স্ট্রবেরি খাবার নিয়ম - স্ট্রবেরি খেতে কেমন লাগে? বিস্তারিত জেনে নিন?
আজকে আমরা জানবো যে আমাদের শরীরের প্রোটিনের জন্য আমরা যেসব ফল খেয়ে থাকি। তার মধ্য এই স্ট্রবেরি খাবার নিয়ম কি-কি। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে এই স্ট্রবেরি খেতে কেমন লাগে আমাদের মুখে। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
আমরা আমাদের শরিরকে ফিট ও সতেজ রাখার জন্য কোনো না কোনো কিছু খেয়ে থাকি বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের ফল। কেননা এই ফলের মধ্য প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও কোলেস্ট্রল পাওয়া যায়। যা আমদের শরীরকে সুস্থ্য ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে থাকে।
স্ট্রবেরি-খাবার-নিয়ম |
তাই আসুন জেনে রাখি যে ফলের মধ্য এই স্ট্রবেরি খাবার নিয়ম গুলো কি-কি হয়ে থাকে আমাদের শরীরের জন্য। যেটি খেলে আমরা শক্তি ও প্রোটন পাই। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে এই স্ট্রবেরি খেতে কেমন লাগে আমাদের মুখে স্বাদের জন্য। নিম্নে বিস্তারিত.........।
স্ট্রবেরি খাবার নিয়মঃ
স্ট্রবেরি খাওয়ার সঠিক নিয়ম মেনে চললে এর পুষ্টিগুণ থেকে সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া যায়। প্রথমত, স্ট্রবেরি খাওয়ার আগে এটি ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে, কারণ এর উপরিভাগে প্রাকৃতিক মোম বা কীটনাশক থাকতে পারে। সকালে বা দিনের প্রথমার্ধে স্ট্রবেরি খাওয়া ভালো। কারণ এতে থাকা প্রাকৃতিক ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দিন শুরু করার জন্য শক্তি যোগায়। স্ট্রবেরি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। এটি নাস্তা, স্মুদি, বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ পেয়েরা খাওয়ার উপকারিতা কি কি হয়ে থাকে আমাদের শরীরের জন্য জেনে নিন?
অতিরিক্ত চিনি বা প্রিজারভেটিভযুক্ত স্ট্রবেরি এড়ানো চলবেন। কারণ এটি স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। প্রতিদিন ৫-১০টি স্ট্রবেরি খাওয়া পুষ্টি বজায় রাখতে যথেষ্ট। সতর্কতার সঙ্গে খেতে হবে যদি কারো স্ট্রবেরি অ্যালার্জি থাকে। সঠিক নিয়ম মেনে স্ট্রবেরি খেলে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
স্ট্রবেরি খেতে কেমন লাগেঃ
স্ট্রবেরি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং সতেজ মনে হয়। এর স্বাদ মিষ্টি এবং হালকা টক, যা অনেকের কাছে প্রিয়। বিশেষ করে স্ট্রবেরি তাজা অবস্থায় খেলে এর রসালো এবং নরম টেক্সচার খাওয়ার অভিজ্ঞতাকে আরও উপভোগ্য করে তোলে। পাকা স্ট্রবেরির মিষ্টি স্বাদ বেশি। যেখানে অল্প পাকা বা কাঁচা স্ট্রবেরিতে টক ভাব বেশি থাকে।
আরো পড়ুনঃ কাঠ বাদাম খাওয়া কেন জরুরী আমাদের শরীর ফিট ও সতেজ রাখার জন্য জেনে নিন?
স্ট্রবেরির স্বাদ নাস্তা, ডেজার্ট, স্মুদি, বা সালাদের সঙ্গে মিলিয়ে খেতে আরও ভালো লাগে। এটি শুধু স্বাদে নয়। দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় অনেকের পছন্দের একটি ফল।
স্ট্রবেরি খাওয়ার উপকারিতাঃ
স্ট্রবেরি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা শরীরের পুষ্টি সরবরাহ করে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। নিচে স্ট্রবেরি খাওয়ার প্রধান উপকারিতাগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ স্ট্রবেরিতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সহায়ক।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোঃ এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতাঃ ডাক্তারের মতে, স্ট্রবেরি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখে এবং বার্ধক্যের লক্ষণ কমায়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ কম ক্যালোরিযুক্ত এই ফল ফাইবার সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে।
- চোখের স্বাস্থ্য উন্নত করাঃ স্ট্রবেরিতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং মুক্ত মৌল (Free Radicals) প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ এতে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- হজম প্রক্রিয়া উন্নত করাঃ স্ট্রবেরিতে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
স্ট্রবেরি একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল, যা সঠিক পরিমাণে খেলে শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
স্ট্রবেরি খাওয়ার অউপকারিতাঃ
স্ট্রবেরি খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অউপকারিতাও রয়েছে, যা বিশেষ পরিস্থিতিতে বা অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে দেখা দিতে পারে মানুষের মধ্য। নিচে স্ট্রবেরি খাওয়ার কিছু সম্ভাব্য অউপকারিতা তুলে ধরা হলোঃ
- অ্যালার্জিঃ কিছু মানুষের জন্য স্ট্রবেরি অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। এর ফলে ত্বকে চুলকানি, ফুসকুড়ি, কিংবা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে, বিশেষত শিশুদের মধ্যে।
- অ্যাসিডিটির সমস্যাঃ স্ট্রবেরি একটি অ্যাসিডিক ফল, যা বেশি খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা বা পেটে অস্বস্তি হতে পারে। বিশেষ করে যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে।
