শীতকালে ঠোঁটের যত্ন - শীতকালে ঠোঁট স্বস্থ্য রাখার টিপস? বিস্তারিত জেনে নিন?
আজকে আমরা জানবো যে শীতকালে ঠোঁটের যত্ন কিভাবে আমরা ঘরে বসে সহজ উপায়ে নিতে পারবো।ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে এই শীতকালে ঠোঁট স্বস্থ্য রাখার টিপস গুলো কি কি। আসুন জানি?
ভূমিকাঃ
আমরা অনেক সময় দেখে থাকি যে এই শীতকাল আসলেই আমাদের সুন্দর ঠোঁটি ফাটতে শুরু করে দেয়। এর কারণ আমরা সঠিক ভাবে নিজের ঠোঁটের যত্ন নিতে পারি না।
শীতকালে-ঠোঁটের-যত্ন |
তাই আসুন আজকে আমরা যেনে নি যে শীতকালে ঠোঁটের যত্ন কিভাবে নিতে হয় তার ব্যাসিক কাজ গুলো ও তার সাথে তার সাথে শীতকালে ঠোঁট স্বস্থ্য রাখার টিপস গুলো জেনে নিজের ঠোঁটের যত্ন কিভাবে রাখবো। নিম্নে সবকিছু বিস্তারিত.........।
শীতকালে ঠোঁটের যত্নঃ
শীতকালে ঠোঁট শুষ্ক ও ফাটা একটি সাধারণ সমস্যা, যা ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ত্বকের আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় ঘটে থাকে। এ সময় ঠোঁটের যত্ন নিতে কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।তার জন্য নিয়মিত লিপ বাম ব্যবহার করা উচিত, বিশেষ করে যেগুলোতে ময়েশ্চারাইজিং উপাদান থাকে। যেমনঃ শিয়া বাটার, মধু, বা ভিটামিন ই থাকে। এই উপাদানগুলো ঠোঁটের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং শুষ্কতা দূর করে। অধিক পরিমাণ পানি পান করাও জরুরি, কারণ শীতকালে শরীরে আর্দ্রতার অভাব হলে ঠোঁট আরও শুষ্ক হয়ে যায়।
এ ছাড়া আমাদের ঠোঁট চাটার অভ্যাস এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এটি ঠোঁটকে আরও শুষ্ক করে তোলে এবং ফেটে যেতে সাহায্য করে। এছাড়াও, মৃদু এক্সফোলিয়েশন বা ঠোঁটের মৃত কোষ অপসারণের জন্য মাঝে মাঝে চিনির মতো ন্যাচারাল স্ক্রাব ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে খুব বেশি ঘষাঘষি করা উচিত নয়, কারণ এতে ঠোঁটের ত্বক আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
শীতকালে ঠোঁট স্বস্থ্য রাখার টিপসঃ
শীতকালে ঠোঁট সুস্থ রাখার জন্য বেশ অনেক কিছু করা যেতে পারে তা নিম্নে দেখে নিন?
১। লিপ বাম ব্যবহার করুনঃ
ময়েশ্চারাইজিং লিপ বাম ব্যবহার করুন, বিশেষত যেগুলোতে শিয়া বাটার, কোকো বাটার, বা মধু রয়েছে। এগুলো ঠোঁটের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
২। ঠোঁট চাটা এড়িয়ে চলুনঃ
অনেকেই শীতকালে শুষ্ক ঠোঁট ভেজাতে বা চাটার অভ্যাস করেন থাকেন যা আসলে ঠোঁটকে আরও শুষ্ক করে তোলে। এ অভ্যাস থেকে বিরত থাকুন।
৩। প্রচুর পানি পান করুনঃ
শীতকালে ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার বড় একটি কারণ শরীরে পানির অভাব। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন, যাতে শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকে।
আরো পড়ুনঃ শীতকালে কি করলে আপনার শরীর স্বস্থ্য থাকবে তার কৌশলগুলো জেনে রাখুন?
