হার্ট আট্যাক এর লক্ষণ কি - কি খেলে হার্টের রোগ ভাল হয়? এর কারণ সমূহ জানুন?
আজকে আমরা জানবো যে আমাদের শরীরে হার্ট আট্যাক এর লক্ষণ কি করণে হয়ে থাকে। এবং তার সাথে সাথে এটাও জানবো যে। কি খেলে হার্টের রোগ ভাল হয় ও হার্ট সুস্থ্য থাকে।
ভূমিকাঃ
আমাদের এই নিত্যদিনের জীবনে হার্ট আট্যাক এর লক্ষণ প্রায় বেশীর ভাগ পুরুষের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এবং এই হার্ট আট্যাক হয়ে থাকে। মানুষ যখন কোনো কিছু আঘাত সহ্য করতে না পারে।
হার্ট-আট্যাক-এর-লক্ষণ |
তাই আজকে আমরা সব কিছু বিস্তারিত ভাবে জেনে নিবো যে। কি কি ধরনের কাজ করলে আমরা এই হার্ট আট্যাক এর লক্ষণ থেকে মুক্তি পেতে পারি। আসুন শুরু করা যাক?
হার্ট আট্যাক এর লক্ষণ কিঃ
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গুলি সময় থাকতে আমাদেরকে বুঝতে হবে, বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। কারণ এটি একটি জীবন রক্ষী ও জীবন মরণের রোগ। তাই হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো জেনে নিন...।
- বুকে ব্যাথা
হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে বড় লক্ষণ ধরা যায় বুকের মাঝখানে চাপ অনুভূতি হওয়া, সংকোচন হওয়া, এবং পূর্ণতা ব্যথার সৃষ্টি হওয়া। এই ব্যথা কয়েক মিনিটের বেশি থাকতে পারে, বা আসা যাওয়া করতে পারে। তাই এই লক্ষণ গুলি হল হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।
- শরীরের উপরের অংশের ব্যথা
শুধু বুক ব্যাথা করলে যে আপনার হার্টের লক্ষণ আছে তা এমন না। আপনার শরীরে যদি আপনার কাঁধ, হাত, পিঠ, ঘাড়, এগুলো অংশে বা পেটে যদি আপনার ব্যথা হয়। এবং বাম হাতে বা দুই হাতে যদি ব্যথা হতে শুরু করে, তাহলে এগুলো হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।
- শ্বাসকষ্ট
শ্বাসকষ্ট হার্ট অ্যাটাকের সময় বা বুকে ব্যাথা ছাড়াও হতে পারে। শ্বাসকষ্ট এটি একটি খুবই চিন্তা বিষয়ক রোগ।
আরো পড়ুনঃ জন্ডিস হলে আপনার কি কি করণীয়?
- ঠান্ডা ঘাম
আপনার শরীরের ঠান্ডা ঘাম হওয়া একটি সাধারণ লক্ষণ হতে পারে।
- ক্লান্তি ও বমি
কোন কারন ছাড়াই চরম ক্লান্তি বা অবসাদ অনুভব হতে পারে। আপনার পুরো শরীরে এবং কি হার্ট অ্যাটাকের সময় বা তার আগে আপনার বমি বমি ভাব আসবে। এবং হজমের সমস্যা থাকলে বমি হতে পারে। এর সাথে সাথে আপনার মাথা ঘোরা বা অচেতন অনুভূতি হওয়া এটি একটি সাধারণ লক্ষণ।
মেয়েদের ক্ষেত্রে হার্ট আট্যাকের লক্ষণঃ
মেয়েদের হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষণ পুরুষের তুলনায় অনেক ভিন্ন হতে পারে। কেননা মহিলাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত লক্ষণ থাকতে পারে যেমনঃ
- অস্বাভাবিক ক্লান্তি
- ঘুমের সমস্যা
- উদ্বেগ বা চাপের অনুভূতি থাকা
- হজম শক্তি কম বা বুক জ্বালাপোড়া করা
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গুলো যদি অনুভব করেন তাহলে আপনি যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নেবার চেষ্টা করবেন। এর কিছু পদক্ষেপ মেনে চলতে হবে। যেমন, হার্ট অ্যাটা ক আসার সময় আপনি যদি বুঝতে পারেন। তখন আপনি সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়ুন, এবং নিজেকে আরামদায়ক রাখার চেষ্টা করবেন। একটি অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট চিবাতে পারেন। ( যদি এলার্জি না থাকে )
