কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত - কাঠ বাদাম খেলে কি ওজন বাড়ে? বিস্তারিত জেনে নিন?

আজকে আমরা জানবো যে আমাদের শরীরের পুষ্টি ও শক্তি যোগান দেওয়ার জন্য এই কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে আমাদের শরীরে এই কাঠ বাদাম খেলে কি ওজন বাড়ে? আসুন জানি? 

ভূমিকাঃ

আমরা আমাদের শরীরে প্রোটিন ও শক্তি যোগান দেওয়ার জন্য আমরা কিছু না কিছু খেয়ে থাকি। তার মধ্য হচ্ছে এই কাঠ বাদাম। এই কাঠ বাদাম খেলে আমাদের শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন ও ভিটামিন পেয়ে থাকে শরীর। যেটি আমাদের মাঝে মাঝে বা চেষ্ট করতে হবে প্রতিদিন খাওয়ার। যাতে করে আমাদের শরীরে প্রোটিন ভরপুর থাকে।

কাঠ-বাদাম-কখন-খাওয়া-উচিত
কাঠ-বাদাম-কখন-খাওয়া-উচিত    

তাই আসুন জেনে রাখি যে আমাদের শরীর পুষ্টিকর করে তোলার জন্য এই কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত সারাদিনে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে এই কাঠ বাদাম খেলে কি ওজন বাড়ে আমাদের শরীরের। নিম্নে বিস্তারিত.........। 

কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিতঃ

কাঠ বাদাম খাওয়ার সঠিক সময় নির্ভর করে শরীরের চাহিদা এবং খাবারের রুটিনের উপর। সাধারণত, কাঠ বাদাম সকালে খাওয়া সবচেয়ে উপকারী বলে মনে করা হয়। কারণ এটি শক্তি যোগায় এবং দিনের শুরুতে শরীরকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। সকালে খাওয়ার জন্য কাঠ বাদাম ভিজিয়ে নরম করা হলে তা সহজে হজম হয় এবং পুষ্টি শোষণ ভালো হয়। এছাড়া, কাঠ বাদাম মাঝে মাঝে ক্ষুধা লাগলে নাশতা হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।

আরো পড়ুনঃ আপেল খেলে আমাদের শরীরে কি কি উপকার হয় ও কতটা পুষ্টি পায় জেনে নিন?

যা ক্ষুধা মেটায় এবং স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে কাজ করে। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান বা ব্যায়াম করেন। তারা ব্যায়ামের আগে বা পরে কাঠ বাদাম খেতে পারেন। কারণ এটি প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সরবরাহ করে। রাতে খাওয়া হলে এটি হালকা স্ন্যাকস হিসেবে কাজ করতে পারে, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে। তাই কাঠ বাদাম খাওয়ার সময় পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ এবং সঠিক সময় নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ।

কাঠ বাদাম খেলে কি ওজন বাড়েঃ

কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে ওজন বাড়তে পারে, তবে এটি নির্ভর করে কী পরিমাণে এবং কীভাবে খাওয়া হচ্ছে তার উপর। কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ক্যালোরি, এবং প্রোটিন থাকে। যদি নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে কাঠ বাদাম খাওয়া হয়। তবে এটি শরীরের ক্যালোরি চাহিদার তুলনায় বেশি ক্যালোরি সরবরাহ করতে পারে, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ আপেলের জুস খেলে আমাদের শরীর কতটা রোগ থেকে মুক্তি পায় ও পুষ্টি পায় জানুন?

তবে, কাঠ বাদাম সঠিক পরিমাণে খেলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। এতে থাকা ফাইবার এবং প্রোটিন ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। যা অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে। অতএব, কাঠ বাদাম নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খাওয়া হলে এটি স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর, কিন্তু অতিরিক্ত খেলে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে।

কাঠ বাদাম কীভাবে খেতে হয়ঃ

কাঠ বাদাম খাওয়ার কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে, যা এর পুষ্টিগুণকে আরও উপকারী করে তোলে। নিচে কাঠ বাদাম খাওয়ার সঠিক উপায়গুলো দেওয়া হলোঃ

  1. ভিজিয়ে খাওয়াঃ কাঠ বাদাম রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খাওয়া সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি। ভেজানো কাঠ বাদাম সহজে হজম হয় এবং এতে থাকা অ্যান্টি-নিউট্রিয়েন্ট যেমন ফাইটিক অ্যাসিড কমে যায়, যা শরীরের জন্য পুষ্টি শোষণ বাড়ায়।
  2. খোসা ছাড়িয়েঃ ভেজানোর পর বাদামের খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া উচিত। কারণ এতে থাকা ট্যানিনের পরিমাণ হ্রাস পায়, যা পুষ্টি শোষণে বাধা দেয়।
  3. কাঁচা বা ভাজাঃ কাঠ বাদাম কাঁচা খাওয়া যেতে পারে, তবে হালকা ভাজা কাঠ বাদামও উপাদেয়। ভাজা বাদামে অতিরিক্ত লবণ না মেশানোই ভালো।
  4. খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াঃ কাঠ বাদাম চটপটি, দই, স্মুদি, বা স্যালাডের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়। যা খাবারের স্বাদ বাড়ায় এবং পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে।
  5. মাঝে মাঝে ক্ষুধা লাগলে নাশতা হিসেবেঃ কাঠ বাদাম হালকা নাশতা হিসেবে খাওয়া স্বাস্থ্যকর, কারণ এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে এবং ক্ষুধা কমায়।

