শরীর সুস্থ্য ও ভালো রাখার উপায় কি - শরীর সুস্থ্য রাখার খাবারের তালিকা? বিস্তারিত জেনে নিন?
আজকে আমরা জানবো যে আপনি কিভাবে আপনার শরীর সুস্থ্য ও ভালো রাখার উপায় গুলো জানবেন। তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে শরীর সুস্থ্য রাখার খাবারের তালিকা গুলো কি-কি? আসুন জানি।
ভূমিকাঃ
আমরা সারাদিন খাটা-খাঠনি করে নিজের শরীর ক্লান্ত করে ফেলি। দিন শেষে ঘুমিয়ে পড়ি। আমার আমাদের শরীরের সুস্থ্যতার কথা ভাল ভাবে ভাবার সময় পাই না।
শরীর-সুস্থ্য-ও-ভালো-রাখার-উপায়-কি |
তাই আজকের এই আলোচনা থেকে সহজ প্রদ্ধিতে জানবো যে শরীর সুস্থ্য ও ভালো রাখার উপায় কি। এবং তার সাথে সাথে আরো জানবো যে শরীর সুস্থ্য রাখার খাবারের তালিকা গুলো কি-কি? সব নিম্নে বিস্তারিত...।
শরীর সুস্থ্য ও ভালো রাখার উপায় কিঃ
শরীর সুস্থ ও ভালো রাখার জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলা উচিত। প্রথমত, সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। যেমনঃ ফল, সবজি, শস্যজাতীয় খাবার, প্রোটিন এবং পর্যাপ্ত পানি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি। হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং বা যোগব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীর সক্রিয় রাখা যায়। তৃতীয়ত, পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ মধু ও কালিজিরা খেলে আমাদের শরীরে কত ধরনের উপকার হয় জেনে নিন?
যা শরীরের পুনরুদ্ধার এবং মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চতুর্থত, মানসিক চাপ কমানোর জন্য নিয়মিত ধ্যান বা মেডিটেশন করা যেতে পারে। মেডিটেশন করলে আমাদের দেহ ও মন ভাল থাকে। এছাড়াও, ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোও শরীরকে সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
শরীর সুস্থ্য রাখার খাবারের তালিকাঃ
শরীর সুস্থ্য রাখতে সঠিক ও পুষ্টিকর খাবারের তালিকা মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এমন কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। আসুন জেনে নি কিছু খাবারের নামঃ
- সবজিঃ গাজর, ব্রকলি, শাকপাতা, পালং শাক, টমেটো, বাঁধাকপি প্রভৃতি সবজি খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের চাহিদা পূরণ হয়।
- ফলমূলঃ আপেল, কলা, পেঁপে, কমলা, আঙ্গুর, বেদানা, আমলকী, এবং লেবুতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ মাছ, ডিম, মুরগির মাংস, দুধ, পনির, মসুর ডাল, ছোলা, এবং অন্যান্য ডাল শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিন সরবরাহ করে।
- শস্য ও বাদামঃ বাদাম, কাজু, আখরোট, কাঠবাদাম এবং শস্যজাতীয় খাবার যেমনঃ লাল চাল, গম, ওটস শরীরের এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে।
- দুগ্ধজাত খাবারঃ দুধ, দই, ঘি, পনির, ছানা ইত্যাদি হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে থাকে আমাদের শরীরে।
- পানিঃ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরি। এটি শরীরের সমস্ত অঙ্গের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে টক্সিন জনিত রোগ বের করে দেয়।
- তৈলাক্ত মাছঃ সার্ডিন, সালমন এবং তুনা জাতীয় মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সরবরাহ করে। যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
- অলিভ অয়েল বা নারকেল তেলঃ রান্নায় স্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করা উচিত, যা শরীরের জন্য ভালো ফ্যাট সরবরাহ করে।
