শেয়ার কেনার কতদিন পর বিক্রি করা যায় - শেয়ার কেনার সঠিক সময়? জেনে রাখুন?

আজকে আমরা জানবো যে স্টক মার্কেটের দুনিয়ায় এই শেয়ার কেনার কতদিন পর বিক্রি করা যায় যাতে মানুষ লাভবান হতে পারে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে এই শেয়ার কেনার সঠিক সময় কখন হয় স্টক মার্কেট জন্য। আসুন জানি?  

ভূমিকাঃ

অনলাইনের দুনিয়ায় টাকার সবচেয়ে বড় প্লাটফরম হলো স্টক মার্কেট যেখানে আপনি টাকা লাগিয়ে আপনার টাকাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে হাজার গুণ বাড়াতে পারবেন ঘরে বসে ও নিজের একটু বৃদ্ধি খাটিয়ে।

শেয়ার-কেনার-কতদিন-পর-বিক্রি-করা-যায়
   শেয়ার-কেনার-কতদিন-পর-বিক্রি-করা-যায়        

তাই আসুন জেনে নি যে এই স্টক মার্কেটে কীভাবে আপনি খুব সহজে শেয়ার কেনার কতদিন পর বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন। ও তার সাথে এটাও জানুন যে এই স্টক মার্কেটের জন্য এই শেয়ার কেনার সঠিক সময় কখন হয়ে থাকে। নিম্নে সব কিছু বিস্তারিত......।

শেয়ার কেনার কতদিন পর বিক্রি করা যায়ঃ

শেয়ার কেনার পর সাধারণত ট্রেড সেটলমেন্ট সাইকেল অনুযায়ী বিক্রি করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশসহ বেশিরভাগ দেশে T+2 সাইকেল অনুসরণ করা হয়, যার অর্থ হল শেয়ার কেনার দুই কার্যদিবস পর সেই শেয়ার বিক্রি করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি সোমবার একটি শেয়ার কেনেন, তাহলে সেটি বুধবার থেকে বিক্রির জন্য উপলব্ধ থাকবে।

আরো পড়ুনঃ কীভাবে ট্রেডিং শুরু করে ঘরে বসে টাকা ইনকাম করবেন তার ব্যাসিক টিপস জানুন?

এটি নিশ্চিত করে যে লেনদেন সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং শেয়ারের মালিকানা আপনার নামে লিপিবদ্ধ হয়েছে। তবে, বাজারের নিয়মাবলী এবং ব্রোকারের নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী এই সময়কাল কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে, তাই ব্রোকার বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া উচিত। তার পরে আপনার শেয়ার বিক্রির জন্য প্রস্তত।

শেয়ার কেনার সঠিক সময়ঃ

শেয়ার কেনার সঠিক সময় নির্ভর করে বাজারের অবস্থা, কোম্পানির আর্থিক পরিস্থিতি, এবং বিনিয়োগকারীর লক্ষ্য ও কৌশলের উপর। সাধারণত, যখন বাজারে মন্দার সময় বা কোনো স্টকের মূল্য কম থাকে এবং সে কোম্পানির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ভালো, তখন শেয়ার কেনা একটি লাভজনক সিদ্ধান্ত হতে পারে। এটি “Buy Low, Sell High” কৌশল নামে পরিচিত।

আরো পড়ুনঃ কীভাবে আপনি ক্রিপ্টো ক্যারেন্সি শেয়ার মার্কেটে লাগিয়ে টাকা ইনকাম করবেন জানুন?

