মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্ততি - পোনা মাছের চাষ প্রদ্ধতি কি? ভালোভাবে জেনে রাখুন?

আজকে আমরা জানবো যে কিভাবে ভাল মানের মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্ততি করতে হয়। এবং তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে পুকুর প্রস্ততি করার জন্য কি কি ধাপ প্রয়োজন। সব কিছু বিস্তারিত......।

ভূমিকাঃ

মাছ চাষের জন্য বেশ অনেক গুলো ধাপ মেনে চলতে হয়। মাছের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছু মেনে না চললে অনেক বড় বিপদ আসতে পারি। 

মাছ-চাষের-জন্য-পুকুর-প্রস্ততি
মাছ-চাষের-জন্য-পুকুর-প্রস্ততি                

তাই আজকে আমরা জানবো যে কিভাবে ভাল মানের মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্ততি করতে হয়। এবং কি তার সাথে এটাও জানবো যে পুকুর প্রস্ততি করার জন্য কি কি ধাপ প্রয়োজন। আসুন জেনে নি?

মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্ততিঃ

 মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্তুতির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সঠিক পদ্ধতিতে পুকুর প্রস্তুত করা না হলে মাছের উৎপাদন কম হতে পারে এবং রোগবালাইয়ের ঝুঁকি বাড়তে পারে। প্রথমে, পুকুরটি পরিষ্কার করে নিতে হবে। পুকুরের তলায় কোনো পচা পাতা, কাদা, বা অন্যান্য আবর্জনা থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে। এরপর, পুকুরের পাড়গুলো মজবুত করতে হবে যাতে পানির ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা যায়।

আরো পড়ুনঃ কিভাবে খুব সহজে মুরগী পালন করে লাভ-বান হবেন?

পুকুরের তলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পচনশীল সার ব্যবহার করতে হবে, যা মাছের খাদ্যের যোগান দেয়। পুকুরে পানি ছাড়ার আগে পানির গুণগত মান পরীক্ষা করা উচিত। পানির পিএইচ মাত্রা, তাপমাত্রা, এবং অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান সঠিক মাত্রায় থাকতে হবে। প্রয়োজন হলে চুন এবং অন্যান্য রাসায়নিক প্রয়োগ করা যেতে পারে। 

সঠিক পুকুর প্রস্তুতি নিশ্চিত করার জন্য, পুকুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন থাকা জরুরি। এ জন্য পর্যাপ্ত গভীরতা থাকা উচিত এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পানির চলাচল নিশ্চিত করা উচিত। মাছের আকার, প্রজাতি, এবং সংখ্যা অনুযায়ী পুকুরে পর্যাপ্ত জায়গা রাখা উচিত যাতে মাছগুলো স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

সঠিক পুকুর প্রস্তুতি মাছ চাষের জন্য একটি অপরিহার্য ধাপ যা মাছের ভালো উৎপাদন এবং স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

পুকুর প্রস্ততি করার জন্য কি কি ধাপ প্রয়োজনঃ

মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্ততি করার আগে আপনাকে কিছু নিয়ম-কানুন মানতে হবে। যদি আপনি এই নিয়ম মেনে কাজ করতে পারেন। তাহলে ভাল ফল পাওয়ার আসা করতে পারবেন নিশ্চিত।

মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্তুত করার ধাপগুলো নিম্নরূপঃ

  • পুকুর নির্বাচনঃ

  1.  উপযুক্ত জায়গায় পুকুর নির্বাচন করা।
  2. মাটি ও পানির গুণগত মান যাচাই।
  3. সহজে পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা।

  • পুকুর পরিষ্কারঃ

  1.  পুকুরের তলদেশ ও পাড় পরিষ্কার করা।
  2. পচা পাতা, কাদা, এবং অন্যান্য আবর্জনা সরিয়ে ফেলা।
  • পুকুরের পাড় মজবুত করাঃ

  1.  পাড়গুলো মজবুত ও স্থিতিশীল করতে।
  2. মাটি দিয়ে ভালোভাবে পাড় বাঁধা।
  3. ক্ষয়ক্ষতি রোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।

  • জলস্তর নিয়ন্ত্রণঃ

  1.  প্রয়োজনীয় পানির স্তর নির্ধারণ।
  2. পর্যাপ্ত গভীরতা নিশ্চিত করা।
  3. পানির উচ্চতা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখা।

  • জৈব সার প্রয়োগঃ

  1.  পুকুরের তলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার ব্যবহার।
  2. পুকুরের পিএইচ মাত্রা ঠিক রাখতে চুন প্রয়োগ।
  3. সার প্রয়োগের মাধ্যমে পানির পুষ্টিমান বৃদ্ধি।

  • অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করাঃ

  1.  পুকুরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা।
  2. পুকুরে পানি চলাচল ব্যবস্থা রাখা।
  3. প্রয়োজন অনুযায়ী এয়ারেটর বা পাম্প ব্যবহার।

  • পানির গুণগত মান পরীক্ষাঃ

  1.  পানির পিএইচ, তাপমাত্রা, এবং অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান পরীক্ষা করা।
  2. পানির গুণগত মান ঠিক রাখতে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক প্রয়োগ।

  • মাছের জন্য প্রস্তুতিঃ

  1.  মাছের আকার, প্রজাতি, এবং সংখ্যা অনুযায়ী পর্যাপ্ত জায়গা রাখা।
  2. প্রয়োজনীয় খাদ্য ও আশ্রয় ব্যবস্থা রাখা।

এই ধাপগুলো অনুসরণ করে পুকুর প্রস্তুত করলে মাছ চাষে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে এবং মাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

পুকুর প্রস্ততি করে সার প্রয়োগঃ

মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্ততি করলে আপনাকে সব দিক মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। পুকুর প্রস্ততি করার পর আপনি কি কি ব্যবহার করবেন তা নিম্নে দেওয়া হলোঃ

পুকুর প্রস্তুতি শেষে প্রথমে পুকুরের তলায় চুন ছিটিয়ে দিতে হবে। যা পুকুরের পানির পিএইচ মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ও প্যারাসাইট ধ্বংস করে। সাধারণত, প্রতি কাঠা পুকুরের জন্য ১-২ কেজি চুন ব্যবহার করা হয়। চুন প্রয়োগের পর পানির গভীরতা অনুসারে ৫-৭ দিন অপেক্ষা করতে হয়।

আরো পড়ুনঃ আধুনিক প্রযক্তি ব্যবহার করে কিভাবে মাছ চাষ করবেন?

এরপর জৈব সার প্রয়োগ করা হয়। পুকুরে জৈব সার হিসেবে সাধারণত গোবর, মুরগির বিষ্ঠা, এবং অন্যান্য জৈব পদার্থ ব্যবহার করা হয়। এই সারের মাধ্যমে পুকুরের পানিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যোগ হয়, যা মাছের খাদ্য হিসেবে কাজ করে এবং ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের উৎপাদন বাড়ায়। সাধারণত, প্রতি কাঠা পুকুরের জন্য ১০-১৫ কেজি গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে।

সার প্রয়োগের পর পুকুরের পানির রং পরিবর্তিত হতে শুরু করবে, যা ইঙ্গিত করে যে পুকুরে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্তুত বলে মনে করা হয়। সার প্রয়োগের পর নিয়মিত পুকুরের পানি পরীক্ষা করে পানির পিএইচ, তাপমাত্রা, এবং অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান যাচাই করতে হয়, যাতে মাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং চাষ সফল হয়।

এই ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে পুকুরে সঠিক পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত হয় এবং মাছের বৃদ্ধির জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়।

মাছ চাষের জন্য আধুনিক প্রদ্ধতি কিঃ

মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্ততি করে হলে আপনি একবার এটা করার চেষ্টা করবেন যে আধুনিক হিসাবে যদি আপনি মাছ চাষ করতে চাই। তাহলে এই ধাপ গুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে।

বায়োফ্লক পদ্ধতি

বায়োফ্লক প্রযুক্তি মাছ চাষে অন্যতম জনপ্রিয় এবং আধুনিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে পুকুরে নাইট্রোজেন চক্র সক্রিয় থাকে যা মাছের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। পানির মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ফ্লকের সাহায্যে অ্যামোনিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে মাছের খাদ্য কম লাগে এবং পানির মানও ভালো থাকে।

রিসার্কুলেটিং অ্যাকুয়াকালচার সিস্টেম (RAS)

RAS পদ্ধতিতে পানি পুনঃব্যবহার করা হয়। এতে পরিবেশগত প্রভাব কম হয় এবং মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পানির মান স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় যা মাছের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি-ট্রফিক অ্যাকুয়াকালচার (IMTA)

IMTA পদ্ধতিতে একসাথে একাধিক প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়। যেমন: মাছ, শামুক, কাঁকড়া এবং শৈবাল একসাথে চাষ করে, যেখানে প্রতিটি প্রজাতি পরস্পরের বর্জ্য পুষ্টি উপাদান হিসেবে গ্রহণ করে।