৪। ঠোঁট এক্সফোলিয়েট করুনঃ
ঠোঁটের মৃত কোষ দূর করতে সপ্তাহে একবার মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করুন। চিনির মতো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ঘরে বসেই ঠোঁট এক্সফোলিয়েট করা যেতে পারে।
5। রাতে লিপ মাস্ক ব্যবহার করুনঃ
রাতে ঘুমানোর আগে লিপ মাস্ক ব্যবহার করুন। এটি ঠোঁটকে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজ করে এবং শুষ্কতা দূর করে।
৬। ঠোঁটের সুরক্ষা দিনঃ
বাইরে বের হলে ঠোঁটকে ঠান্ডা বাতাস এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করার জন্য স্কার্ফ ব্যবহার করুন বা সানস্ক্রিনযুক্ত লিপ বাম লাগান।
৭। শুষ্ক পরিবেশ এড়িয়ে চলুনঃ
ঘরের ভেতরের বাতাস যদি শুষ্ক হয়, তবে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন। এটি ঘরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক হবে এবং ঠোঁটকে শুষ্ক হতে দেবে না।
এই টিপসগুলো মেনে চললে শীতকালে ঠোঁট কোমল ও সুস্থ থাকবে।
শীতকালে ঠোঁট ফাটে কেনঃ
শীতকালে ঠোঁট ফাটার প্রধান কারণ হলো শুষ্ক আবহাওয়া এবং আর্দ্রতার অভাব। শীতের সময়ে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে, যা ত্বকের সাথে সাথে ঠোঁটের আর্দ্রতাও কমিয়ে দেয়। ঠোঁটের ত্বক শরীরের অন্যান্য অংশের ত্বকের তুলনায় অনেক বেশি পাতলা এবং সংবেদনশীল হয়। তাই সেটির কারণে শীতকালে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। এছাড়া, শীতে অনেকেই ঠোঁট শুকিয়ে গেলে তা চাটার অভ্যাস গড়ে তোলেন।
শীতকালে-ঠোঁট-ফাটে-কেন |
যা ঠোঁটকে আরও শুষ্ক করে তোলে এবং ফাটার সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। শীতকালে ঠান্ডা বাতাস ও রোদ ঠোঁটের প্রাকৃতিক তেলকে কমিয়ে দেয়, যার ফলে ঠোঁট শুষ্কতা ও ফাটার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। পর্যাপ্ত পানি না পান করাও শীতে ঠোঁট ফাটার আরেকটি কারণ হতে পারে, কারণ শীতকালে শরীরের অভ্যন্তরীণ আর্দ্রতাও কমে যায়। যার ফলে আমাদের ঠোঁট ফাটতে শুরু করে।
শীতে কোমল ও গোলাপি ঠোঁট পেতে যা করবেনঃ
শীতে কোমল ও গোলাপি ঠোঁট পেতে নিয়মিত যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। প্রথমত, প্রতিদিন একটি ময়েশ্চারাইজিং লিপ বাম ব্যবহার করা উচিত, যা শিয়া বাটার, কোকো বাটার বা মধু সমৃদ্ধ। এটি ঠোঁটের শুষ্কতা রোধ করে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। সপ্তাহে এক বা দুইবার ঠোঁটকে মৃদু এক্সফোলিয়েট করা যেতে পারে চিনির মতো প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে, যা ঠোঁটের মৃত কোষ দূর করে এবং ঠোঁটকে মসৃণ করে তোলে।
আরো পড়ুনঃ শীতকালে মধু খেলে আমাদের শরীরে কি কি উপকার হয় ব্যাসিক কথা জানুন?