তার পর যত দ্রুত সম্ভব ৯৯৯ বা ৯১১ এই নম্বরে ফোন দিন কিং বা কাছে কোনো হাসপাতাল যান। হার্ট অ্যাটাকের প্রতি সচেতন থাকবেন এবং মানুষকেও সচেতন রাখার চেষ্টা করবেন। কেননা আপনার একটি সচেতন করা একটি মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে।
কি খেলে হার্টের রোগ ভালো হয়ঃ
হার্টের রোগ প্রতিরোধ করতে এবং আমাদের হার্ট সুস্থ রাখার জন্য আমাদের খাদ্যভ্যাস প্রোটিনযুক্ত ও পুষ্টিকর হওয়া খুবই জরুরী। নিচে কিছু খাবারের নাম উল্লেখ করা হলো, যেটি আমাদের হাটের জন্য ভালো।
কি-খেলে-হার্টের-রোগ-ভালো-হয় |
- ফলমূল ও শাকসবজি
ফলমূল ও শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এবং মিনারেল এর ফাইবার যুক্ত পুষ্টি পাওয়া যায় যা আমাদের হাতের জন্য খুবই উপকারী যেমন, আপেল, বেরি, অরেঞ্জ, কলা,পালং শাক, গাজর, বীজ, কপি, ইত্যাদি।
- মাছ
মাছের মধ্যে পাওয়া যায় ওমেগা - ৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। এবং এটি আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। যেমন, স্যামন, ম্যাকারেল, ইত্যাদি।
- বাদাম ও বীজ
বাদাম এবং বীজে পাওয়া যায় সঠিক পরিমাণে চর্বি প্রোটিন ও ফাইবার এর গুন। যা আমাদের হার্ট সুস্থ রাখতে বেশি উপকারী। যেমন, আমন্ড, আখরোট, ফ্ল্যাক্স সিট, ইত্যাদি।
- সম্পূর্ণ অয়েল
অলিভ অয়েল একটি স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎস যা আমাদের হার্টের জন্য বেশ উপকারী। যেমন, সালাত এবং রান্না হলে অলিভ ও অয়েল তেল ব্যবহার করে খেতে পারেন।
- রসুন ও সবুজ চা
রসুনে পাওয়া যায় এন্টি - ইনফ্লেমেটরি এবং এটিতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রভাব থাকে, যা হার্টের জন্য বেশ উপকারী। এর সাথে সাথে সবুজ চা পান করলে আমাদের স্বাস্থ্য, কিডনি, এবং শরীর সবকিছু ভালো থাকে এবং সবুজ চা পলিফেনলস দ্বারা বিবৃতি। যা আমাদের হার্টের জন্য উন্নত মানের কাজ করে থাকে।
হার্টের রোগীর খাবার তালিকাঃ
যারা হার্টের রোগী আছেন তাদের জন্য একটি সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকা নেমে দেওয়া হলো। এই রুটিন গুলি মেনে চলতে হবে।
আপনি যদি এই সব খাবার ভাল ভাবে খেতে পারেন এবং কি এই খাবারের মানবন্টন মেনে চলতে পারেন। তাহলে দেখবেন যে আপনার হার্ট আট্যাকের সম্ভবনা কমে যাবে।
হার্টবিট কত হলে স্বাভাবিক হয়ঃ
একজন স্বাভাবিক মানুষ বা প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হার্টবিট সাধারণত প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার বিট করে থাকে। এর কিছু উদাহরণ নিম্নে দেওয়া হলো...।
- বিশ্রাম গত অবসস্থা
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের বিশ্রামগত অবস্থায় তার হার্টবিট প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার বিট করে।
- শিশুদের ক্ষেত্রে
শিশুরা সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তাদের হার্টবিট বেশি পাম করে থাকে। একজন শিশুর ১০০ থেকে ১৬০ বিট পর্যন্ত পাম করতে পারে এটাই স্বাভাবিক।
আরো পড়ুনঃ ধূমপান করলে আমাদের স্বাস্থ্যর কি ভয়ানক ক্ষতি হয় জেনে নিন?
