দুবাই যাওয়ার নিয়ম কি - দুবাই যাওয়ার খরচ কত টাকা? বিস্তারিত জেনে নিন?
আজকে আমরা জানবো যে বাইরের দেশে যেতে হলে এই দুবাই যাওয়ার নিয়ম কি ও কীভাবে যাতে হয়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে এই দুবাই যাওয়ার খরচ কত টাকা লাগে বাংলাদেশ থেকে। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
বাংলাদেশের প্রায় সব মানুষেরা বাইরের দেশে যাই টাকা ইনকাম করতে। যাতে করে তারা তাদের ফ্যামেলির জন্য ও নিজের জন্য কিছু করতে পারে এই উদেশ্য তার বাইরের দেশে গিয়ে টাকা ইনকাম করে।
দুবাই-যাওয়ার-নিয়ম-কি |
তাই আসুন জেনে রাখি যে বাইরের দেশে যেতে হলে এই দুবাই যাওয়ার নিয়ম কি গুলো কি-কি হয়ে থাকে। ও তার সাথে সাথে এটাই জানুন যে দুবাই যাওয়ার খরচ কত টাকা হয় বাংলাদেশির জন্য। নিম্নে বিস্তারিত...।
দুবাই যাওয়ার নিয়ম কিঃ
দুবাই যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু নিয়ম এবং প্রক্রিয়া রয়েছে যা অনুসরণ করতে হবে। প্রথমত, বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে, যা কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়াদসহ। ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা গুরুত্বপূর্ণ, যা অনলাইনে বা দুবাইয়ের দূতাবাসের মাধ্যমে করা যেতে পারে। দুবাই সাধারণত ট্যুরিস্ট ভিসা, কাজের ভিসা, বা ব্যবসায়িক ভিসা প্রদান করে, যার জন্য বিভিন্ন কাগজপত্র প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ বিদেশ যাওয়ার জন্য আপনাকে কি কি পদক্ষেপ মেনে চলতে হবে তার কৌশল জানুন?
ভিসা পাওয়ার জন্য সাধারণত ফ্লাইটের টিকিটের কপি, হোটেল বুকিং কনফার্মেশন, এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা আর্থিক সক্ষমতা কাগজের প্রমাণ জমা দিতে হয়। কাজের ভিসার জন্য নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তা থেকে ওয়ার্ক পারমিট এবং চুক্তিপত্র প্রয়োজন হয়। যা আপনার স্বাক্ষর দ্বারা নিয়োজিত।
দুবাই যাওয়ার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার (যেমন মেডিকেল টেস্ট) রিপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে, বিশেষত যারা কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন তাদের জন্য। বিমানবন্দরে নিরাপত্তা চেকিং এবং ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া মেনে চলা জরুরি। যাত্রাপথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে রাখা এবং ভ্রমণ পরিকল্পনার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
দুবাই যাওয়ার খরচ কত টাকাঃ
দুবাই যাওয়ার খরচ বিভিন্ন বিষয়ে নির্ভর করে, যেমন ভিসার ধরন, বিমান ভাড়া, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ। সাধারণত, দুবাই ভিসা'র জন্য খরচ ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, যা নির্ভর করে এজেন্সি ও ভিসার প্রকারের ওপর। বিমান ভাড়া গন্তব্য ও সময়ের ওপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত, ঢাকা থেকে দুবাই পর্যন্ত একমুখী বিমান টিকিটের খরচ ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা বা তার বেশি হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ প্রবাসী জীবন কাহিনী কতটা কষ্টকর হয়ে থাকে কত কিছু মেনে চলতে হয় জেনে নিন?
যদি কাজের জন্য বা কর্মসংস্থান ভিসা নিয়ে দুবাই যান, তবে অতিরিক্ত চিকিৎসা পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংক্রান্ত খরচও যোগ হয়। প্রতিদিনের থাকা ও খাবারের খরচও ভিন্ন হতে পারে, যা সাশ্রয়ী হোটেল বা উন্নত মানের হোটেলের ভিত্তিতে পরিবর্তিত হয়। সব মিলিয়ে, দুবাই যাওয়ার মোট খরচ প্রায় ৭০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে এটি ভিসার ধরন ও ব্যক্তিগত চাহিদা অনুসারে পরিবর্তিত হয়।
দুবাই টুরিস্ট ভিসা কত টাকাঃ
দুবাই টুরিস্ট ভিসার খরচ বিভিন্ন বিষয়ে নির্ভর করে যেমন ভিসার মেয়াদ এবং এজেন্সির ফি এর উপর। সাধারণত, ১৪ দিনের টুরিস্ট ভিসা'র জন্য খরচ প্রায় ৮,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ৩০ দিনের ভিসা'র ক্ষেত্রে খরচ কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। যা প্রায় ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ পোলান্ড যাওয়ার জন্য আপনার কি কি কাগজ প্রয়োজন হবে ও কীভাবে যাবেন জানুন?
ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সরাসরি এজেন্সির মাধ্যমে বা অনলাইনে সম্পন্ন করা যেতে পারে এবং এজেন্সি অনুযায়ী ফি ভিন্ন হতে পারে। নির্ভুল তথ্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ভিসা প্রোভাইডার বা দুবাইয়ের কনস্যুলেটের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। যাতে পরিবর্তে আপনার কোনো সমস্যা না হয়।
দুবাইয়ে কোন কাজের বেতন কতঃ
দুবাইয়ে কাজের বেতন বিভিন্ন পেশা এবং কাজের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। সাধারণত, কিছু সাধারণ পেশার জন্য গড় বেতন নিম্নরূপ হয়ে থাকে তাহলোঃ
- নির্মাণ শ্রমিকঃ মাসিক বেতন প্রায় ৮০০ থেকে ১,২০০ দিরহাম (প্রায় ২৪,০০০ থেকে ৩৬,০০০ টাকা), কাজের অভিজ্ঞতা এবং কোম্পানি অনুযায়ী এই বেতন ভিন্ন হতে পারে।
- হোটেল বা হসপিটালিটি সেক্টরঃ ওয়েটার, ক্লিনার বা হোটেল স্টাফের বেতন সাধারণত ১,২০০ থেকে ২,০০০ দিরহাম (প্রায় ৩৬,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকা)। উচ্চমানের হোটেলে এই বেতন আরও বেশি হতে পারে।
- ড্রাইভারঃ ব্যক্তিগত বা কোম্পানির ড্রাইভারদের বেতন ২,০০০ থেকে ৩,৫০০ দিরহাম (প্রায় ৬০,০০০ থেকে ১,০৫,০০০ টাকা), ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে।
- অফিস স্টাফ বা অ্যাসিস্ট্যান্টঃ সাধারণ অফিস সহকারী বা প্রশাসনিক পদের জন্য বেতন প্রায় ২,৫০০ থেকে ৪,৫০০ দিরহাম (প্রায় ৭৫,০০০ থেকে ১,৩৫,০০০ টাকা)।
- ইঞ্জিনিয়ার ও প্রযুক্তিবিদঃ এই ধরনের পেশায় বেতন সাধারণত ৫,০০০ দিরহাম বা তার বেশি হতে পারে (প্রায় ১,৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু), যা অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার ওপর নির্ভর করে আরও বৃদ্ধি পায়।
দুবাইয়ে চাকরির বাজারে অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, এবং কাজের ধরন অনুযায়ী বেতন বিভিন্ন হতে পারে।
দুবাই যেতে কি কি কাগজ লাগেঃ
আমরা আগে জেনেছি যে দুবাই শহর যাওয়ার নিয়ম কি। এবার জানবো যে দুবাই যেতে কি-কি কাগজপাতি লাগে। এই দুবাই যেতে হলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রয়োজন। নিচে প্রধান কাগজপত্রের তালিকা উল্লেখ করা হলোঃ
- পাসপোর্টঃ বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে যার মেয়াদ অন্তত ছয় মাস থাকতে হবে।
- ভিসাঃ নির্দিষ্ট ধরনের ভিসা (যেমন টুরিস্ট, কর্মসংস্থান বা বিজনেস ভিসা) প্রয়োজন। এটি অনলাইনে বা এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করা যায়।
- বিমান টিকেটঃ রিটার্ন টিকিট সহ যাত্রার কপি সঙ্গে রাখতে হবে।
দুবাই-যেতে-কি-কি-কাগজ-লাগে |
- ব্যাংক স্টেটমেন্টঃ আর্থিক সক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য সাম্প্রতিক ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টঃ কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষত কর্মসংস্থানের জন্য মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট প্রয়োজন।
- হোটেল বুকিং বা আবাসনের প্রমাণঃ যেখানে থাকবেন তার বুকিং কনফার্মেশন।
- আইডি কার্ড বা অন্যান্য সনদঃ যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র।
এছাড়া, ভ্রমণকালে বিমা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস যেমন জরুরি যোগাযোগের তথ্য সঙ্গে রাখা উচিত।
দুবাই যেতে কত বছর বয়স লাগেঃ
দুবাই বা সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার জন্য সাধারণত ভ্রমণকারীদের ন্যূনতম ১৮+ বছর বয়স হতে হবে। তবে যদি কেউ পরিবারের সদস্য বা অভিভাবকের সাথে ভ্রমণ করেন। তাহলে কম বয়সের ব্যক্তিরাও যেতে পারেন। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে, সাধারণত চাকরির জন্য আবেদন করার জন্য প্রার্থীদের ন্যূনতম ২১ বছর বা তার বেশি হতে হবে, তবে নির্দিষ্ট নিয়ম ও নিয়োগকর্তার চাহিদা অনুযায়ী বয়সের শর্ত পরিবর্তিত হতে পারে।
বয়স সংক্রান্ত নিয়মগুলো নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দেশের ভিসা অফিস বা দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। যাতে করে আপনি খুব সহজে এই দুবাইয়ের ভিসা পেতে পারেন।
লেখকের মক্তব্যঃ
আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে বাইরের দেশে যেতে হলে এই দুবাই যাওয়ার নিয়ম কি গুলো কি কি হয়ে থাকে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে এই দুবাই যাওয়ার খরচ কত টাকা হয়।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.....................www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url