সঠিক পরিমাণে পানি পান করাও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শীতকালে শরীরের আর্দ্রতা কমে গেলে ঠোঁট শুষ্ক ও বিবর্ণ হয়ে যায়। বাইরে বের হলে সানস্ক্রিনযুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করতে হবে। এটি সূর্যের রশ্মি ঠোঁটের রঙ পরিবর্তন করতে পারে। এছাড়া, ঠোঁট চাটার অভ্যাস থেকে বিরত থাকা উচিত, কারণ এটি ঠোঁটকে আরও শুষ্ক করে ফাটিয়ে দিতে পারে।
রাতে ঘুমানোর আগে মধু বা ময়েশ্চারাইজিং লিপ বাম লাগালে ঠোঁট সারারাত মসৃণ ও কোমল থাকবে এবং গোলাপি রং ধরে রাখবে। এই নিয়মিত যত্নগুলো মেনে চললে শীতকালে ঠোঁট কোমল এবং প্রাকৃতিকভাবে গোলাপি থাকবে।
শীতকালে ঠোঁট ফাটার ১০টি কারণঃ
শীতকালে ঠোঁট ফাটার প্রধান কারণগুলো হলো ঠান্ডা আবহাওয়া এবং আর্দ্রতার অভাব। নিচে শীতকালে ঠোঁট ফাটার ১০টি কারণ উল্লেখ করা হলো পড়ে নিন কাজে দেবে?
- শুষ্ক বাতাসঃ শীতে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যায়, যা ঠোঁটের আর্দ্রতা শুষে নিয়ে ঠোঁটকে শুষ্ক করে ফেলে। যেটির কারণে আমাদের ঠোঁট ফাটতে শুরু করে।
- ঠাণ্ডা তাপমাত্রাঃ ঠান্ডা তাপমাত্রা ঠোঁটের প্রাকৃতিক তেল কমিয়ে দেয়, ফলে ঠোঁট ফাটে।
- ঠোঁট চাটাঃ অনেকেই ঠোঁট শুকিয়ে গেলে তা চাটার অভ্যাস আছে বিশেষ করে যারা ধূপপান করেন। ঠোঁট চাটা বন্ধ করুন নাহলে ঠোঁটকে আরও শুষ্ক ও ফাটার দিকে ঠেলে দেয়।
- পানি কম পান করাঃ শীতকালে আমরা সাধারণত কম পানি পান করা হয়। ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ আর্দ্রতা কমে যায় এবং ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়।
- সঠিক লিপ বাম ব্যবহার না করাঃ শীতকালে ময়েশ্চারাইজিং লিপ বাম ব্যবহার না করলে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়।
- শুষ্ক ঘরের পরিবেশঃ ঘরের ভেতরের গরম বাতাসও ঠোঁটের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়, বিশেষত হিটারের ব্যবহার থাকলে। এই জিনিসটি খেয়াল রাখবেন।
- সূর্যের রশ্মিঃ শীতে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি ঠোঁটের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। যা ঠোঁটের শুষ্কতা ও ফাটার কারণ হতে পারে।
- খাবারের অভ্যাসঃ লবণাক্ত বা মসলাযুক্ত খাবার ঠোঁটের আর্দ্রতা কমিয়ে দিতে পারে, ফলে ঠোঁট ফাটে। তাই এই সব খাবার খাওয়ার সময় ঠোঁট বাঁচিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- মুখের শ্বাস নেওয়াঃ শ্বাস নেওয়ার সময় মুখ ব্যবহার করলে ঠোঁটের উপর সরাসরি বাতাসের চাপ পড়ে, যা ঠোঁটকে শুষ্ক করে দেয়।
- ভিটামিনের অভাবঃ ভিটামিন বি, সি, এবং ই এর অভাব ঠোঁটের স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং ফাটার কারণ হতে পারে।
এই কারণগুলো থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিতভাবে ঠোঁটের যত্ন নেওয়া এবং পর্যাপ্ত আর্দ্রতা বজায় রাখা প্রয়োজন।
শীতে ঠোঁট ফাটা রোধে যা করণীয় কাজঃ
শীতে ঠোঁট ফাটা একটি সাধারণ সমস্যা সবার জন্য তবে কিছু নিয়মিত যত্নের মাধ্যমে এই সমস্যা রোধ করা সম্ভব। নিচে শীতে ঠোঁট ফাটা রোধে করণীয় কিছু উপায় উল্লেখ করা হলঃ
- ময়েশ্চারাইজিং লিপ বাম ব্যবহার করুনঃ
ময়েশ্চারাইজিং সমৃদ্ধ লিপ বাম ব্যবহার করুন, যাতে শিয়া বাটার, কোকো বাটার, মেরিল বা মধু ব্যবহার করতে পারেন। এটি ঠোঁটের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
- পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করুনঃ
আরো পড়ুনঃ শীতকালে মেকাপ করে কীভাবে আপনি মানুষকে নিজের দিকে আর্কষণ করবেন জানুন?
