মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম - লাইসেন্স করতে কত সময় লাগে? ভালোভাবে জেনে রাখুন?

আজকে আমরা জানবো যে মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম গুলো  কিভাবে করতে হয়। ও তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে। আসুন জেনে নি?

ভূমিকাঃ

মটরসাইকেল চালানোর সব মানুষের একটা বড় ধরনের শখ হয়ে থাকে। কিন্তু মটরসাইকেল চালানর জন্য আপনাকে মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হবে। তা ছাড়া আপনি গাড়ি চালালে মামলা খেতে পারেন।

মোটরসাইকেল-ড্রাইভিং-লাইসেন্স-করার-নিয়ম
মোটরসাইকেল-ড্রাইভিং-লাইসেন্স-করার-নিয়ম    

তাই আজকে আমরা জানবো যে মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম মেনে আপনি কিভাবে খুব সহজে করা যায়। ও মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে। আসুন জেনে নি সব কিছু বিস্তারিত...।

মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়মঃ 

মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম গুলো আপনি মেনে চললে খুব সহজে লাইসেন্স করতে পারবেন। মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম বেশ কয়েকটি ধাপের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। প্রথমত, আপনি বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) অফিস বা ওয়েবসাইট থেকে একটি আবেদন ফরম সংগ্রহ করবেন। ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে, যেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, যোগাযোগের ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পেশাগত তথ্য উল্লেখ করা থাকবে।

আরো পড়ুনঃ খুব সহজে পাসপোর্ট করার নিয়মাবলি বিস্তারিত জেনে নিন?

এরপর, নির্দিষ্ট ফি পরিশোধের জন্য ব্যাংকে গিয়ে ফি জমা দিতে হবে এবং জমাদানের রসিদ সংগ্রহ করতে হবে। এরপর, ফরম ও রসিদ সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, জন্ম সনদ, চার কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ইত্যাদি সংযুক্ত করে বিআরটিএ অফিসে জমা দিতে হবে। মনে করে সব কাগজ গুলো সত্যায়িত করে নিবেন তাহলে ভাল হবে।

পরবর্তীতে, একটি নির্ধারিত তারিখে মোটরসাইকেল চালানোর মৌলিক পরীক্ষার জন্য আপনাকে উপস্থিত থাকতে হবে। পরীক্ষায় পাস করলে আপনি একটি শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন, যা ছয় মাসের জন্য বৈধ থাকবে। এই সময়ের মধ্যে আপনাকে মোটরসাইকেল চালানোর প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ছয় মাস পর, চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

যেখানে থিওরি ও প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা উভয়ই থাকবে। পরীক্ষায় সফল হলে আপনি স্থায়ী মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন। এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশে বৈধভাবে মোটরসাইকেল চালানোর লাইসেন্স অর্জন করতে পারবেন।

মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগেঃ

মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জানার পরে আপনাকে লাইসেন্স করতে দিতে হবে। আসুন জেনে নি, লাইসেন্স করতে মোট কত টাকা লাগে?

  • আবেদন ফিঃ

প্রথম ধাপে, বিআরটিএ (BRTA) অফিসে ফরম পূরণের জন্য একটি আবেদন ফি জমা দিতে হয়। এই ফি সাধারণত 345 টাকা হয়।

  • শিক্ষানবিশ লাইসেন্স ফিঃ

শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের জন্য 425 টাকা জমা দিতে হয়।

  • চূড়ান্ত পরীক্ষার ফিঃ

চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সাধারণত 345 টাকা ফি জমা দিতে হয়।

  • স্থায়ী লাইসেন্স ফিঃ

চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে স্থায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য 2530 টাকা ফি জমা দিতে হয়।

  • অতিরিক্ত খরচঃ

ছবি তোলা, ফটোকপি করা এবং অন্যান্য ছোটখাটো খরচ মিলিয়ে 100-200 টাকা হতে পারে।

সবমিলিয়ে, বাংলাদেশে মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য মোট খরচ প্রায় 3700-3800 টাকার মধ্যে হতে পারে।

দ্রষ্টব্য: উল্লিখিত ফি এবং খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। তাই সঠিক তথ্যের জন্য বিআরটিএ অফিস বা তাদের ওয়েবসাইট থেকে আপডেটেড তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ শেষ হলে কি করণীয়ঃ

মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জেনে আপনি যদি লাইসেন্স করতে দেন। তাহলে আপনাকে কোথায় গিয়ে ঠগতে হবে না। লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলে জা-জা করবেন তাহলোঃ

  1. প্রথমে বিআরটিএ (BRTA) অফিস থেকে নবায়নের জন্য আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে বা বিআরটিএ ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে হবে। ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
  2. নবায়নের ( Recovery ) জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জমা দিতে হয়। যেমনঃ
  3. পূরণকৃত আবেদন ফরম
  4. বর্তমান বা পুরাতন ড্রাইভিং লাইসেন্স
  5. জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
  6. নির্দিষ্ট ফি জমার রশিদ
  7. মেডিকেল সার্টিফিকেট (যদি প্রয়োজন হয়) তার পরে
  8. নবায়নের জন্য নির্ধারিত ফি বিআরটিএ অফিসে জমা দিতে হবে। ফি জমার রশিদ সংরক্ষণ করতে হবে।
  9. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ফি জমার রশিদসহ পূরণকৃত আবেদন ফরম বিআরটিএ অফিসে জমা দিতে হবে।
  10. আরটিএ অফিসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি তোলা হবে।
  11. আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বিআরটিএ অফিস থেকে নবায়িত ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। সাধারণত কিছুদিন পরে আপনাকে জানানো হবে কবে নবায়িত লাইসেন্স সংগ্রহ করতে যেতে হবে।

