স্টক মার্কেট এনালাইসিস কি - টেকনিক্যাল এনালাইসিস মানে কি? বিস্তারিত যেনে নিন?
আজকে আমরা জানবো যে অনলাইন বা অফলাইন শেয়ার বাজারে এই স্টক মার্কেট এনালাইসিস কি ও কীভাবে কাজ করে। তার সাথে সাথে এটাও জানুন যে এই শেয়ার বাজারে স্টক মার্কেটের টেকনিক্যাল এনালাইসিস মানে কি। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
অনলাইন হোক কিংবা অফলাইন শেয়ার বাজার থেকে টাকা ইনকাম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই মার্কেট এনালাইসিস করা জানতে হবে ও এটি কীভাবে কাজ করে সেটি শিখতে হবে।
স্টক-মার্কেট-এনালাইসিস-কি |
তাই আসুন জেনে রাখি যে এই স্টক বাজারের দুনিয়ায় স্টক মার্কেট এনালাইসিস কি ও কীভাবে কাজ করে থাকে। তার সাথে সাথে এটাই জেনে নিন যে টেকনিক্যাল এনালাইসিস মানে কি ও এটি আপনি কীভাবে আপনার কাজে ব্যবহার করত পারবেন। নিম্নে বিস্তারিত......।
স্টক মার্কেট এনালাইসিস কিঃ
স্টক মার্কেট এনালাইসিস হলো স্টক মার্কেটের বিভিন্ন শেয়ার ও বাজারের প্রবণতা বিশ্লেষণ করার একটি পদ্ধতি, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে থাকে। এই বিশ্লেষণ সাধারণত দুইভাবে করা হয়। যেমনঃ ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এবং টেকনিক্যাল এনালাইসিস। ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, মুনাফা, আয় এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করা হয়।
আরো পড়ুনঃ স্টক মার্কেট কীভাবে কাজ করে অনলাইনে যেটি দ্বারা টাকা ইনকাম করা যায় জানুন?
অন্যদিকে, টেকনিক্যাল এনালাইসিসে স্টকের দাম ও লেনদেনের পরিসংখ্যান ভিত্তিক ডেটা দেখে বাজারের প্রবণতা এবং শেয়ারের ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়। স্টক মার্কেট এনালাইসিস বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি কমাতে, বাজারের অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে এবং লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজে পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
টেকনিক্যাল এনালাইসিস মানে কিঃ
টেকনিক্যাল এনালাইসিস হলো স্টক মার্কেট বা বিভিন্ন ফিনান্সিয়াল মার্কেটের মূল্য ও লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতে শেয়ারের দাম কেমন হতে পারে তা অনুমান করার একটি পদ্ধতি। এই বিশ্লেষণ মূলত মার্কেটের গতিবিধি, স্টকের মূল্য এবং লেনদেনের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে করা হয়। টেকনিক্যাল এনালাইসিসে বিভিন্ন চার্ট, গ্রাফ, এবং ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা হয়। যা থেকে বাজারের প্রবণতা, মূল্য-প্রবণতা এবং বিনিয়োগকারীদের আচরণ বোঝা যায়।
আরো পড়ুনঃ কীভাবে স্টক মার্কেট কাজে লাগিয়ে ট্রেডিং শুরু করবেন ও টাকা আয় করবেন জানুন?
