কাজু খেলে কি ওজন বাড়ে - খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে কি হয়? বিস্তারিত জেনে নিন?

আজকে আমরা জানবো যে আমাদের শরীরের জন্য এই কাজু খেলে কি ওজন বাড়ে নাকি শরীরের ফিটনেস আসে। ও তার তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে আমাদের শরীরে খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে কি হয়। আসুন জানি? 

ভূমিকাঃ

আমাদের শরীরে শক্তি ও সতেজ রাখার জন্য আমরা অনেক কিছু খেয়ে থাকি। যেমনঃ বাদাম, মধু, ফলমূল জাতীয় খাবার। কিছু এই খাবারের মধ্য বিভিন্ন ধরেনর প্রকারভেদ থাকে। তাই সব কিছু আগে জেনে শুনে আমাদেরকে খেতে হবে।

কাজু-খেলে-কি-ওজন-বাড়ে
কাজু-খেলে-কি-ওজন-বাড়ে        

তাই আসুন জেনে রাখি যে ফলমূলের মধ্য এই প্রোটিনতম কাজু খেলে কি ওজন বাড়ে আমাদের শরীরে। ও এই কাজু বাদামে কত শক্তি ও প্রোটিন থাকে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে কি হয়। সব কিছু জানুন নিম্নে বিস্তারিত............।

কাজু খেলে কি ওজন বাড়েঃ

কাজু খাওয়ার ফলে ওজন বাড়তে পারে কিছু মানুষের। কারণ এতে ক্যালোরি এবং ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম কাজুতে প্রায় ৫৫০-৫৭০ ক্যালোরি,ফসফরাস,জিঙ্ক এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে। যদিও এই ফ্যাটগুলি হৃদপিণ্ডের জন্য উপকারী হতে পারে যদি আপনি নিয়ম মেনে খেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ খেজুর খেলে আমাদের শরীরে কি কি উপকার হয় ও কতটা পুষ্টি পায় জেনে রাখুন?

তবে, আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে কাজু খাওয়ার সময় বেশী পরিমাণে খাবেন না। কারণ বেশি কাজু খেলে আমাদের শরীরের চর্বি বেড়ে যেতে পারে। যাতে করে আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যায়। এ ছাড়া কাজুতে প্রোটিন, ফাইবার এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল থাকায় এটি শরীরের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সহায়ক।

খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে কি হয়ঃ

খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে শরীরের জন্য উপকার আনতে পারে। কাজুতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে, যা খালি পেটে খেলে শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায় এবং পুষ্টি সরবরাহ করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুনঃ পাঁকা কলা খেলে আমাদের শরীরে কতটা পুষ্টি ও ভিটামিন পেয়ে থাকে জেনে রাখুন?

তবে, খালি পেটে কাজু খেলে খেয়াল রাখতে হবে যে বেশি পরিমাণে খাবেন না। কারণ বেশি খেলে পেটের চর্বি বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া কাজুতে থাকে অ্যানাকার্ডিক এসিড যা মস্তিকের চাপ ও মাথা ব্যাথা ভাল করে থাকে।

কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়মঃ

কাজু বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানলে এর পুষ্টিগুণের সর্বোচ্চ উপকারিতা পাওয়া যায়। এখানে কিছু নির্দেশিকা রয়েছে যেটি আপনাকে মেনে খাওয়া উচিত তাহলোঃ

  1. প্রতিদিন ১০-১৫টি কাজু বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যর জন্য ভাল।
  2.  কাজু ভিজিয়ে খেলে তা সহজে হজম হয় এবং এর অ্যান্টি-নিউট্রিয়েন্টগুলো কমে গিয়ে শরীরের জন্য  উপকার বয়ে আনে।
  3. কাজু খালি পেটে খেলে কিছু মানুষের পেটে গ্যাস্টিকের সমস্যা হতে পারে। তাই অন্য কোনো খাবারের সাথে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
  4.  কাজুতে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বেশি থাকে তাই সকাল বা দুপুরের দিকে খাওয়া ভালো। যা দিনভর শক্তি যোগাতে সাহায্য করে শরীরে।
  5. কাজু খেলে হৃদরোগ ভাল করে।
  6. কাজু খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  7. কাজু খেলে অতিরিক্ত তেল বা চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলবেন। 

এভাবে কাজু বাদাম খেলে এর পুষ্টি ও স্বাস্থ্য উপকারিতা সর্বোচ্চভাবে লাভ করা সম্ভব।

কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতাঃ

কাজু বাদাম খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে, যা শরীরকে বিভিন্নভাবে শক্তি যোগান দেয়। কাজু বাদামে থাকা ভিটামিন, মিনারিল, জিঙ্ক ইত্যাদি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। যা আমাদের শরীরের জন্য ভাল। এ ছাড়া কাজুতে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে, যা হাড়ের গঠন ও মজবুত করতে সহায়ক। 

কাজু-বাদাম-খাওয়ার-উপকারিতা
 কাজু-বাদাম-খাওয়ার-উপকারিতা

কাজু খেলে আমাদের পেটের ক্ষুধা কমায়। কারণ কাজুতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই  থাকে। যা আমাদের শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