- অক্সালেটের উপস্থিতিঃ স্ট্রবেরিতে অক্সালেট থাকে, যা কিডনি পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বিশেষ করে যারা এই সমস্যায় আগে থেকেই ভুগছেন।
- রক্ত পাতলা হওয়ার ঝুঁকিঃ স্ট্রবেরি রক্ত পাতলা করার বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ সেবন করেন, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকারক হতে পারে।
- বাজারজাত স্ট্রবেরিতে কীটনাশক: বাজারে পাওয়া স্ট্রবেরিতে প্রায়ই কীটনাশক বা প্রিজারভেটিভ ব্যবহৃত হয়। যা অতিরিক্ত গ্রহণ করলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
সঠিক পরিমাণে এবং ভালোভাবে ধুয়ে খাওয়া স্ট্রবেরি সাধারণত স্বাস্থ্যকর। তবে, যাদের উপরোক্ত সমস্যা রয়েছে, তাদের স্ট্রবেরি খাওয়ার আগে সতর্ক থাকা উচিত।
গর্ভবস্থায় স্ট্রবেরি খাওয়ার উপকারিতাঃ
গর্ভাবস্থায় স্ট্রবেরি খাওয়া মা ও গর্ভের শিশুর জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে বিবেচিত। নিচে এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা তুলে ধরা হলো যে কীভাবে খাওয়া উচিত আসুন জানা যাকঃ
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ স্ট্রবেরি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ থাকে। যা গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং গর্ভের শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সহায়তা করে।
- শরীরে আয়রন শোষণ বাড়ানোঃ স্ট্রবেরির ভিটামিন সি শরীরে আয়রন শোষণে সাহায্য করে, যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে কার্যকর। এটি গর্ভাবস্থায় মায়ের রক্তের মান বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়কঃ স্ট্রবেরিতে থাকা ফোলেট গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং জন্মগত ত্রুটি রোধে সহায়তা করে।
- অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সরবরাহঃ এতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস গর্ভবতী মায়ের ত্বক সুস্থ রাখে এবং শরীরের কোষগুলোকে সুরক্ষিত করে।
- হজম প্রক্রিয়া উন্নত করাঃ স্ট্রবেরিতে ফাইবার রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়া সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে, যা গর্ভাবস্থায় একটি সাধারণ সমস্যা।
- ওজন নিয়ন্ত্রণঃ কম ক্যালোরি এবং উচ্চ পুষ্টিগুণের কারণে স্ট্রবেরি গর্ভাবস্থায় ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
সতর্কতা, যদি স্ট্রবেরি খাওয়ার পর কোনো অ্যালার্জি বা অস্বস্তি দেখা দেয়, তবে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ভালোভাবে ধুয়ে এবং তাজা স্ট্রবেরি খাওয়া মায়ের এবং শিশুর উভয়ের জন্য নিরাপদ।
স্ট্রবেরি কখন খাওয়া উচিতঃ
স্ট্রবেরি খাওয়ার সঠিক সময় হলো সকালে বা দিনের প্রথমার্ধে। সকালে স্ট্রবেরি খেলে এটি শরীরকে শক্তি জোগায় এবং দিন শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। স্ট্রবেরিতে থাকা ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এবং ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে। স্ট্রবেরি একটি হালকা খাবার হওয়ায় এটি ক্ষুধা মেটানোর জন্য দিনের মাঝখানে নাস্তার বিকল্প হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
স্ট্রবেরি-কখন-খাওয়া-উচিত |
তবে, রাতে স্ট্রবেরি খেলে কিছু মানুষের জন্য হজমে সমস্যা হতে পারে, কারণ এতে অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাজা এবং ভালোভাবে ধোয়া স্ট্রবেরি খাওয়া সর্বদা স্বাস্থ্যকর। এটি কাঁচা খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। এ ছাড়া স্মুদি বা সালাদের অংশ হিসেবে খেলে স্বাদ ও পুষ্টি দুটোই বাড়ে।
প্রতিদিন কতটুকু স্ট্রবেরি খাওয়া যায়ঃ
প্রতিদিন ৫-১০টি স্ট্রবেরি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য আদর্শ এবং নিরাপদ শরীরের জন্য। এই পরিমাণ স্ট্রবেরি শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এবং ফাইবার সরবরাহ করতে যথেষ্ট। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত স্ট্রবেরি খাওয়া কিছু ক্ষেত্রে অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। যেমনঃ গ্যাস, অ্যাসিডিটি, বা হজমে সমস্যা।
আরো পড়ুনঃ আমাদের শরীরের পুষ্টি, ভিটামিন, ও প্রোটিন যোগাতে পাঁকা কলার গুণগান জানুন?
বিশেষ করে যাদের অ্যালার্জি বা হজমজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের স্ট্রবেরি খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। পরিমাণে নিয়মিত স্ট্রবেরি খেলে এটি স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর, তবে খুব বেশি খেলে উল্টো সমস্যা হতে পারে। সঠিক পুষ্টির জন্য এটি সুষম খাদ্যাভ্যাসের একটি অংশ হিসেবে রাখাই ভালো।
লেখকের মক্তব্যঃ
আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন আমাদের শরীর ফিট ও সতেজ রাখার এই স্ট্রবেরি খাবার নিয়ম কি কি। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে স্ট্রবেরি খেতে কেমন লাগে আমাদের মুখে।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন........................www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url