এই তালিকা অনুসরণ করলে শরীর সুস্থ্য এবং শক্তিশালী রাখা সহজ হবে।
শরীর সুস্থ্য রাখার ব্যায়ামঃ
শরীর সুস্থ্য রাখার পাসা পাশি আমাদেরকে শরীর ফিট রাখার জন্য কিছু ব্যায়ামের কৌশল জেনে নেওয়া উচিত। শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম শুধু শারীরিক সুস্থতার জন্য নয়, মানসিক সুস্থতার জন্যও উপকারী। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়ামের তালিকা দেওয়া হলোঃ
- হাঁটাঃ প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট করে হাঁটা শরীরকে সক্রিয় রাখে এবং হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে। এর পাশা পাশি আপনি সাইকেল,ফুটবল,জিম, ইত্যাদি করতে পারেন।
- দৌড়ানোঃ যারা শারীরিকভাবে সক্ষম, তারা নিয়মিত দৌড়াতে পারেন। এটি হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে।
- যোগব্যায়ামঃ যোগব্যায়াম শরীরকে নমনীয় রাখে এবং মানসিক শান্তি আনে। এটি পেশির শক্তি বাড়ায় এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।
- স্কোয়াটঃ স্কোয়াট করার মাধ্যমে পায়ের পেশি শক্তিশালী হয় এবং শরীরের নীচের অংশ সুগঠিত হয়।
- পুশ-আপঃ পুশ-আপ বুকে এবং বাহুতে শক্তি আনে এবং উপরের শরীরের পেশি গঠন করে।
- স্ট্রেচিংঃ স্ট্রেচিং ব্যায়াম শরীরের নমনীয়তা বাড়ায় এবং ব্যায়ামের পর পেশির টান কমাতে সাহায্য করে।
- সাঁতারঃ সাঁতার শরীরের সমস্ত পেশি ব্যবহারের জন্য একটি চমৎকার ব্যায়াম। এটি শ্বাসযন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে শীতল রাখে।
এই ব্যায়ামগুলো নিয়মিত চর্চা করলে শরীর সুস্থ এবং সক্রিয় থাকে।
শরীর ফিট রাখার জন্য কি করতে হয়ঃ
শরীর সুস্থ্য রাখার জন্য ভালো পরিমাণ খাবার খেতে হবে নিয়মিত। শরীর সুস্থ্য রাখার পাশা পাশি এবার জেনে নিন যে শরীর ফিট কিভাবে রাখবেন। শরীর ফিট রাখার জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে শরীরের পেশি শক্তিশালী হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ব্যায়ামের পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাসও বজায় রাখা দরকার।
শরীর-ফিট-রাখার-জন্য-কি-করতে-হয় |
প্রোটিন, ভিটামিন, এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যেমনঃ শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম, মাংস এবং মাছ। পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং ঘুমের সঠিক সময় বজায় রাখা শরীরের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। এছাড়াও, মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান বা মেডিটেশন করতে পারেন, যা শরীরকে চাঙা রাখতে সাহায্য করে।
সুস্থ্য থাকতে কি কি নিয়ম পালন করা জরুরীঃ
বিশেষজ্ঞরা বলে গেছেন যে, সুস্থ থাকতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চলা জরুরি। প্রথমত, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সুষম খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। যেমনঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি, ফল, প্রোটিন এবং শস্যজাতীয় খাবার। দ্বিতীয়ত, প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম বা শারীরিক কার্যকলাপ করা প্রয়োজন, যা শরীরকে ফিট রাখতে সাহায্য করে। তৃতীয়ত, পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। যা শরীরের ডিহাইড্রেশন রোগ রোধ করে এবং সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ ঠান্ডা পানিতে লেবু খাওয়া কতটা উপকার আমাদের শরীরের জন্য জেনে নিন?
