ম্যালেরিয়া জ্বরের কারণ কি - ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ কি? বিস্তারিত জেনে নিন?

আজকে আমরা জানবো যে আপনি কিভাবে সহজ প্রদ্ধতি কাজে লাগিয়ে ম্যালেরিয়া জ্বরের কারণ গুলো থেকে বাঁচতে পারবেন। তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ কি? আসুন জানি।          

ভূমিকাঃ

ম্যালেরিয়া রোগ একটি মারাত্মক রোগ হিসাবে ধরা যেতে পারে আমাদের শরীরে। এই রোগ থেকে বাঁচতে হলে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ মেনে চলতে হবে আমাদেরকে।

ম্যালেরিয়া-জ্বরের-কারণ-কি
ম্যালেরিয়া-জ্বরের-কারণ-কি        

তাই আসুন জেনে নি যে এই ম্যালেরিয়া রোগ জ্বরের কারণ কি ধরনের ক্ষতি করতে পারে আমাদের জীবনে। ও তার সাথে এটাও জানবো যে ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ গুলো কি-কি? সব বিস্তারিত......।

ম্যালেরিয়া জ্বরের কারণ কিঃ

ম্যালেরিয়া জ্বরের কারণ হলো এক ধরনের পরজীবী যাকে প্লাসমোডিয়াম বলা হয়। এই পরজীবীটি মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে থাকে। সাধারণত অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের ফলে ম্যালেরিয়া ছড়ায়। যখন মশাটি কোনো ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড় দেয়।

আরো পড়ুনঃ আপনি কীভাবে ডেঙ্গু রোগ থেকে খুব সহজে রক্ষা পেতে পারেন জেনে নিন?

তখন তার রক্তের মাধ্যমে প্লাসমোডিয়াম পরজীবী মশার দেহে প্রবেশ করে এবং পরে সেই মশা অন্য কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে তার শরীরে এই পরজীবী প্রবেশ করে ম্যালেরিয়া জ্বরের সৃষ্টি হয়। এই গুলো রোগ থেকে আমাদেরকে সতর্ক থাকবে হবে সব সময়।

ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণঃ

ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণগুলো সাধারণত রোগাক্রান্ত মশার কামড়ের পর ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে দেখা দেয় মানুষের মধ্য। ম্যালেরিয়ার প্রধান লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে তা নিম্নে দেখে নিন?

  1. জ্বরঃ সাধারণত ম্যালেরিয়ার কারণে হঠাৎ করে তীব্র জ্বর আসে শরীরে। যা কিছু সময় পরে কমে যায় এবং আবার ফিরে আসে। এই জ্বর সাধারণত ঘাম দিয়ে শেষ হয়।
  2. কাঁপুনিঃ জ্বরের সঙ্গে প্রচণ্ড কাঁপুনি দেখা দেয় শরীরে। এই কাঁপুনি প্রায়ই ঘামানোর পর শেষ হয়।
  3. মাথাব্যথাঃ ম্যালেরিয়ার কারণে তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে। যা অন্যান্য সাধারণ ব্যথানাশক দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।
  4. বমি বমি ভাব এবং বমিঃ রোগী প্রায়ই বমি বমি ভাব অনুভব করেন এবং বমি করতে পারেন সময়ের ক্ষেত্রে।
  5. পেশী ও গাঁটে ব্যথাঃ ম্যালেরিয়ার একটি সাধারণ লক্ষণ হল পেশী ও গাঁটে প্রচণ্ড ব্যথা।
  6. ক্লান্তিঃ রোগীর মধ্যে তীব্র ক্লান্তি এবং দুর্বলতা দেখা যায়।
  7. ঘামানোঃ জ্বরের পর প্রচুর ঘাম হয়, যা শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার লক্ষণ।
  8. ডায়রিয়াঃ কিছু ক্ষেত্রে অনেক সময় ডায়রিয়া হতে পারে।
  9. হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়াঃ ম্যালেরিয়ার কারণে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যেতে পারে। যা এনিমিয়ার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ ম্যালেরিয়া মারাত্মক হতে পারে এবং সময়মতো চিকিৎসা না করলে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।

ম্যালেরিয়া রোগের ঔষুধের নামঃ

ম্যালেরিয়া রোগের জ্বরের কারণ গুলো আমরা উপরের তথ্য থেকে বুঝতে পেরেছি। এখন জানবো যে এই রোগের ঔষুধ কি ধরনের হয়ে থাকে। আসুন ম্যালেরিয়া রোগের জন্য কিছু সাধারণ ঔষধের নাম জানা যাকঃ

আরো পড়ুনঃ হার্ট আট্যাক থেকে আপনি কীভাবে খুব সহজে রক্ষা পাবেন জেনে রাখুন?

