ব্রেন স্ট্রেক এর লক্ষণ কি - ব্রেন স্ট্রেক রোগীর খাবার তালিকা? ভালোভাবে জেনে রাখুন?

আজকে আমরা জানবো যে কিভাবে এই ব্রেন স্ট্রেক এর লক্ষণ কি আমরা সহজ উপায়ে বুঝতে পারবো। এবং তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে ব্রেন স্ট্রেক রোগীর খাবার তালিকা কি ধরনের হয়। সব বিস্তারিত...। 

ভূমিকাঃ

এই ব্রেন স্ট্রেক এর লক্ষণ কি সেটি পুরুষের বেশি পরিমাণে দেখা যায়। কেননা টেনশন পুরুষের বেশী হয়। বিধাই তারা এই টেনশন সহ্য করতে না পেরে তার ব্রেন স্ট্রেক করে বসে।

ব্রেন-স্ট্রেক-এর-লক্ষণ-কি
ব্রেন-স্ট্রেক-এর-লক্ষণ-কি            

তাই আজকে আমরা জানবো যে ব্রেন স্ট্রেক এর লক্ষণ হলে কি পরিমাণ পদক্ষেপ নিতে হবে। ও তার সাথে জানবো যে ব্রেন স্ট্রেক রোগীর খাবার তালিকায় তাদেরকে কি কি খাবার দেওয়া উচিত। আসুন জেনে নি?

ব্রেন স্ট্রেক এর লক্ষণ কিঃ

ব্রেন স্ট্রোকের লক্ষণগুলো দ্রুত চিহ্নিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা গেলে মারাত্মক ক্ষতির ঝুঁকি কমানো যায়। ব্রেন স্ট্রোকের কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ হলঃ

ব্রেন স্ট্রোকের সময় হঠাৎ করেই শরীরের কোনো একপাশে দুর্বলতা বা অবশভাব অনুভূত হতে পারে। এটি প্রায়শই মুখ, হাত, বা পায়ে ঘটে। এছাড়াও মুখের একপাশ ঝুলে যেতে পারে বা কথা বলার সময় অস্পষ্টতা দেখা দিতে পারে শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে, অজ্ঞান-অজ্ঞান ভাব আসবে ইত্যাদি। ব্রেন স্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ হলো হঠাৎ করে দেখার সমস্যার উদ্ভব হওয়া, যেমন একটি বা দুটি চোখের দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া বা দ্বৈত দৃষ্টিশক্তি হওয়া।

আরো পড়ুনঃ আপনার জন্ডিস হলে কি-কি কাজ গুলো করবেন?

হঠাৎ করে মাথাব্যথা, যা কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়া হয়, এটি একটি স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে। এছাড়াও মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা অনুভূত হওয়া, যা দৈনন্দিন কাজ করতে সমস্যা তৈরি করে, সেটাও ব্রেন স্ট্রোকের ইঙ্গিত হতে পারে। এমন লক্ষণগুলি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত, কারণ ব্রেন স্ট্রোকের সময়মতো চিকিৎসা না হলে এটি স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতা বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই, স্ট্রোকের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ব্রেন স্ট্রেক রোগীর খাবার তালিকাঃ

ব্রেন স্ট্রোক রোগীর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে একটি ছক আকারে ব্রেন স্ট্রোক রোগীর খাবার তালিকা দেওয়া হলঃ                                                                         

খাবারের ধরণ

খাবারের নাম

খাওয়ার পরিমাণ

খাওয়ার সময়

শাকসবজি

পালং শাক, মিষ্টি কুমড়া, ব্রকলি, গাজর

১ কাপ

দুপুর,রাত

ফল

আপেল, কলা, কমলা, বেদানা

১ টুকরা বা ১ কাপ

সকালের নাস্তা,বিকাল

মাছ

রুই, ইলিশ, টুনা, সালমন

১০০-১৫০ গ্রাম

দুপুর,রাত

মাংস

চর্বিহীন মুরগির মাংস, চর্বিহীন গরুর মাংস

৭৫-১০০ গ্রাম

দুপুর,রাত

দানা জাতীয় খাবার

বাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট, চিনাবাদাম

১ মুঠো

বিকাল,রাত

দুগ্ধজাত খাবার

কম চর্বি দুধ, দই, পনির

১ কাপ দুধ/ দই, ১ টুকরা পনির

সকালের নাস্তা,রাত

শস্যজাতীয় খাবার

বাদামি চাল, ওটস, গমের রুটি

১ কাপ বা ২ টুকরা

সকালের নাস্তা,দুপুর

পানীয়

পানি, ডাবের পানি, সবুজ চা

৮-১০ গ্লাস

সারা দিন

এই সব খাবার আপনি যদি মেনে চলতে পারেন তাহলে দেখবেন যে আপনার ব্রেন স্ট্রেক থেকে কিছুটা হলোও মুক্তি পাবেন। তাই ব্রেন স্ট্রেক রোগীদের এই সব খাবার প্রতিদিন খাওয়া উচিত।