চতুর্থত, নিয়মিত ঘুম ও বিশ্রাম নেওয়া জরুরি, কারণ এটি শরীর ও মনের পুনর্জীবন ঘটায় আমাদের শরীরে। এছাড়া, ধূমপান ও অ্যালকোহল মাদক থেকে বিরত থাকা, মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন বা শিথিলকরণের পদ্ধতি অনুসরণ করা, এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়মিত করা সুস্থ থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস।
শরীর ও মন ভালো রাখার ২০টি উপায়ঃ
শরীর সুস্থ্য রাখার পাশা পাশি আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে যে আমাদের শরীর ও মনকে কিভাবে সুস্থ্য ও ভালো রাখা যায়। তাই আসুন জেনে নি যে শরীর ও মন ভালো রাখতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। নিচে ২০টি উপায় দেওয়া হলোঃ
- পর্যাপ্ত ঘুমঃ প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- পুষ্টিকর খাবারঃ সুষম খাবার গ্রহণ করুন, যেমন শাকসবজি, ফলমূল, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
- নিয়মিত ব্যায়ামঃ প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম শরীর ও মনকে তরতাজা সতেজ রাখে।
- যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনঃ যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন করলে আমাদের শরীরের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
- পানি পান করাঃ প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস বিশদ্ধ পানি পান করা শরীরের জন্য ভালো।
- স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টদঃ শরীরের স্ট্রেস কমাতে নিয়মিত মনোসংযোগ ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন।
- বন্ধু ও পরিবারঃ বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সাথে সময় কাটানো মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী পাওয়া যায়।
- পজিটিভ চিন্তাঃ সবসময় ইতিবাচক পজিটিভ চিন্তা করতে চেষ্টা করুন। যা আপনার মনকে ভালো সতেজ ও ভালো রাখতে সাহায্য করবে।
- বই পড়াঃ ভালো ভালো বই পড়লে মনকে শান্ত ও সমৃদ্ধ করে তোলে।
- সঙ্গীত শোনাঃ সঙ্গীত বা মজার কাহিনী, শোনা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
- প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানোঃ প্রকৃতির সাথে মাঝে-মাঝে সময় কাটানো ভাল। এতে মনের প্রশান্তি এনে দেয়।
- হাসিঃ নিয়মিত হাসাহাসি করলে মানসিক চাপ এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
- হাতের কাজঃ কোনো ক্রিয়েটিভ কাজ, যেমন আঁকা, লেখা, কোনো কিছুতে ডিজাইন করা, ইত্যাদি করতে পারেন।
- ধীরে চলাঃ সবসময় তাড়াহুড়া না করে ধীরে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- কফি বা চা নিয়ন্ত্রণে রাখাঃ অতিরিক্ত কফি বা চা পান করা থেকে বিরত থাকুন।
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাঃ নিজের আশেপাশে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। যাতে করে কোনো ধরনের রোগ যেন নে ছড়িয়ে পড়ে।
- মানসিক স্বাস্থ্য চর্চাঃ নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ও নিজের মনকে ভাল রাখার জন্য নিয়মিত মেডিটেশন করুন।
- স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতঃ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত ডাক্তারের কাছে।
- মানসিক সমর্থনঃ কারো সাথে মনের কথা শেয়ার করুন, যা আপনাকে মানসিক সমর্থন দিতে পারে।
- প্রত্যাশা কমানোঃ জীবনে অতিরিক্ত প্রত্যাশা না করে ধৈর্য ধরুন। কেননা ধৈর্জের ফল অনেক মিস্টি হয়। তাই জীবনে কিছু করতে হলে আপনাকে ধৈর্জ ধরতে হবে।
সর্বশেষ, আপনি এই সব নিয়ম মেনে চলতে পারলে আপনার শরীর ও মন সব সময় ভালো থাকবে। আপনি সব ধরনের কাজে সফলতা পাবেন।
লেখকের মক্তব্যঃ
আসাআ করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে শরীর সুস্থ্য ও ভালো রাখার উপায় গুলো কি-কি। এবং তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে শরীর সুস্থ্য রাখার খাবারের তালিকা কেমন হওয়া উচিত।
প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভালো লাগলে কমেন্ট করবেনে ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।
আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.........www.stylishsm.com
( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url