প্রতিদিন ১০-১৫টি কাঠ বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যকর। তবে অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধি বা হজমের সমস্যা হতে পারে।

সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতাঃ

সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়া শরীরের জন্য বিভিন্ন উপকার বয়ে আনতে পারে। এটি শক্তি জোগায় এবং সারাদিনের জন্য শরীরকে প্রস্তুত রাখতে সাহায্য করে। নিচে এর কয়েকটি প্রধান উপকারিতা উল্লেখ করা হলোঃ

  1. শক্তি সরবরাহঃ কাঠ বাদামে প্রচুর প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, এবং ফাইবার থাকে। যা সকালের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।
  2. ওজন নিয়ন্ত্রণঃ এটি ক্ষুধা কমায় এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।
  3. হজমে সহায়কঃ খালি পেটে কাঠ বাদাম খেলে এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  4. হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারীঃ কাঠ বাদামে থাকা মোনো এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  5. ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারীঃ এতে থাকা ভিটামিন ই ত্বককে উজ্জ্বল রাখে এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
  6. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ কাঠ বাদামে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

তবে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার সময় পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন ৫-১০টি কাঠ বাদাম যথেষ্ট। ভেজানো বাদাম খেলে এটি সহজে হজম হয় এবং শরীরের জন্য আরও উপকারী।

কাঠ বাদামের ক্ষতিকারক দিকঃ

কাঠ বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও অতিরিক্ত খেলে বা কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এটি ক্ষতিকারক হতে পারে। কাঠ বাদামে ক্যালোরি এবং ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকায় অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে, যা স্থূলতার কারণ হতে পারে। কাঠ বাদামে থাকা অক্সালেটের উচ্চমাত্রা কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে, বিশেষত যারা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য। লবণযুক্ত বা মসলা মেশানো কাঠ বাদাম অতিরিক্ত খেলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া বা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

আরো পড়ুনঃ খালি পেটে খেঁজুর খেলে আমাদের শরীরে কতটা প্রোটিন পায় সব ক্ষেত্রে জানুন?

এছাড়া, কিছু মানুষের জন্য কাঠ বাদাম অ্যালার্জির কারণ হতে পারে, যা ত্বকে চুলকানি, ফুসকুড়ি, বা শ্বাসকষ্টের মতো গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। কাঠ বাদামে থাকা ফাইটিক অ্যাসিড শরীরে আয়রন এবং জিঙ্কের শোষণে বাধা দিতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে পুষ্টির ঘাটতি ঘটায়। তাই, কাঠ বাদাম খাওয়ার সময় পরিমাণে সংযম এবং ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিদিন কয়টা করে কাঠ বাদাম খাওয়া উচিতঃ

প্রতিদিন প্রায় ৫-১০টি কাঠ বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য আদর্শ বলে মনে করা হয়। এই পরিমাণে কাঠ বাদাম খাওয়া শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ভিটামিন ই, এবং ম্যাগনেসিয়াম সরবরাহ করতে সাহায্য করে। ও কাঠ বাদাম খেলে আমাদের মস্তিক ভাল ও দ্রুত হয়।এই সীমার মধ্যে খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় এবং ক্যালোরির মাত্রা বাড়ার আশঙ্কা থাকে না।

প্রতিদিন-কয়টা-করে-কাঠ-বাদাম-খাওয়া-উচিত
 প্রতিদিন-কয়টা-করে-কাঠ-বাদাম-খাওয়া-উচিত

যারা বেশি ক্যালোরি পুড়িয়ে থাকেন, যেমন ক্রীড়াবিদরা, তারা দৈনিক ১৫-২০টি কাঠ বাদামও খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত বাদাম খেলে ক্যালোরি এবং ফ্যাটের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি বা হজমের সমস্যা হতে পারে। তাই, কাঠ বাদাম খাওয়ার সময় পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। 

কাঠ বাদাম খেলে কি মোটা হয়ঃ

কাঠ বাদাম খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী, তবে অতিরিক্ত খেলে আমাদের শরীরের ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ক্যালোরি থাকে। প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে কাঠ বাদাম খেলে শরীরের ক্যালোরি চাহিদার তুলনায় বেশি ক্যালোরি সরবরাহ হতে পারে, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তবে, কাঠ বাদামে থাকা ফাইবার এবং প্রোটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে।

আরো পড়ুনঃ সারাদিনে কতগুলো কিসমিস খেলে আমাদের শরীর ফিট ও সতেজ থাকে জেনে নিন

যা অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে। তাই, পরিমিত পরিমাণে (প্রতিদিন ৫-১০টি) কাঠ বাদাম খেলে এটি মোটা হওয়ার পরিবর্তে শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর প্রভাব ফেলে। সঠিক পদ্ধতিতে এবং সুষম ডায়েটের অংশ হিসেবে কাঠ বাদাম খেলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।

লেখকের মক্তব্যঃ

আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন আমাদের শরীরে পুষ্টির জন্য এই কাঠ বাদাম কখন খাওয়া উচিত। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে এই কাঠ বাদাম খেলে কি ওজন বাড়ে কি'না।

প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন........................www.stylishsm.com



( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )





















এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url