শেয়ার কেনার আগে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন এবং প্রবৃদ্ধির হার বিশ্লেষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। মৌলিক বিশ্লেষণ এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে বাজারের ট্রেন্ড এবং শেয়ারের সম্ভাব্য গতিবিধি বোঝা যেতে পারে। এছাড়া, বাজারে তীব্র পতনের পর বা বড় কোনো আর্থিক ইভেন্টের সময়, যেমন নতুন পণ্যের উদ্বোধন বা নিয়ন্ত্রক অনুমোদন, শেয়ার কেনার জন্য ভালো সুযোগ হতে পারে।

অবশেষে, দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য শেয়ার কেনার সঠিক সময় হলো যখন আপনি একটি স্থিতিশীল এবং সম্ভাবনাময় কোম্পানি খুঁজে পান। যা নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করে এবং সুদৃঢ় আর্থিক অবস্থা বজায় রাখে।

শেয়ার কিঃ

শেয়ার হলো একটি কোম্পানির মালিকানার অংশ, যা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ভাগ করা হয়। যখন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনেন, তখন সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সেই কোম্পানির আংশিক মালিক হয়ে ওঠে। শেয়ারের মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির মুনাফায় অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং কোম্পানির সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় ভোট দেওয়ার অধিকারও পেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ স্টক মার্কেট কীভাবে কাজ করে ও কীভাবে আপনি টাকা ইনকাম করবেন A to Z?

শেয়ার দুই প্রকার হয়ে থাকে। যথাঃ ইক্যুইটি শেয়ার এবং প্রেফারেন্স শেয়ার। ইক্যুইটি শেয়ারধারীরা সাধারণত বেশি ঝুঁকি বহন করেন, তবে লাভের অংশও বেশি পেতে পারেন। আর প্রেফারেন্স শেয়ারধারীরা নির্দিষ্ট লভ্যাংশ পাওয়ার অধিকার রাখেন এবং তারা ইক্যুইটি শেয়ারধারীদের আগে লভ্যাংশ পেয়ে থাকেন।

শেয়ার কেনা-বেচা সাধারণত শেয়ার বাজার বা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে করা হয়, যেখানে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারের দাম বাড়ার আশায় শেয়ার কিনে রাখেন এবং পরে বেশি দামে বিক্রি করে লাভ করতে পারেন। এটি হচ্ছে শেয়ার বাজার।

শেয়ার কেনার কৌশলঃ

শেয়ার কেনার কৌশলগুলো বুঝে নেওয়া বিনিয়োগকারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সফলভাবে শেয়ার কেনার জন্য কয়েকটি কার্যকর কৌশল রয়েছে তা নিম্নে দেখে নিন?

  1. মৌলিক বিশ্লেষণঃ কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, আয়, লাভ, এবং ঋণের পরিমাণ বিশ্লেষণ করা। এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কোম্পানির প্রকৃত মূল্য এবং তা বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত কি'না।
  2. প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণঃ বাজারের গতিবিধি, শেয়ারের মূল্য এবং ট্রেন্ড বিশ্লেষণ করা। এই কৌশলে চার্ট, গ্রাফ এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সূচক ব্যবহার করা হয়। যা বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ প্রবণতা বোঝাতে সাহায্য করে।
  3. বিনিয়োগের সময় বাছাইঃ বাজারে মন্দা বা মূল্য কম থাকার সময় শেয়ার কেনা সাধারণত একটি ভালো কৌশল। এটি “Buy Low, Sell High” কৌশলের ওপর ভিত্তি করে আপনাকে বেঁছে নিতে হবে।
  4. বৈচিত্র্য আনয়নঃ পোর্টফোলিওতে বিভিন্ন সেক্টরের শেয়ার অন্তর্ভুক্ত করা রয়েছে। এটি ঝুঁকি কমায় এবং একটি নির্দিষ্ট খাতের সমস্যার সময় ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।
  5. লভ্যাংশ প্রদানকারী শেয়ারে বিনিয়োগঃ এমন কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনা যেগুলো নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করে সেগুলো কেনার চেষ্টা করবেন। কারণ এটি আয়ের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস হতে পারে।
  6. দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গিঃ দ্রুত মুনাফার আশায় শেয়ার কেনা-বেচা না করে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করা ভালো, কারণ এতে বাজারের ওঠা-নামার প্রভাব কম অনুভূত হয় এবং টাকা আয় সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এই কৌশলগুলো অনুসরণ করলে শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে এবং বিনিয়োগ সফল হতে পারে।