কাজু বাদামের ক্ষতিকারক দিকঃ

কাজু বাদাম খেলে কি ওজন বাড়ে কি'না সেটি আমরা উপরের তথ্য থেকে বুঝতে পেরেছি। সর্বপরি কথা যে, যদিও কাজু বাদাম খাওয়া অনেক উপকারী, তবুও কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে যা বিবেচনা করা জরুরি তাহলোঃ  

  1. ক্যালোরি বেশিঃ কাজু বাদামে ক্যালোরি এবং ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। অতিরিক্ত খেলে এটি ওজন বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  2. অ্যালার্জিঃ অনেক মানুষের জন্য কাজু বাদাম খেলে অ্যালার্জির হতে পারে। যা ত্বকের চুলকানি, ফুসকুড়ি, সৃষ্টি করতে পারে।
  3. অক্সালেটের উপস্থিতিঃ কাজুতে অক্সালেটের মাত্রা বেশি থাকে, যেটি গ্রহণ করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  4. সোডিয়ামের মাত্রাঃ লবণযুক্ত বা ভাজা কাজু বেশি খেলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়তে পারে। যা আমাদের শরীরে রক্তচাপ বাড়িয়ে তোলে।
  5. কাজু বাদাম বেশী খেলে এটি আমাদের ফুসফুসের সমস্যা কারণ হতে পারে।

এই কারণগুলো বিবেচনা করে কাজু বাদাম পরিমিত পরিমাণে এবং নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

কাজু বাদাম কি কাঁচা খাওয়া যায়ঃ

কাজু বাদাম কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় এবং এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কাঁচা কাজুতে প্রোটিন, এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যা শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে। তবে, কাঁচা কাজু খাওয়ার সময় কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত। কাঁচা কাজুতে কিছু অক্সালেট এবং অ্যান্টি-নিউট্রিয়েন্ট থাকতে পারে। যা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে কিডনিতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

অতএব, পরিমিত পরিমাণে কাঁচা কাজু খাওয়া নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। যাদের কাজুতে অ্যালার্জি আছে, তাদের কাঁচা কাজু খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কাজু খেলে কি কোলেস্টেরল বাড়েঃ

কাজু খাওয়ার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা সাধারণত বাড়ে না। বরং এটি স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। কাজুতে প্রধানত মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে সহায়তা করে। তাই, নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে কাজু খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ শরীরের শক্তি যোগাতে ও শরীর ফিট রাখার জন্য কাঁচা ছোলা খাওয়ার গুরুত্ব জানুন?

তবে, অতিরিক্ত কাজু খেলে ক্যালোরি মাত্রা বেড়ে যাতে পারে যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই,  কাজু খাওয়ার সময় পরিমাণ মতো খাবেন।

গর্ভাবস্থায় কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতাঃ

গর্ভাবস্থায় কাজু বাদাম খাওয়া মা এবং শিশুর উভয়ের জন্যই উপকারী। কাজুতে প্রচুর প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি, আয়রন, এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা মায়ের শক্তি যোগাতে এবং গর্ভের শিশুর সুস্থ বিকাশ করতে সাহায্য করে। কাজুর মধ্যে থাকা আয়রন রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

আরো পড়ুনঃ মধু ও কালিজিরা একসাথে খেলে আমাদের শরীরে কতটা পুষ্টি ও শক্তি পায় জেনে রাখুন?

এছাড়া, এর স্বাস্থ্যকর ফ্যাটগুলো মায়ের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে হেল্প করে। কাজুতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। তবে, গর্ভাবস্থায় কাজু খাওয়ার আগে কাজুর সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।

বাচ্চাদের জন্য কাজু বাদামঃ

বাচ্চাদের জন্য কাজু বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর হতে পারে। কারণ কাজুতে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ম্যাগনেসিয়াম, এবং আয়রন থাকে, যা শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কাজুর মধ্যে থাকা প্রোটিন শিশুর শরীরের কোষের গঠন ও মাংসপেশির উন্নয়নে সাহায্য করে, আর স্বাস্থ্যকর ফ্যাট মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়।

বাচ্চাদের-জন্য-কাজু-বাদাম
বাচ্চাদের-জন্য-কাজু-বাদাম    

কিন্তু আপনি প্রোটিনের জন্য বাচ্চাকে কাজু বাদাম খাওয়ান তাহলে একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন যে প্রোটিন যুক্ত খাবার সব গুলো হয় না। কাজুতে ভিটামিন থাকে কিন্তু সেটি আর সবাই খাওয়াতে পারে না। কারণ কাজুর দাম অনেক বেশি পড়ে বাজারে। তাই নিয়ম মেনে বাচ্চাকে কাজু বাদাম খাওয়াবেন।

লেখকের মক্তব্যঃ

আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে আমাদের শরীরে জন্য এই কাজু খেলে কি ওজন বাড়ে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে এই খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে কি হয় আমদের শরীরে। 

প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন........................www.stylishsm.com



( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )















এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url