ব্রেন স্ট্রেক রোগীদের কি-কি খাওয়া নিষেধঃ

ব্রেন স্ট্রেক রোগীরা তাদের ইচ্ছা মত প্রোটিন যুক্ত খাবার ও ন্যাচ্রাল খাবার খেতে পারে। কিন্তু তারা ইচ্ছা করলে সব কিছু খেতে পারবে না। তাদের কিছু খাবার নিষেধ করা আছে। তাহলোঃ

  • বেশি চর্বিযুক্ত খাবার
  • অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার
  • প্রসেসড ফুড
  • মিষ্টিজাতীয় খাবার
  • অ্যালকোহল এবং ধূমপান

এই খাবার থেকে ব্রেন স্ট্রেক রোগীদের দূরে থাকতে হবে। কেননা এই সব খাবার যদি তারা খাই। তাহলে তাদের আর বড় ধরনের বিপদ আসতে পারে তাদের জীবনে। তাই এই সব খাবার এড়িয়ে চলবেন।

ব্রেন স্ট্রেক হলে কি করণীয়ঃ

ব্রেন স্ট্রোক হলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা অত্যন্ত জরুরি। নিচে কিছু করণীয় দেওয়া হলোঃ

 প্রাথমিক পদক্ষেপঃ

  1. ফাস্ট (FAST) পরীক্ষা স্ট্রোকের লক্ষণ বোঝার জন্য এই পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।
  2. Face (মুখ) রোগীর মুখ একদিকে ঝুলে পড়েছে কিনা চেক করুন।
  3. Arms (হাত) রোগী এক বা দুই হাত ঠিকমতো উপরে তুলতে পারছে কিনা দেখুন।
  4. Speech (কথা) রোগীর কথা অস্পষ্ট বা ভুল হচ্ছে কিনা পরীক্ষা করুন।
  5. Time (সময়) যদি উপরের যে কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে।

 তৎক্ষণাৎ চিকিৎসাঃ

  1. ( হাসপাতালে নিন ) যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান।
  2. ( ৯৯৯ এ কল করুন ) জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন।

 রোগীর যত্নঃ

  1. ( শান্ত রাখুন ) রোগীকে শান্ত রাখতে চেষ্টা করুন এবং রোগীকে সান্ত্বনা দিন।
  2. ( শ্বাস নিতে সহায়তা করুন ) যদি রোগী শ্বাস নিতে কষ্ট পান, তবে শ্বাসনালীর পরিষ্কার থাকাটাকে নিশ্চিত করুন।
  3. ( পানীয়/খাবার ) রোগীকে কোনো পানীয় বা খাবার খেতে দেবেন না, কারণ তা শ্বাসনালীতে আটকে যেতে পারে।

 চিকিৎসকের পরামর্শঃ

  1. ( মেডিকেল পরীক্ষা ) ব্রেন স্ক্যান এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হবে।
  2. ( ওষুধ ) চিকিৎসক প্রয়োজনীয় ওষুধ দিতে পারেন, যেমন থ্রম্বোলাইটিক ওষুধ, যা রক্ত জমাট ভাঙতে সাহায্য করে।

 পুনর্বাসনঃ

  1. ( ফিজিওথেরাপি ) রোগীকে শারীরিক পুনর্বাসনের জন্য ফিজিওথেরাপি করা হতে পারে।
  2. ( বক্তৃতা থেরাপি ) ভাষাগত সমস্যা থাকলে বক্তৃতা থেরাপির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
  3. ( পুষ্টিকর খাদ্য ) রোগীর সুস্থতার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার দেওয়া উচিত।

 প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাঃ

  1. ( স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ) সুস্থ জীবনযাপনের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম গুরুত্বপূর্ণ।
  2. ( চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা ) রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।
  3. ( ধূমপান এবং অ্যালকোহল ত্যাগ ) ধূমপান এবং অ্যালকোহল পরিহার করা জরুরি।

ব্রেন স্ট্রোক একটি জরুরি পরিস্থিতি, তাই লক্ষণ দেখামাত্র দ্রুত চিকিৎসা নিন এবং রোগীর যত্নে মনোযোগ দিন।