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা জানতে পারেন যে শেয়ারের মূল্য বাড়বে নাকি কমবে, এবং কখন শেয়ার কেনা বা বিক্রি করা উচিত। এই পদ্ধতিতে অতীতের মূল্য এবং লেনদেনের ডেটা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া হয়। যা বিশেষত শেয়ার কেনা-বেচার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক।
শেয়ার বাজার বিশ্লেষণ কীভাবে করতে হয়ঃ
- ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসঃ
- কোম্পানির আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণ করুনঃ কোম্পানির বার্ষিক আয়, মুনাফা, এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নের সুযোগ যাচাই করুন ভালোভাবে।
- PE Ratio, EPS, এবং ROE বিশ্লেষণ করুনঃ এই রেশিওগুলো কোম্পানির বাজারমূল্য, আয় এবং বিনিয়োগকারীদের আয়ের তথ্য প্রকাশ করে। তাই এসব সম্পর্কে জ্ঞান নিন।
- শিল্প এবং বাজার বিশ্লেষণঃ কোম্পানি যে সেক্টরে কাজ করছে তার বর্তমান অবস্থা ও প্রবণতা, প্রতিযোগিতা, এবং অন্যান্য কোম্পানির অবস্থান বিশ্লেষণ করা উচিত।
- টেকনিক্যাল এনালাইসিসঃ
- মূল্য এবং লেনদেনের চার্ট বিশ্লেষণ করুনঃ গত ৫০ বা ২০০ দিনের মূল্য এবং লেনদেনের চার্ট বা লিস্ট বিশ্লেষণ করলে ভবিষ্যৎ প্রবণতা বোঝা যায খুব সহজে।
- ইন্ডিকেটর এবং অসিলেটর ব্যবহার করুনঃ Moving Average, RSI (Relative Strength Index), এবং MACD (Moving Average Convergence Divergence) মতো ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে বাজারের গতি ও ক্রেতা-বিক্রেতার অনুভূতি বোঝা যায়।
- প্রাইস প্যাটার্ন এবং সাপোর্ট-রেজিস্ট্যান্স লেভেল চিহ্নিত করুনঃ দাম কোথায় বাড়ছে বা কমছে তা নির্ধারণের জন্য সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল বিশ্লেষণ করুন।
- আরও কিছু সহায়ক ধাপঃ
- বাজারের সাম্প্রতিক খবর ও প্রবণতা পড়ুনঃ বাজারের সাম্প্রতিক খবর, অর্থনৈতিক অবস্থা, এবং বৈশ্বিক প্রবণতা জানা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এসবের প্রভাব বাজারের ওপর পড়ে। তাই সব সময় খোঁজ খবর রাখবেন।
- বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরি করুনঃ আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য এবং ঝুঁকি সহনশীলতা অনুযায়ী একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করুন। যাতে আপনি বাজার সমন্ধে ধারণা রাখতে পারেন।
- পরীক্ষামূলক ট্রেডিং করুনঃ কিছুটা সময় সিমুলেটেড বা পরীক্ষামূলক ট্রেডিং করতে পারেন। যাতে বাজারের গতি সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার হয়।
এভাবে সঠিক বিশ্লেষণ করে বাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা নেওয়া সম্ভব, যা আপনাকে সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে।
শেয়ার বাজার A to Z জানুনঃ
শেয়ার বাজার সম্পর্কে A to Z জ্ঞান অর্জন করতে চাইলে প্রথমে শেয়ার বাজারের মূল ধারণা ও কার্যপ্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে হবে। নিচে শেয়ার বাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হলোঃ
১। শেয়ার বাজারের সংজ্ঞাঃ
- শেয়ার বাজার এমন একটি বাজার যেখানে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার বা স্টক কেনাবেচা করা হয়। এতে বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন পাবলিক কোম্পানির আংশিক মালিকানা ক্রয় করতে পারেন।
২। প্রাথমিক বাজার (Primary Market) এবং দ্বিতীয়িক বাজার (Secondary Market)
- প্রাথমিক বাজারঃ কোম্পানির প্রথম শেয়ার ইস্যু করা হয় বাজারে (যেমন আইপিও)।
- দ্বিতীয়িক বাজারঃ যখন শেয়ারগুলি প্রাথমিক বাজারে ইস্যু করার পর দ্বিতীয়বার ক্রয়-বিক্রয় হয়।
৩। একাউন্ট খোলা (বিও বা ডিম্যাট একাউন্ট)
- শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে প্রথমে ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে একটি বিও (Beneficiary Owner) বা ডিম্যাট একাউন্ট খোলা প্রয়োজন।
৪। বাজার বিশ্লেষণ পদ্ধতিঃ
- ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসঃ কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, আয়, এবং প্রতিযোগিতার ধরন বিশ্লেষণ করা হয়।
- টেকনিক্যাল এনালাইসিসঃ শেয়ার মূল্যের গতিপ্রকৃতি এবং লেনদেনের ভলিউম বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ প্রবণতা নির্ধারণ।
৫। ইন্ডিকেটর ও রেশিওঃ
- PE Ratio (Price-to-Earnings Ratio) শেয়ার মূল্য ও আয় পরিমাপের অনুপাত।