প্লাস্টিকের ট্যাংক চাষ

পুকুর বা জলাশয়ের পরিবর্তে প্লাস্টিকের ট্যাংকে মাছ চাষ করা হয়। এতে জলাশয় তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমে এবং কম জায়গাতেই মাছ চাষ করা যায়।

ফ্লোটিং কেজ সিস্টেম

এই পদ্ধতিতে জলের উপরে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করা হয়। মূলত নদী, হ্রদ বা সমুদ্রে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হয়। এতে মাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং চাষও সহজ হয়।

জৈবিক ফিল্টার পদ্ধতি

এই পদ্ধতিতে পুকুর বা ট্যাংকের পানিকে পরিশুদ্ধ করার জন্য জৈবিক ফিল্টার ব্যবহার করা হয়। এতে পানির মান ভালো থাকে এবং মাছের স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পায়।

স্বয়ংক্রিয় খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা

আধুনিক মাছ চাষে স্বয়ংক্রিয় খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়, যা নির্দিষ্ট সময় পরপর মাছের খাদ্য সরবরাহ করে। এতে সময় ও শ্রম বাঁচে এবং খাদ্যের অপচয়ও কমে।

ড্রাম ফিল্টার প্রযুক্তি

পুকুরের পানির মান ঠিক রাখতে ড্রাম ফিল্টার ব্যবহার করা হয়। এতে মাছের বর্জ্য ও খাদ্য বর্জ্য সরিয়ে ফেলা হয় এবং পানির গুণমান বজায় রাখা হয়।

এই আধুনিক পদ্ধতিগুলো মাছ চাষকে আরো সহজ, কার্যকর ও লাভজনক করে তুলেছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মাছ চাষের উৎপাদন ও মান দুটি বৃদ্ধি করা সম্ভব।

মাছ চাষের জন্য পুকুর কত মিটার গভীর করতে হয়ঃ

মাছ চাষের জন্য পুকুরের গভীরতা নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সাধারণত, মাছ চাষের জন্য পুকুরের গভীরতা ১.৫ মিটার থেকে ২ মিটার হওয়া উচিত। এই গভীরতা মাছের প্রজাতি, পুকুরের ধরন এবং স্থানীয় জলবায়ুর উপর নির্ভর করে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। পুকুরের গভীরতা যথেষ্ট না হলে গ্রীষ্মকালে পানির তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি হয়ে যেতে পারে যা মাছের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আবার শীতকালে পানির তাপমাত্রা খুব কম হলে মাছের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়তে পারে।

মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্ততি করার পর পুকুরের গভীরতা এমনভাবে রাখতে হবে যাতে পানির তাপমাত্রা এবং অক্সিজেনের স্তর মাছের জন্য অনুকূল থাকে। পুকুরের গভীরতা সঠিকভাবে নির্ধারণ করলে মাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, বৃদ্ধি দ্রুত হয় এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। এজন্য পুকুর খননের সময় সঠিক গভীরতা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

পুকুরের ঢাল অনুপাত কত রাখা উচিতঃ

মাছ চাষের জন্য পুকুরের ঢাল অনুপাত সঠিকভাবে নির্ধারণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, পুকুরের ঢালের অনুপাত ২ঃ১ বা ৩ঃ১ রাখা উচিত। এর অর্থ হলো, পুকুরের পাড়ের প্রতি ২ মিটার বা ৩ মিটার দৈর্ঘ্যের জন্য ১ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধি হবে।

পুকুরের-ঢাল-অনুপাত-কত-রাখা-উচিত
পুকুরের-ঢাল-অনুপাত-কত-রাখা-উচিত        

এই অনুপাত বজায় রাখার মাধ্যমে পুকুরের পাড় স্থিতিশীল থাকে এবং পানির স্তরও সঠিকভাবে বজায় রাখতে সক্ষম। এছাড়া, পুকুরের ঢাল যদি খুব খাড়া হয়, তাহলে পাড়ের মাটি ধসে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আবার, ঢাল যদি খুব কম হয়, তাহলে পুকুরের মধ্যে পর্যাপ্ত গভীরতা রাখা কঠিন হয়ে যায়।

সুতরাং, মাছ চাষের জন্য পুকুরের ঢাল অনুপাত ২ঃ১ বা ৩ঃ১ রাখার চেষ্টা করা উচিত, যা পুকুরের স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করে।

পোনা মাছের চাষ প্রদ্ধতিঃ

পোনা মাছের চাষ পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে পোনা মাছের চাষের ধাপসমূহ দেওয়া হলোঃ