শীতে শরীরের অভ্যন্তরীণ আর্দ্রতা কমে যায়, তাই প্রচুর পানি পান করুন, যা ঠোঁটের শুষ্কতা কমাতে সহায়ক করে।
- ঠোঁট চাটা বন্ধ করুনঃ
অনেকেই ঠোঁট শুকিয়ে গেলে চাটার অভ্যাস করেন, যা ঠোঁটের শুষ্কতা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই এটি এড়িয়ে চলুন।
- মধু বা নারিকেল তেল ব্যবহার করুনঃ
প্রাকৃতিক উপাদান যেমন মধু বা নারিকেল তেল ঠোঁটে মেখে রাখতে পারেন। এগুলো ঠোঁটের শুষ্কতা কমাতে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে কার্যকর।
- মৃদু এক্সফোলিয়েট করুনঃ
ঠোঁটের মৃত কোষ দূর করতে সপ্তাহে একবার চিনির মতো প্রাকৃতিক স্ক্রাব দিয়ে ঠোঁট এক্সফোলিয়েট করুন। তবে খুব বেশি ঘষা এড়িয়ে চলুন।
- বাইরে বের হলে ঠোঁট ঢেকে রাখুনঃ
শীতের ঠান্ডা বাতাস থেকে ঠোঁটকে রক্ষা করতে স্কার্ফ বা মাস্ক দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন। এটি ঠোঁটকে শুষ্ক হওয়া থেকে বাঁচাবে।
- লিপ বামে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুনঃ
শীতেও সূর্যের রশ্মি ঠোঁটের ক্ষতি করতে পারে, তাই সানস্ক্রিনযুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করুন।
- ভিটামিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুনঃ
আরো পড়ুনঃ শীতকালে শিশুর ত্বকের যত্ন নিবেন ও সর্দি কাশি থেকে কীভাবে দূরে রাখবেন জানুন?
ভিটামিন বি, সি, এবং ই সমৃদ্ধ খাদ্য খেলে ঠোঁটের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং শুষ্কতা কমে যায়। তাই এই সব খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুনঃ
ঘরের বাতাস শুষ্ক থাকলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন, যা বাতাসের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে। যাতে করে ঠোঁট ফাটার সম্ভবনা কমে যাবে।
- রাতে ঘুমানোর আগে লিপ বাম লাগানঃ
রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে লিপ বাম লাগান, যা সারা রাত ঠোঁটকে ময়েশ্চারাইজ রাখতে সাহায্য করবে। এর সাথে সাথে আপনি মেরিল ও ব্যবহার করতে পারবেন।
এই যত্নগুলো নিয়মিতভাবে অনুসরণ করলে শীতকালে ঠোঁট ফাটা রোধ করা সম্ভব এবং ঠোঁট থাকবে কোমল ও সুন্দর।
লেখকের মক্তব্যঃ
আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে এই শীতকালে ঠোঁটের যত্ন কিভাবে আমরা নিতে পারি সহজ উপায়ে। ও তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে এই শীতকালে ঠোঁট স্বস্থ্য রাখার টিপস গুলো কি-কি।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন...............www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url