- EPS (Earnings Per Share) কোম্পানির মোট আয়ের অংশ হিসেবে প্রতি শেয়ারের আয়।
- Dividend Yield ডিভিডেন্ডের হারকে প্রতি শেয়ারের মূল্যের সাথে তুলনা।
৬। ট্রেডিং পদ্ধতিঃ
- ইন্ট্রা-ডে ট্রেডিংঃ একই দিনের মধ্যে শেয়ার কেনা-বেচা করা।
- লং-টার্ম ট্রেডিংঃ দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ যেখানে কয়েক মাস বা বছরের জন্য শেয়ার ধরে রাখা হয়।
৭। বাজারের চালিকা শক্তি চাহিদা ও সরবরাহঃ
- বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের উপর ভিত্তি করে শেয়ারের দাম পরিবর্তিত হয়। অর্থনৈতিক অবস্থা, কোম্পানির কর্মক্ষমতা এবং বাজারের মুড এসবকে প্রভাবিত করে।
৮। বিনিয়োগের ঝুঁকিঃ
- শেয়ারের মূল্য হ্রাসের কারণে বিনিয়োগকারীরা অর্থ হারাতে পারেন। ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন সেক্টরের শেয়ারে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে পোর্টফোলিও বৈচিত্র্য আনা যেতে পারে।
৯। স্টপ লস এবং টেক প্রফিটঃ
- ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্টপ লস (Stop Loss) এবং টেক প্রফিট (Take Profit) ব্যবহার করা হয়, যা নির্দিষ্ট মূল্যে শেয়ার বিক্রি করে লাভ বা ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ করে।
১০। স্টক মার্কেট কৌশলঃ
- ডাইভারসিফিকেশনঃ ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করুন। যাতে একদিকে লস হলে অন্য দিক দিয়ে আপনি আপনার টাকা তুলতে পারেন।
- বাজার বিশ্লেষণ ও ধারাবাহিক ট্র্যাকিংঃ বাজারের অবস্থা, ট্রেন্ড এবং খবরে নজর রাখুন।
১১। নিয়মিত শেয়ার বাজার বিশ্লেষণ ও গবেষণাঃ
- বাজারে বিনিয়োগের জন্য নিয়মিত বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার বিশ্লেষণ করা উচিত। যাতে সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সঠিক জ্ঞান ও স্ট্র্যাটেজি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, বাজার বিশ্লেষণ এবং সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে লাভবান হওয়া সম্ভব।
অনলাইন শেয়ার মার্কেটঃ
অনলাইন শেয়ার মার্কেট হলো এমন একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিনিয়োগকারীরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে শেয়ার কেনা-বেচা করতে পারেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই অনলাইন শেয়ার বাজারের সুবিধা রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদেরকে সময় এবং স্থান থেকে মুক্ত করে শেয়ার লেনদেন করার সুযোগ দেয়। অনলাইন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা বাজার বিশ্লেষণ করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ কিওয়ার্ড রিসার্চ করা শিখে কীভাবে আপনি আপনার কাজ সহজ করে তুলবেন জানুন?
যা বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম পর্যালোচনা করতে পারেন, এবং নিজের পোর্টফোলিও পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। বাংলাদেশে যেমন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE) এর অনুমোদিত ব্রোকারেজ হাউজের অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে অনলাইনে শেয়ার কেনা-বেচা করা যায়। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা নির্দিষ্ট ব্রোকারেজ ফি প্রদানের বিনিময়ে তাদের ট্রেড পরিচালনা করতে পারেন।
অনলাইন-শেয়ার-মার্কেট |
অনলাইন শেয়ার মার্কেট ব্যবহার করতে হলে বিনিয়োগকারীদের একটি বিও (Beneficiary Owner) একাউন্ট খুলতে হয় এবং তারপর ব্রোকারেজ হাউজের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শেয়ার কেনা-বেচা শুরু করতে পারেন। অনলাইন ট্রেডিং অ্যাপ্লিকেশন যেমন DSE-Mobile বা CSE-Mobile ব্যবহার করে বাজারের গতিবিধি সরাসরি অনুসরণ করা যায়।
এই প্রক্রিয়া বিনিয়োগকারীদের জন্য সুবিধাজনক হলেও, ঝুঁকিও রয়েছে, কারণ বাজার মূল্য দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। সঠিক গবেষণা, টেকনিক্যাল এবং ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করে বিনিয়োগ করা গেলে অনলাইন শেয়ার মার্কেট থেকে আপনি লাভবান হতে পারবেন।
ফরেক্স টেকনিক্যাল এনলাইসিসঃ