  1. ক্লোরোকুইন (Chloroquine)
  2. আর্টিমিসিনিন ভিত্তিক কম্বিনেশন থেরাপি (ACT)
  3. মেফ্লোকুইন (Mefloquine)
  4. কুইনাইন (Quinine)
  5. প্রাইমাকুইন (Primaquine)
  6. ডক্সিসাইক্লিন (Doxycycline)
  7. আটোভাকুন (Atovaquone) ও প্রোগানিল (Proguanil)

এই ঔষধগুলি ডাক্তার বা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত, কারণ ম্যালেরিয়ার প্রকারভেদ এবং রোগীর অবস্থার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়।

ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিরোধঃ

এই ম্যালেরিয়া রোগ সাধারণত মশার কামড়ের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে আমাদের শরীরে। এই রোগের প্রতিরোধে করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে তাহলোঃ

  • মশারি ব্যবহারঃ ম্যালেরিয়া বহনকারী মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে, ইনসেক্টিসাইড-ট্রিটেড মশারি (ITN) ব্যবহার করা যেতে পারে। যা মশা মারতে সহায়ক করে থাকে।
  • মশা নিরোধক ব্যবহারঃ শরীরের খোলা অংশে মশা নিরোধক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া, মশা দূর করার স্প্রে, কয়েল বা ইলেকট্রনিক মশা তাড়ানোর যন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাঃ বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা উচিত, যাতে মশার জন্ম না হয়। বিশেষ করে ফুলের টব, পুরাতন টায়ার, এবং যেকোনো পাত্র যাতে পানি জমতে পারে তা নিয়মিত পরিষ্কার করা উচিত।
  • পোশাক পরিধানঃ দিনে এবং রাতে লম্বা হাতা ও পা ঢেকে রাখা পোশাক পরা উচিত। যা মশার কামড় থেকে রক্ষা করতে সহায়ক।
  • প্রতিরোধমূলক ওষুধ সেবনঃ উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় গেলে বা বসবাস করলে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রফাইল্যাকটিক ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।
  • মশার আবাসস্থল ধ্বংস করাঃ মশার জন্মস্থলগুলো ধ্বংস করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যেমন পুকুরে গাপ্পি মাছ ছেড়ে দেওয়া, যেগুলো মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে।

সর্বশেষ কথা, আপনি এই বিধি মানতে পারলে আপনি খুব সহজে এই ম্যালেরিয়া রোগ থেকে খুব সহজে মুক্তি পেতে পারেন। এ ছাড়া আপনি প্রয়োজনে ডাক্তারের পরমর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন।

ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণুর নাম কিঃ

ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণুর নাম হলো প্লাজমোডিয়াম (Plasmodium)। এই জীবাণু সাধারণত মশার মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং রক্তের লোহিত কণিকাগুলিকে সংক্রমিত করে ম্যালেরিয়া রোগের সৃষ্টি করে। Plasmodium জীবাণুর বেশ কয়েকটি প্রকার রয়েছে, যার মধ্যে Plasmodium falciparum, Plasmodium vivax, Plasmodium ovale, এবং Plasmodium malariae উল্লেখযোগ্য। এই সব রোগ থেকে আমাদেরকে সব সময় বেঁচে থাকতে হবে।

ম্যালেরিয়া রোগ কত দিন থাকেঃ

ম্যালেরিয়া রোগ এটি একটি সাংঘাতিক রোগ। এই ম্যালেরিয়া মানুষের রক্তের মধ্য প্রবেশ করে মানুষকে খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ্য করে দিতে পারে। এই ম্যালেরিয়া রোগের কোনো নির্দিষ্টি কোন সময় নেই। এই রোগ জ্বরের মাধ্যমে আমাদের শরীরে আসা-জাওয়া করতে থাকে। এই রোগ সাধারণত ৩-৪ দিন বা তারাও বেশি দিন ধরে থাকতে পারে আমাদের শরীরে।

আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার এই মারাত্মক রোগ থেকে কীভাবে মুক্তি পাবেন জেনে রাখুন?

ম্যালেরিয়া-রোগ-কত-দিন-থাকে
ম্যালেরিয়া-রোগ-কত-দিন-থাকে        

ম্যালেরিয়া রোগের বিস্তার প্রদ্ধতিঃ

এই ম্যালেরিয়া রোগ স্ত্রী ও অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের দ্বারা সংক্রামিত হয়ে থাকে আমাদের শরীরে। ম্যালেরিয়া রোগ পরজীবী রোগ লোহিত রক্তকণিকার মাধ্যমে বংশবিস্তার করে থাকে। যার ফলে এই রোগের দ্বারা শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ ও রক্তসল্পতার দিক দেখা দিতে পারে। যার ফলে রোগীর শরীরে জ্বর-জ্বর ভাব, বমি, অসুস্থ্যতা, ইত্যাদি লক্ষ্য করা যায়। ম্যালেরিয়া রোগের কারণে একটি মানুষের মৃত্য পর্জন্ত হতে পারে। তাই এই সব রোগ থেকে আমদেরকে সব সময় বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে।

লেখকের মক্তব্যঃ

আসাকর যে আপনি বুঝতে পেরছেন যে ম্যালেরিয়া জ্বরের কারণ গুলো কি-কি হতে পারে। তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ কি আমাদের জীবনে।

প্রশ্ন থাকলে কিংবা ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের সাথে।

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.........www.stylishsm.com




( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )

















 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url