  •  পুকুর প্রস্তুতিঃ

  1.  পুকুর পরিস্কারঃ পোনা মাছ ছাড়ার আগে পুকুরটি সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করতে হবে। পুকুরে থাকা আগাছা, কাদা এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় পদার্থ পরিষ্কার করতে হবে।
  2. মাটির পিএইচ পরীক্ষাঃ পুকুরের মাটির পিএইচ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে তা ৬.৫-৭.৫ এর মধ্যে আছে।

  • সার প্রয়োগঃ

  1.  পুকুরের মাটিতে গোবর এবং অন্যান্য জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি শতাংশে ২০-২৫ কেজি গোবর এবং ২-৩ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে।

  •  পোনা মাছ সংগ্রহঃ

  1. গুণগত মানের পোনা নির্বাচনঃ ভালো মানের পোনা মাছ সংগ্রহ করতে হবে। পোনা মাছ সুস্থ ও সক্রিয় হতে হবে।
  2. পোনা মাছের প্রকারঃ মাছের চাষের জন্য বিভিন্ন প্রকার পোনা ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন রুই, কাতলা, মৃগেল ইত্যাদি।

  •  পোনা মাছ ছাড়ার পদ্ধতিঃ

  1. পানির মান নিশ্চিত করাঃ পুকুরের পানির মান পরীক্ষা করে দেখতে হবে যাতে পোনা মাছের বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ থাকে।
  2. পোনা ছাড়ার সময়ঃ সাধারণত সকালে বা বিকেলের দিকে পোনা মাছ পুকুরে ছাড়তে হবে।
  3. পোনা মাছের সংখ্যাঃ প্রতি শতাংশ পুকুরে ৩০০-৫০০ টি পোনা মাছ ছাড়তে হবে।

  •  খাবার ও পুষ্টিঃ

  1. প্রথম দিকের খাবারঃ প্রথম দিকে পোনা মাছকে ছোট আকারের খাবার, যেমন ডিমের কুসুম, দুধ, ময়দার খামি ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।
  2. পরে খাবারঃ ধীরে ধীরে পোনা মাছের বয়স ও আকার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে বাণিজ্যিক খাবার দেওয়া উচিত।

  •  পুকুরের যত্নঃ

  1. নিয়মিত পানির মান পরীক্ষাঃ পুকুরের পানির পিএইচ, তাপমাত্রা এবং দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে।
  2. নিয়মিত পরিস্কারঃ পুকুরে অতিরিক্ত খাদ্য এবং মলমূত্র জমতে না দেওয়ার জন্য নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
  3. রোগ প্রতিরোধঃ পোনা মাছের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।

  •  পোনা মাছের বিক্রয়ঃ

  1. আকার ও বয়সঃ পোনা মাছ নির্দিষ্ট আকার এবং বয়সে পৌঁছালে বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত হবে।
  2. বিক্রয়ঃ স্থানীয় বাজারে বা খামারীদের কাছে পোনা মাছ বিক্রি করা যেতে পারে।

এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে পোনা মাছের সফল চাষ করা সম্ভব।

কোন মাছ চাষে লাভ বেশি হয়ঃ

বাংলাদেশে মাছ চাষের মধ্যে রুই, কাতলা, তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, এবং নাইলটিকা মাছ চাষে লাভ বেশি হয়। এই মাছগুলো চাষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ এবং সহজলভ্য খাদ্য পাওয়া যায়। রুই মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে এর চাহিদা খুব বেশি। কাতলা মাছের মাংস সুস্বাদু হওয়ায় বাজারমূল্য বেশি। তেলাপিয়া মাছ খুব সহজে ও দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় এই মাছ চাষে কম ঝুঁকি থাকে।

পাঙ্গাস মাছের চাহিদাও অনেক বেশি এবং দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভজনক। নাইলটিকা মাছও দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং স্বল্প সময়ে বাজারে বিক্রি করা যায়। সঠিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে এবং নিয়মিত যত্ন নিলে এসব মাছের চাষ থেকে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব। তাই আপনি এই গুলো মাছ চাষ করলে ভাল মানের লাভ চোখে দেখতে পারবেন।

লেখকের মক্তব্যঃ

আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে মাছ চাষের জন্য পুকুর প্রস্ততি কিভাবে খুব সহজে উপায়ে করবেন। তার সাথে এটাও জানলেন যে পুকুর প্রস্ততি করার জন্য কি কি ধাপ মেনে চলতে হবে। আসা করি মাছ চাষ নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন নেই আপনার মনে।

ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করে দিবেন আপনার ব্যবসায়ীয় মানুষের কাছে।

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.........www.stylishsm.com







( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )


























এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url