ফরেক্স টেকনিক্যাল এনালাইসিস হলো একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে ফরেক্স মার্কেটের বিভিন্ন মুদ্রা জোড়ার মূল্য এবং লেনদেনের ইতিহাস বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ মূল্য প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া হয়। এই বিশ্লেষণে প্রধানত চার্ট, গ্রাফ এবং ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা হয়, যা মুদ্রার মূল্যের ওঠানামার বিভিন্ন প্যাটার্ন এবং প্রবণতা বুঝতে সহায়ক। ফরেক্স টেকনিক্যাল এনালাইসিসে সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট ইন্ডিকেটর ও টুলস ব্যবহৃত হয়। যেমনঃ
- মুভিং এভারেজ (MA): মুভিং এভারেজ একটি সাধারণ টুল যা মুদ্রার মূল্য প্রবণতার গড় হিসাব করে। এটি মূল্য প্রবণতা এবং সমর্থন/প্রতিরোধ লেভেল চিহ্নিত করতে সহায়ক।
- রিলেটিভ স্ট্রেংথ ইনডেক্স (RSI): RSI একটি অসিলেটর ইন্ডিকেটর যা অতিরিক্ত ক্রয় ও অতিরিক্ত বিক্রির পরিস্থিতি চিহ্নিত করে। এটি ৩০ এর নিচে থাকলে মুদ্রাটি অতিরিক্ত বিক্রিত এবং ৭০ এর ওপরে থাকলে অতিরিক্ত ক্রয় হয়েছে বলে ধরা হয়।
- মুভিং এভারেজ কনভারজেন্স ডাইভারজেন্স (MACD): MACD ইন্ডিকেটর দুটি মুভিং এভারেজের মাধ্যমে বাজারের গতি এবং প্রবণতা বিশ্লেষণ করতে সহায়ক। MACD এবং সিগন্যাল লাইনের ক্রসিংটি বাজারের পরিবর্তন নির্দেশ করে।
- সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলঃ ফরেক্স মার্কেটে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাপোর্ট হলো সেই স্তর যেখানে মূল্য সাধারণত কমতে থামে এবং রেজিস্ট্যান্স হলো সেই স্তর যেখানে মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে।
- ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্টঃ ফিবোনাচি রিট্রেসমেন্ট হল এমন একটি টুল যা মার্কেটের প্রত্যাবর্তনের সময় সঠিক লেভেল নির্ধারণে সহায়ক। এটি মার্কেটের প্রবণতা এবং প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা বোঝাতে সহায়ক।
ফরেক্স টেকনিক্যাল এনালাইসিসে এই ইন্ডিকেটরগুলো ছাড়াও আরও কিছু টুলস এবং কৌশল ব্যবহার করা হয়। তবে সফলতার জন্য সঠিক জ্ঞান, অনুশীলন এবং বাজারের উপর নিয়মিত নজর রাখা জরুরি।
শেয়ার বাজারে কোন বিশ্লেষণ ভালোঃ
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোন বিশ্লেষণ ভালো তা নির্ভর করে বিনিয়োগকারীর লক্ষ্য, অভিজ্ঞতা এবং বিনিয়োগের সময়কাল উপর। সাধারণত ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এবং টেকনিক্যাল এনালাইসিস - এই দুই ধরনের বিশ্লেষণ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
- ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিসঃ দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য এটি ভালো, কারণ এটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা এবং মুনাফার ধরন পর্যালোচনা করে। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির মূল্যায়ন, আয়, ঋণ এবং পিই রেশিও এর মাধ্যমে কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা বোঝার চেষ্টা করেন। এটি বিশেষত প্রাইমারি ইনভেস্টরদের জন্য কার্যকরী, যারা শেয়ার দীর্ঘ সময় ধরে রাখতে চান।
- টেকনিক্যাল এনালাইসিসঃ স্বল্পমেয়াদী এবং মধ্যমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য টেকনিক্যাল এনালাইসিস ভালো। এটি শেয়ারের অতীত মূল্যের গতিবিধি এবং লেনদেনের ভলিউম পর্যবেক্ষণ করে। মুভিং এভারেজ, RSI, MACD এর মতো ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে স্টকের প্রাইস প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করা হয়। যা ট্রেডারদের জন্য বাজারের প্রবণতা এবং মূল্য অনুমানের একটি শক্তিশালী পদ্ধতি।
- কম্বিনেশন এনালাইসিস (Combination of Both): কিছু বিনিয়োগকারী উভয় বিশ্লেষণ একসঙ্গে ব্যবহার করেন, যা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস দীর্ঘমেয়াদী প্রবণতা নির্দেশ করতে সহায়ক, যেখানে টেকনিক্যাল এনালাইসিস বাজারের স্বল্পমেয়াদী গতিবিধি বুঝতে সাহায্য করে।
সংক্ষেপে, যারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে আগ্রহী, তাদের জন্য ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস ভালো, আর স্বল্পমেয়াদী ট্রেডিংয়ের জন্য টেকনিক্যাল এনালাইসিস বেশি কার্যকর। আসা করি বুঝতে পেরেছেন।
লেখকের মক্তব্যঃ
আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে অনলাইনের এই দুনিয়ায় স্টক মার্কেট এনালাইসিস কি ও কীভাবে কাজ করে। তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে টেকনিক্যাল এনালাইসিস মানে কি ও এর ব্যবহার কি।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.....................www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url