ব্রেন স্ট্রেক কেন হয়ঃ

ব্রেন স্ট্রোক সাধারণত মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহের বাধার কারণে হয়, যা দুই প্রকার হতে পারে: ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং হেমোরেজিক স্ট্রোক। ইস্কেমিক স্ট্রোক ঘটে যখন মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী ধমনী ব্লক হয়ে যায়, মাতার স্নায়ু কমে যায়, সে সময় সাধারণত রক্ত জমাট বা চর্বির প্ল্যাকের কারণে। হেমোরেজিক স্ট্রোক ঘটে যখন মস্তিষ্কের ধমনী ফেটে যায় এবং রক্তপাত হয়।

উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, উচ্চ কোলেস্টেরল, অতিরিক্ত ওজন, এবং স্থথূলতা ব্রেন স্ট্রোকের প্রধান ঝুঁকি উপাদান। এছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। অপর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসও ব্রেন স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ায়। এজন্য সুস্থ জীবনযাপন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, এবং ঝুঁকি উপাদান নিয়ন্ত্রণে রাখা ব্রেন স্ট্রোক প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রেন স্ট্রেক হলে বাঁচার উপায় কিঃ

ব্রেন স্ট্রোক হলে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য তাত্ক্ষণিক চিকিৎসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারেঃ

  1. জরুরি সেবা ডাকাঃ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যাম্বুলেন্স বা জরুরি মেডিকেল সেবা ডাকা উচিত।
  2. মেডিকেল পরীক্ষাঃ রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করানো উচিত যাতে স্ট্রোকের ধরন নির্ধারণ করা যায়।
  3. ষষ্ঠ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসাঃ ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, স্ট্রোক শুরু হওয়ার ৪.৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে থ্রম্বোলাইটিক ওষুধ দিয়ে ব্লক অপসারণ করা হলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
  4. হেমোরেজিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রেঃ যদি মস্তিষ্কে রক্তপাত হয়, তাহলে দ্রুত অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে।
  5. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য ঔষধ ব্যবহার করা হয়।
  6. রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণঃ হাসপাতালে ভর্তি করে রোগীর অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়।
  7. ফিজিওথেরাপিঃ স্ট্রোকের পর পুনর্বাসন ও শারীরিক থেরাপি রোগীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।
  8. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনঃ সুস্থ জীবনযাপনের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা উচিত।
  9. পুনর্বাসন প্রোগ্রামঃ দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ রোগীর শারীরিক ও মানসিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে পারে।

স্ট্রোকের পর দ্রুত চিকিৎসা ও সঠিক পুনর্বাসন প্রোগ্রাম অনুসরণ করলে বেঁচে থাকার এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। 

ব্রেন স্ট্রেক রোগের চিকিৎসা কিঃ

ব্রেন স্ট্রোকের চিকিৎসা রোগীর স্ট্রোকের ধরন এবং গুরুতরতার ওপর নির্ভর করে। সাধারণত দুটি প্রধান ধরনের স্ট্রোক রয়েছে: ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং হেমোরেজিক স্ট্রোক। উভয় ক্ষেত্রেই দ্রুত এবং সঠিক চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে উভয় ধরনের স্ট্রোকের চিকিৎসা পদ্ধতি দেওয়া হলোঃ

  • ইস্কেমিক স্ট্রোকের চিকিৎসাঃ

  1. থ্রম্বোলাইটিক থেরাপিঃ ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, রক্ত প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে থ্রম্বোলাইটিক ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ওষুধ স্ট্রোক শুরু হওয়ার ৪.৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। টিসিপিএ নামে একটি সাধারণ থ্রম্বোলাইটিক ওষুধ রয়েছে।
  1. মেকানিক্যাল থ্রম্বেকটমিঃ যদি থ্রম্বোলাইটিক থেরাপি কার্যকর না হয় বা রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে আনা সম্ভব না হয়, তবে ক্যাথেটার ব্যবহার করে রক্ত জমাট অপসারণ করা হয়।
  2. অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট এবং অ্যান্টিপ্লেটলেট থেরাপিঃ রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করার জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। অ্যাসপিরিন ও হেপারিন এর উদাহরণ।
  3. নিয়মিত রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
ব্রেন-স্ট্রেক-রোগের-চিকিৎসা-কি
ব্রেন-স্ট্রেক-রোগের-চিকিৎসা-কি            

  • হেমোরেজিক স্ট্রোকের চিকিৎসাঃ

  1. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য ঔষধ ব্যবহার করা হয়।
  2. সার্জারি: মস্তিষ্কে রক্তপাত বন্ধ করার জন্য সার্জারি করা হতে পারে। এন্ডোভাসকুলার প্রক্রিয়া ব্যবহার করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা যায়।
  3. ক্যাটেটার নির্ভর চিকিৎসাঃ রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ক্যাথেটার ব্যবহার করা হয়।
  4. রিপেয়ার সার্জারিঃ যদি রক্তনালী দুর্বল থাকে তবে সেই নালী ঠিক করার জন্য সার্জারি করা হয়।

