ষা দেয়।
৬। ধ্যান যোগ (৬ষ্ঠ অধ্যায়)
লাভঃ ধ্যানের মাধ্যমে মনকে একাগ্র করা এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভ করা যায়।
৭। জ্ঞান-বিদ্যা যোগ (৭ম অধ্যায়)
লাভঃ ভগবানের প্রকৃত রূপ এবং সৃষ্টির প্রকৃতি বোঝার জ্ঞান লাভ হয়।
৮। অক্ষর-ব্রহ্ম যোগ (৮ম অধ্যায়)
লাভঃ মৃত্যুর সময় ব্রহ্ম সম্পর্কে ধ্যান করে মুক্তি লাভের পথ বোঝা যায়।
৯। রাজ-বিদ্যা রাজ-গুহ্য যোগ (৯ম অধ্যায়)
লাভঃ ভগবানের প্রতি ভক্তি ও ঈশ্বরের মহান শক্তি সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন হয়।
১০। বিভূতি যোগ (১০ম অধ্যায়)
লাভঃ সৃষ্টিতে ভগবানের অপার শক্তি ও গৌরব সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি লাভ করতে সহায়ক।
১১। বিশ্বরূপ দর্শন যোগ (১১তম অধ্যায়)
লাভঃ ভগবানের সর্বাত্মক রূপ বোঝা এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের ঐক্য অনুভব করা যায়।
১২। ভক্তি যোগ (১২তম অধ্যায়)
লাভঃ ভগবানের প্রতি নিঃস্বার্থ ভক্তি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির পথ সহজ হয়।
১৩। ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞ বিভাগ যোগ (১৩তম অধ্যায়)
লাভঃ শরীর ও আত্মার পার্থক্য এবং প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক বোঝা যায়।
১৪। গুণত্রয় বিভাগ যোগ (১৪তম অধ্যায়)
লাভঃ সত্ত্ব, রজঃ এবং তমঃ—এই তিন গুণের প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ শেখায়।
১৫। পুরুষোত্তম যোগ (১৫তম অধ্যায়)
লাভঃ পরমাত্মা ও জীবাত্মার সম্পর্ক বোঝা এবং মুক্তি লাভের পথ জানা যায়।
১৬। দৈব-আসুর সম্পদ বিভাগ যোগ (১৬তম অধ্যায়)
লাভঃ দৈব গুণ এবং আসুরিক গুণের পার্থক্য এবং সৎ জীবনযাপনের শিক্ষা লাভ করা যায়।
১৭। শ্রদ্ধাত্রয় বিভাগ যোগ (১৭তম অধ্যায়)
লাভঃ বিশ্বাসের তিন প্রকার এবং সঠিক ধর্মীয় আচরণের মাধ্যমে পূণ্য অর্জনের পথ জানা যায়।
১৮। মোক্ষ-সন্ন্যাস যোগ (১৮তম অধ্যায়)
লাভঃ কর্মফল থেকে মুক্তি এবং জীবনের পরম উদ্দেশ্য মোক্ষ অর্জনের পূর্ণ জ্ঞান লাভ হয়।
গীতার প্রতিটি অধ্যায় জীবনের একটি নির্দিষ্ট দিক বা সমস্যার সমাধান দেয়। সঠিকভাবে অধ্যায়গুলো পাঠ করলে মানসিক শান্তি, আত্মজ্ঞান, এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভ করা যায়। পাঠক তার জীবনের চাহিদা অনুযায়ী যে কোনো অধ্যায় পাঠ করতে পারেন এবং এর ফলে জীবনের জটিলতা কাটিয়ে উঠতে পারেন।
গীতা পাঠ মন্ত্র যদা যদা হিঃ
"যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্।।
পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।"
অর্থঃ
হে ভারত (অর্জুন), যখনই ধর্মের হানি ঘটে এবং অধর্মের বৃদ্ধি ঘটে, তখন আমি (ভগবান) নিজেকে প্রকাশ করি। সাধুদের রক্ষা, দুষ্টদের ধ্বংস এবং ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য আমি যুগে যুগে অবতীর্ণ হই।
এই শ্লোকটি ভগবদ্গীতার চতুর্থ অধ্যায়ের ৭ম ও ৮ম শ্লোক। এটি পাঠ করার মাধ্যমে ভক্তরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তি প্রকাশ করেন এবং ধর্ম রক্ষার জন্য তাঁর ভূমিকা স্মরণ করেন। এটি গীতার অন্যতম পবিত্র মন্ত্র এবং ভগবানের অনন্ত কৃপা ও অবতারত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গীতাপাঠের সময় এই শ্লোক পাঠ করলে ভক্তি এবং মনোযোগ আরও বৃদ্ধি পায়।
লেখকের মক্তব্যঃ
আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে সনাতন ধর্মের মানুষের জন্য এই গীতা পাঠ করার সঠিক নিয়ম গুলো কি কি। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে এই গীতার লেখক কে ছিলেন।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন..............................www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url