- ব্যায়াম বা পরিশ্রমের সময়
আমাদের জীবনে যখন আমরা ব্যায়াম করি তখন আমাদের হার্টবিট বৃদ্ধি পায়। এবং আপনার বয়স এবং শারীরিক ক্ষমতার উপর নির্ভর করে আপনার হার্ট পাম করা। সাধারণত ব্যায়ামের ক্ষেত্রে হার্টবিট প্রতি মিনিটে ১২০ থেকে ১৬০ পর্যন্ত বিটকাম করতে পারে।
- ঘুমানোর ক্ষেত্রে
আমরা যখন ঘুমিয়ে পড়ি তখন আমাদের হার্টবিট কমে যাবার সম্ভাবনা থাকে। এবং এটি প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ৮০ ফিট পর্যন্ত পান করে যা এটি একটি হার্ট বিটের স্বাভাবিক দিক।
আরো পড়ুনঃ এপেন্ডিক্স রোগ দেখা দিলে আপনার কি কি করা উচিত?
আপনার হার্টবিট যদি কোন সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বাইরে চলে যায়। তাহলে আপনি সরাসরি ভালো একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ নিবেন। কেননা ছোট একটি ভুলের কারণে মানুষের জীবন পর্যন্ত যেতে পারে।
হার্টের চেম্বার কয়টি ও কি কিঃ
আমাদের মানব হৃদয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ও এটির চারটি চেম্বার থাকে যা প্রকোষ্ঠ নিয়ে গঠিত হয়ে। থাকে এর চেম্বার গুলো হল...।
- ডান আলিন্দ
ডান আলিন্দ হলো আমাদের হৃদয়ের উপরের দিকের চেম্বার। এটি শরীর থেকে অক্সিজেন শূন্য রক্ত গ্রহণ করে এবং কি ডান নিলয় পাঠায়।
- ডান নিলয়
ডান নিলয় আমাদের হৃদয়ের সাধারণত ডান দিকের চেম্বার এটি ডান অলিন্দ থেকে রক্ত গ্রহণ করে। এবং বাম নিলয় ফুসফুসে পাঠায় যেখানে রক্তে অক্সিজেন মিশে যায়।
- বাম অলিন্দ
বাম অলিন্দ হলো হৃদয়ের উপরের বাম দিকের চেম্বার। এটির কাজ হল ফুসফুস থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত গ্রহণ করে এবং বাম নীলা পাঠায়।
- বাম নিলয়
বাম নিলয় হল হৃদরোগের নিচের বাম দিকের চেম্বার থেকে রক্ত গ্রহণ করে এবং খুব সহজে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে দেয়।
এই চারটি চেম্বার আমাদের শরীরে কাজ করে রক্তকে সার্কুলেট করে। অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করতে এবং এটি বর্জ্য পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে। আমাদের শরীরে এই চারটি চেম্বার একসঙ্গে যুক্ত ভালোভাবে কার্যক্রমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হার্ট সুস্থ রাখার ওষুধের নামঃ
হার্ট সুস্থ রাখা ও হৃদয় যন্ত্র সুস্থ রাখতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয় যা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত নিচে কিছু ওষুধের নাম দেওয়া হল...।
( এএসিই ইনহিবিটার )
- এনালাপ্রিল (Enalapril)
- লিসিনোপ্রিল (Lisinopril)
- রামিপ্রিল (Ramipril)
( বিটা ব্লকার )
- মেটোপ্রোলল (Metoprolol)
- এটেনোলল (Atenolol)
- কারভেডিলল (Carvedilol)
- অ্যামলোডিপিন (Amlodipine)
- ডিলটিয়াজেম (Diltiazem)
- ভারাপামিল (Verapamil)
- ফুরোসেমাইড (Furosemide)
- হাইড্রোক্লোরোথিয়াজাইড (Hydrochlorothiazide)
- স্পাইরোনোল্যাকটোন (Spironolactone)
- অ্যাটরভাস্ট্যাটিন (Atorvastatin)
- রোসুভাস্ট্যাটিন (Rosuvastatin)
- সিম্ভাস্ট্যাটিন (Simvastatin)
- ওয়ারফারিন (Warfarin)
- রিভারোক্সাবান (Rivaroxaban)
- ডাবিগাট্রান (Dabigatran)
- অ্যাসপিরিন (Aspirin)
- ক্লপিডোগ্রেল (Clopidogrel)
- টিকাগ্রেলর (Ticagrelor)
হার্টের জন্য ক্ষতিকারক খাবারঃ
লেখকের মক্তব্যঃ
স্টাইলিশ এস এম নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url