  • পুনর্বাসনঃ

  1. ফিজিওথেরাপিঃ রোগীর শারীরিক কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে ফিজিওথেরাপি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  2. অকুপেশনাল থেরাপিঃ রোগীর দৈনন্দিন কাজগুলো পুনরায় শেখানোর জন্য অকুপেশনাল থেরাপি প্রয়োজন।
  3. স্পিচ থেরাপিঃ ভাষা ও কথা বলার সমস্যা থাকলে স্পিচ থেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।
উপরিউক্ত চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে ব্রেন স্ট্রোক থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।

একজন মানুষ কতবার ব্রেন স্ট্রেক করলে বাঁচতে পারেঃ

একজন মানুষ কতবার ব্রেন স্ট্রোক করলে বাঁচতে পারে তা নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ে, যেমন স্ট্রোকের গুরুতরতা, চিকিৎসার গতি এবং রোগীর শারীরিক অবস্থা। সাধারণত, প্রথম স্ট্রোক হলে তৎক্ষণাৎ সঠিক চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক চিকিৎসা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ব্রেন স্ট্রোকের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে পারে।
ব্রেন স্ট্রোকের পুনরাবৃত্তি হলে, তা রোগীর স্বাস্থ্যের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করে এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি বাড়ায়। তবে, সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে অনেক মানুষ একাধিক স্ট্রোকের পরেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। প্রতিটি স্ট্রোকের পর চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা, সঠিক ঔষধ গ্রহণ, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অত্যন্ত জরুরি।

যতবার ব্রেন স্ট্রোক হয়, ততবারই রোগীর মস্তিষ্ক এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে, পুনর্বাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হতে পারে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই, স্ট্রোকের পূর্বাভাস এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সবচেয়ে ভালো উপায়।

সুতরাং, একজন মানুষ একাধিকবার ব্রেন স্ট্রোক করলে বাঁচতে পারে, তবে এটি অনেকাংশে তার শারীরিক অবস্থা, চিকিৎসা পাওয়ার সময়, এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে।

ব্রেক স্ট্রেকের ঔষুধঃ

ব্রেন স্ট্রোকের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ঔষধ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। এখানে ব্রেন স্ট্রোকের জন্য সাধারণত ব্যবহৃত কিছু ঔষধের তালিকা দেওয়া হলোঃ

  • অ্যান্টি-প্লেটলেট ড্রাগসঃ
( অ্যাসপিরিন ) রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে।

( ক্লোপিডোগ্রেল ) প্লেটলেটগুলির ক্রিয়াকলাপ হ্রাস করে।
  • অ্যান্টিকোঅ্যাগুলান্টসঃ
( ওয়ারফারিন ) রক্ত পাতলা করে এবং নতুন রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে।

( হেপারিন ) রক্ত পাতলা করার ইনজেকশন যা তৎক্ষণাৎ কাজ করে।

  • থ্রম্বোলাইটিকসঃ
( টিস্যু প্লাসমিনোজেন অ্যাক্টিভেটর (tPA)  রক্ত জমাট বাঁধা দ্রবীভূত করতে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োগ করতে হয়।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ঔষধঃ
  1. এ্যাসিই ইনহিবিটারস (ACE Inhibitors)
  2. ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকারস
  3. বিটা ব্লকারস
  4. ডাইইউরেটিক্স
  • কোলেস্টেরল কমানোর ঔষধঃ
( স্ট্যাটিনস ) কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক।
  • ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের ঔষধঃ
ইনসুলিন অথবা অন্যান্য ডায়াবেটিস ঔষধ।

দ্রষ্টব্য, ব্রেন স্ট্রোকের চিকিৎসা সাধারণত রোগীর শারীরিক অবস্থা এবং স্ট্রোকের প্রকারভেদ অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ এবং নির্দেশনা অনুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করা উচিত।

লেখকের মক্তব্যঃ

আসা করি যে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে ব্রেন স্ট্রেক এর লক্ষণ কি ভাবে ঘটে থাকে আমাদের জীবনে। এর সাথে আপনি এটাও জানতে পেরেছেন যে ব্রেন স্ট্রেক রোগীর খাবার তালিকা কেমন হয়।
আসা করি আপনার মনে আর কোনো প্রশ্ন এই ব্রেন স্ট্রেক এর লক্ষণ নিয়ে। 

ভাল লাগলে কমেন্ট করবেন ও শেয়ার করবেন আপনার প্রিয় মানুষের কাছে। 

আরো কিছু জানতে বা শিখতে চাইলে ভিজিট করুন.........www.stylishsm.com









( আপনার প্রিয় ব্লগার স্টাইলিশ )







এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url