সর্বপরি নবায়ন প্রক্রিয়া ও ফি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য বিআরটিএ অফিস বা তাদের ওয়েবসাইট থেকে জানা যাবে। প্রতিটি ধাপে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য বিআরটিএর নির্দেশিকা অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত দিন সময় লাগেঃ

মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম গুলো ভালোভাবে যেনে রাখবেন তাহলে আপনাকে বেশি হয়রানি হবা লাগবে না। এবার আসুন জানি যে লাইসেন্স করতে কত সময় লাগে। ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে সাধারণত বেশ কিছুদিন সময় লাগে। প্রথমত, আবেদন জমা দেওয়ার পর প্রাথমিক যাচাই-বাছাই হয়, যেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং আবেদন ফরম যাচাই করা হয়।

এর পরে, আবেদনকারীর মেডিকেল পরীক্ষা এবং তাত্ত্বিক (থিওরিটিক্যাল) ও ব্যবহারিক (প্র্যাকটিক্যাল) ড্রাইভিং পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তাত্ত্বিক পরীক্ষায় পাশ করার পর ব্যবহারিক ড্রাইভিং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি তোলার জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি তোলার পর, সব তথ্য সঠিকভাবে রেকর্ড করা হলে এবং সব যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত করা হয়। এ সমস্ত ধাপ সম্পন্ন করতে সাধারণত ৩০ থেকে ৪৫ দিন সময় লাগতে পারে। তবে, বিভিন্ন এলাকার বিআরটিএ (BRTA) অফিসের কার্যক্রম এবং প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে এই সময়সীমা কিছুটা কমবেশি হতে পারে।

সময়মতো আবেদন এবং সকল ধাপ সঠিকভাবে অনুসরণ করলে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ হয়।

মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স মামলাঃ

মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জানার পরে আপনাকে লাইসেন্স করতে হবে। আপনার যদি লাইসেন্স বৈধ না থাকে। তাহলে আপনাকে বিশেষ কিছু সমস্যার সম্মখিন হতে হবে। যে যে বিষয় গুলো লক্ষ্য রাখবেন তাহলোঃ মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স মামলা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি সাধারণত ঘটে যখন কেউ বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেল চালায় বা লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট নিয়মাবলী মানে না।

মোটরসাইকেল-ড্রাইভিং-লাইসেন্স-মামলা
মোটরসাইকেল-ড্রাইভিং-লাইসেন্স-মামলা        

এমন পরিস্থিতিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। এ ধরনের মামলায় জরিমানা বা শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। অনেক সময় লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিলও করা হতে পারে। যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স বৈধ না থাকে বা মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাহলে জরিমানা গুণতে হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে হাজিরা দিতে হতে পারে। আইন মেনে চলা এবং সঠিক লাইসেন্স রাখা জরুরি, যাতে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয়।

ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন ফরমঃ

মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম আপনার যদি জানা থাকে তাহলে নিসন্ধে আবেদন ফরম তুলে পূরণ করে জমা দিতে পারবেন। ফরমে যা যা প্রয়োজন হয় তাহলোঃ

ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন ফরম ব্যাক্তিগত তথ্য

  • পূর্ণ নামঃ
  • পিতার নামঃ
  • মাতার নামঃ
  • জন্ম তারিখঃ
  • জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরঃ
  • বর্তমান ঠিকানাঃ
  • স্থায়ী ঠিকাননাঃ 
 যোগাযোগের তথ্য

  • মোবাইল নম্বরঃ
  • ইমেইল ঠিকানাঃ

 লাইসেন্স সম্পর্কিত তথ্য

  • লাইসেন্সর ধরণ ( হাল্কা,ভারী, মোটরসাইকেল )
  • শিক্ষানবিশ লাইসেন্স নম্বর ( যদি থাকে )
  • লাইসেন্স মেয়াদ ( প্রথমবার/ নবায়ন )

 শিক্ষাগত যোগ্যতা

  • সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা

 স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য

  • রক্তের গ্রুপ
  • কোন বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা ( যদি থাকে )
  • প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্তি
  • জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের ফটোকপি
  • স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সম্প্রতি তোলা)

প্রত্যয়ন

আমি ঘোষণা করছি যে, উপরের সব তথ্য সঠিক এবং সত্য। আমি ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

আবেদনকারীর স্বাক্ষর..................।

আবেদন তারিখ..................।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন দেশ বা অঞ্চলে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন প্রক্রিয়ায় কিছুটা পার্থক্য থাকতে পারে। স্থানীয় ড্রাইভিং লাইসেন্স কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানুন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করুন।

লেখকের মক্তব্যঃ

আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম। ও কিভাবে করতে হয়। তার সাথে সাথে এটাও জানলেন যে মটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে। আপনার মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই জানাবেন।

ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করে দিবেন আপনার চেনা-পরিচয় মানুষের কাছে।

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.........www.stylishsm.com




( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )
































এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url