শেয়ার কবে বিক্রি করা উচিতঃ

শেয়ার বিক্রি করার সঠিক সময় নির্ভর করে বাজারের অবস্থা, কোম্পানির আর্থিক কর্মক্ষমতা এবং বিনিয়োগকারীর লক্ষ্য ও কৌশলের উপর। সাধারণত, কিছু মূল কারণের ভিত্তিতে শেয়ার বিক্রি করা উচিত আপনার তা নিম্নে উদাহরণ্ন

  • মূল্য বৃদ্ধির পরঃ যদি শেয়ারের মূল্য আপনার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায় এবং লাভ নিশ্চিত হয়। তখন শেয়ার বিক্রি করা উচিত। এটি “Buy Low, Sell High” কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। 
  • কোম্পানির আর্থিক অবস্থা অবনতির সময়ঃ যদি কোনো কোম্পানির আর্থিক কর্মক্ষমতা দুর্বল হয় বা ভবিষ্যৎ আয় নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়, তখন শেয়ার বিক্রি করে সেই বিনিয়োগ থেকে সরে আসা ভালো।
শেয়ার-কবে-বিক্রি-করা-উচিত
শেয়ার-কবে-বিক্রি-করা-উচিত    
  • বাজারের বড় পরিবর্তন বা মন্দার সময়ঃ শেয়ার বাজারে বড় পতন বা মন্দার আশঙ্কা দেখা দিলে তখন শেয়ার বিক্রি করে নিজের ক্ষতি সীমিত টাকা আগে তুলে নিবেন।
  • লক্ষ্যের পরিবর্তনঃ যদি কখনো আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য পরিবর্তন হয়, যেমন দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের পরিবর্তে স্বল্পমেয়াদি লাভ নেওয়া আপনার চিন্তা। তখন আপনার শেয়ার বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
  • লভ্যাংশ না পাওয়াঃ যদি কোম্পানি লভ্যাংশ প্রদান বন্ধ করে বা কমিয়ে দেয়, তবে শেয়ার বিক্রির কথা বিবেচনা করা উচিত। বিশেষত যদি আপনি লভ্যাংশের জন্য বিনিয়োগ করে থাকেন।

এই কারণগুলোর ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং বাজারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে শেয়ার বিক্রি করা গুরুত্বপূর্ণ।

শেয়ার বাজার কি হালালঃ

শেয়ার বাজারের হালাল বা হারাম হওয়ার প্রশ্নটি ইসলামী শরিয়তের বিভিন্ন বিধান ও প্রয়োজনীয় শর্তের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ হালাল হতে পারে যদি তা ইসলামী আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এর অর্থ হলো, বিনিয়োগ করতে হবে এমন কোম্পানিতে যা বৈধ পণ্য ও সেবা সরবরাহ করে এবং সুদ, জুয়া বা হারাম পণ্যের ব্যবসার সাথে জড়িত নয়।

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে যেকোনো প্লাটফরমে টাইপিং জব করে কীভাবে টাকা আয় করবেন জানুন?

একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার আগে তার আর্থিক ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম যাচাই করা জরুরি, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি ইসলামী নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো কোম্পানির আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সুদ বা হারাম ব্যবসার মাধ্যমে আসে। তবে সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে হারাম বলে বিবেচিত হবে।

তাই, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের আগে ইসলামী পণ্ডিতদের পরামর্শ নেওয়া এবং শরিয়াহ ভিত্তিক গাইডলাইন অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। 

লেখকের মক্তব্যঃ

আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন অনলাইনের দুনিয়ায় স্টক মার্কেটের এই শেয়ার কেনার কতদিন পর বিক্রি করা উচিত। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে শেয়ার কেনার সঠিক সময় কখন।

প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন..................www.stylishsm.com



( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )













এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url